বাংলাদেশ থেকে পাচার করে মালয়েশিয়ায় নেয়া হয় শ্রমিক। এ জন্য গড়ে উঠেছে একটি সিন্ডিকেট। এর সঙ্গে জড়িত মালয়েশিয়ার বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা। কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে গড়ে উঠেছে এ চক্র। ওই বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশী শ্রমিক পাচারের রয়েছে কমপক্ষে চারটি সিন্ডিকেট। এ জন্য ইমিগ্রেশন বিভাগের সন্দেহজনক প্রায় ৬০০ কর্মকর্তাকে ওই বিমানবন্দর থেকে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে মালয়েশিয়ার অনলাইন স্টার ও দ্য স্ট্রেইটস টাইমস। এতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাহিদ হামিদ আহমাদ বলেছেনÑ যাদেরকে স্থানান্তর বা বদলি করা হয়েছে তারা সবাই বাংলাদেশী শ্রমিক পাচারের সঙ্গে জড়িত নন। ওই চক্রের সঙ্গে এর মধ্যে কিছু সংখ্যক জড়িত। তবুও সরকার মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় এ বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৬০০ কর্মকর্তাতে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, অভিবাসন বিষয়ক মহাপরিচালক মুস্তাফার আলী এ ইস্যুতে যেভাবে কাজ করছেন তাতে আমি সন্তুষ্ট। জাহিদ হামিদ বলেন, আমাদেরকে ভুলে গেছে চলবে না যে, নিজেদের দায়িত্বে নিবেদিতপ্রাণ আরো কয়েক হাজার অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তা আছেন। তারা তাদের কাজে একনিষ্ঠ। উল্লেখ্য, এশিয়ার শ্রমিকদের জন্য মালয়েশিয়া হলো খুবই আকর্ষণীয় দেশ। জুনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মালয়েশিয়াতে বৈধ কাজের অনুমতি নিয়ে অবস্থান করছেন ১৭ লাখ ৮০ হাজার অভিবাসী শ্রমিক। এর বেশির ভাগই ইন্দোনেশিয়া, নেপাল ও বাংলাদেশের। শ্রম বিষয়ক বিভিন্ন সূত্র বলেছে, এর বাইরে ১০ লাখের বেশি বিদেশী শ্রমিক আছেন। তবে তাদের কাজ করার কোনো বৈধ অনুমতি নেই। বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিক পাচার করে নেয়ার অভিযোগে পাঁচ ব্যক্তিকে আটক করে। এর মধ্যে দু’জন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা। জাহিদ হামিদ বলেন, এক্ষেত্রে আমরা পুলিশ ও মালয়েশিয়ার দুর্নীতি বিষয়ক কমিশনকে তদন্তে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছি। আইনের এভাবে লঙ্ঘন আমরা সহ্য করবো না। কারণ, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে জাতীয় নিরাপত্তা। উল্লেখ্য, প্রতিদিন কুয়ালালামপুর ও ঢাকার মধ্যে চলাচল করে ৩৮টি ফ্লাইট। ধারণা করা হয়, প্রতিজন শ্রমিককে পাচার করে নিতে সিন্ডিকেট হাতিয়ে নেয় ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার রিঙ্গিত।