হামিম রাফি নিউজ ডেস্ক ;বিতর্কিত জেরুজালেম শহরকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্যাম্প। হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক ভাষণে এ স্বীকৃতির ঘোষণা দেন তিনি।
এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত কয়েক দশকের আমেরিকান নীতিকে বদলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ সময় ট্রাম্প আরো ঘোষণা দেন, আমেরিকান দূতাবাস তেল-আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্তের মানে এই নয় যে আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার দৃঢ় অঙ্গীকার থেকে সরে আসছে। দীর্ঘ দিনের ইসরায়েল ফিলিস্তিনি সংঘাতের অবসান ঘটাতে আমেরিকা দুই রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন জানাতে প্রস্তুত যদি উভয় পক্ষ সেটাই চায়।
ট্রাম্পের ভাষণের আগে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছিলেন ট্রাম্প শুধু এই বাস্তবতাকে মেনে নিয়েছেন যে জেরুজালেম ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে বেশি কার্যকর। যদিও ফিলিস্তিনিরা জেরুজালেমকে তাদেরও রাজধানী হিসেবে দাবি করে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ ছিল ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষিত’। এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একজন মুখপাত্র সাবধান করে দেন যে এই সিদ্ধান্ত এলাকার জন্য ‘বিপজ্জনক পরিণতি ডেকে আনবে’।
অন্যদিকে ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তবে এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনের নেতা মাহমুদ আব্বাস এটিকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আর হামাস ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, এই সিদ্ধান্ত এতদ অঞ্চলে ‘নরকের দ্বার খুলে দেবে’।
সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বলেছেন, এই ঘোষণা ‘সারা পৃথিবীর মুসলিমদের ঘোরতর প্ররোচিত করবে’। এ ঘোষণার প্রতিবাদে ইতিমধ্যে গাজা ও তুরস্কের ইস্তাম্বুলে মার্কিন কনস্যুলেটের সামনে মিছিল হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বাঁকবদলকারী সিদ্ধান্তটিকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ‘ভীষণ উদ্বেগের মুহূর্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন না করে বলেছেন, সে অঞ্চলে শান্তি আনয়নের পথে এটি কোনো উপকারী পদক্ষেপ হবে না। এ ছাড়া ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান কূটনীতিক ফেদেরিকা মোগেরিনিও বিষয়টিকে উদ্বেগের বলে মনে করছেন।