চট্টগ্রাম মহানগরের নিকটস্থ নবগঠিত কর্ণফুলী উপজেলায় প্রবাসী পরিবারের তিন গৃহবধু ও বেড়াতে আসা এক বোনকে ধর্ষণের পর মালামাল লুট করেছে দূর্বত্তরা। এ ঘটনায় পুলিশ গতকাল সোমবার এক দূর্বৃত্তকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত মোহাম্মদ সুমন প্রকাশ আবু কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মাসুদা বাপের বাড়ির বাসিন্দা আহমদ মিয়ার ছেলে। ধর্ষণের শিকার পরিবার একই এলাকায় অবস্থিত।
ধর্ষণের শিকার প্রবাসি পরিবারের অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ সন্দেভাজন হিসেবে আবুকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন কর্ণফুলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাসান ইমাম।
হাসান ইমাম জানান, গত রোববার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী প্রবাসী পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ষণ ও মালামাল লুটের অভিযোগে ৩৯৪ ধারা ও নারী শিশু নির্যাতন আইনের ৯(ক) ধারায় দায়েরকৃত মামলায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করা হয়।
ঘটনার ছয়দিন পর সোমবার সকালে চার ভিকটিমকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়।
পরীক্ষায় চারজনের মধ্যে তিনজন তিন দুর্বৃত্তের মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মর্মে আলামত মিলেছে বলে জানিয়েছেন পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাসাম ইমাম।
অপরদিকে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে র্যাব-৭ এর লে. কমান্ডার আশেকুর রহমান র্যাব সদস্যের একটি দল নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
র্যাব-৭ এর লে. কমান্ডার আশেকুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, বিভিন্ন আলামাত সংগ্রহ ও এলাকার বিভিন্ন বিষয়ে খোজখবর নিচ্ছি আমরা। তদন্ত শেষে ঘটনায় স¤পৃক্ত থাকা সকল আসামীদের সানাক্ত করে বিস্তারিত জানানো হবে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দক্ষিণ পাশে শাহমীরপুর গ্রামে প্রবাসির নতুন বাড়িতে গত মঙ্গলবার রাতে বাঁশ বেয়ে উঠার পর জানালা ও সংযুক্ত গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে চার দুর্বৃত্তরা। তারা প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করে বাড়িতে।
এ সময় দূর্র্বত্তরা ভুক্তভোগী নারীদের বৃদ্ধা শাশুড়ি ও ছোট বাচ্চাদের মাথায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি করে তাদের আলাদা কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। বাড়িতে বেড়াতে আসা প্রবাসীর এক বোনকেও ধর্ষণ করে দুর্বৃত্তরা। যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা ১১ ভরি স্বর্ণালংকার, মূল্যবান সামগ্রী ও ৫টি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। বাড়ির চারপাশ প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত এবং অনেকটা নিরিবিলি।
কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বানাজা বেগম নিশি ও বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঘটনার সাথে জড়িত যে হোক না কেন তাদের কোন অবস্থায় পশ্রয় দেয়া হবে না। এ ঘটনাটি পৈশাচিক ঘটনা ও ন্যাক্কারজনক। জনপ্রতিধি হয়ে নিজেদেরেই লজ্জাবোধ হচ্ছে। ঘটনায় জড়িত নরপশু সে কর্ণফুলী বাসিন্দা বলতে লজ্জা লাগছে।