টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে কলেজ ছাত্রী রুপা খাতুনকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযুক্ত পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে শুনানি শেষে চার্জ গঠন করা হয়। টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক না থাকায় জেলা ও দায়রা জজ মো. রবিউল হাসান ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক হিসেবে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আগামী বছরের ৩রা জানুয়ারি।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আসামিদের অব্যাহতি, মামলার পুনঃতদন্ত ও জামিনের বিষয় নিয়ে তিনটি আবেদন করেন। পরে এই তিনটি আবেদনের বিষয়ে আদালতে শুনানি হয়। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলী (৫৫)’র বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও দণ্ডবিধি ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন। এ সময় অভিযুক্তদের সবাই উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫শে আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপাকে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকরা ধর্ষণ করে এবং বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে মৃতদেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাতপরিচয় মহিলা হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে রুপাকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবি ও কাপড় দেখে তার বোন রুপাকে শনাক্ত করেন। পরে হাফিজুর রহমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত রুপার লাশ টাঙ্গাইল গোরস্থান থেকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নেয়ার অনুমতি প্রদান করেন। ২৮শে আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া রুটের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলী (৫৫)কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের প্রত্যেককেই আদালতে হাজির করা হয়। এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। মামলার আসামিরা প্রত্যেকেই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছে।