ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপি বলেছেন, ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা এখন আর আগের অবস্থানে নেই।’ তিনি জানান, ভূমি ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতসহ ভূমি অফিসগুলোতে জনভোগান্তি, দালালমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত করা হচ্ছে।’
আজ রোববার ‘ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনায় সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) এ বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিকে পরাজিত করে জয়ী হয় প্রাইম ইউনিভার্সিটি। সংসদের আদলে করা ওই বিতর্কে সরকারের ভূমিকায় ছিল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি এবং বিরোধী পক্ষে ছিল প্রাইম ইউনিভার্সিটি।
ভূমি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটালাইজেশনের কোনো বিকল্প নাই। সিস্টেম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। খতিয়ান, পর্চা ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিদ্যমান ম্যাপ, খতিয়ান স্ক্যান করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে ছাড়া হচ্ছে। এখন দেশের যেকোনো স্থান থেকে অনলাইনের মাধ্যমে সুবিধাভোগীরা এর সুযোগ পাবেন। তিনি বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ে এখন দক্ষ ও কারিগরি জনবল পদায়ন হচ্ছে। তিনি বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা এখন আর আগের অবস্থানে নেই। এডিবি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ভারত ও নরওয়ের সাথে যৌথভাবে বাংলাদেশ ভূমি ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।’
ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী আরও বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী ভূমির উন্নয়ন কাজ শুরু করেছি। দুর্নীতিমুক্ত ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে মাঠ পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত স্বচ্ছতার মাধ্যমে দুর্নীতিকে জিরো টলারেন্স করা হচ্ছে।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন মানুষ সবকিছু ঘরে বসেই জানতে পারছেন।’
সাইফুজ্জামান চৌধুরী আরো বলেন, ‘ভূমি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে গেছে সেই মুঘল, ইংরেজ, পাকিস্তান শাসনামল থেকেই। মন্ত্রী বলেন, আমরা স্টেপ বাই স্টেপ এগুচ্ছি। তিনি বলেন, ভূমি অফিসগুলোর আশেপাশের দুষ্টুগ্রহ দুর করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘ভূমি জরিপ থেকে শুরু করে ভূমি রেজিস্ট্রেশন, নামজারি, খাজনা প্রদান, জলাশয়, শত্রু সম্পত্তি, দেবোত্তর সম্পত্তি ও খাসজমি নির্ধারণের ক্ষেত্রে আইন, ভূমি, বন, পানি সম্পদ একেক মন্ত্রণালয় একেক ধরনের ব্যবস্থাপনার কর্তৃত্ব রাখে। ফলে ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার জটিলতা নিরসনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের বাধার সৃষ্টি হয়। ভূমিতে কর্মরতদের প্রযুক্তিগত প্রশক্ষণ ছাড়া টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠা সম্ভব না।’ তিনি ভূমি প্রতিমন্ত্রীকে ভূমি অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তির আওতায় আনার কাজটি অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।
প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী বিতার্কিকদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা, গবেষক ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক জাহিদ রহমান।