রায়হান কবির,স্বদেশ নিউজ ২৪.কমঃ ফোনে আড়িপাতার ক্ষমতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মোবাইল ট্রেকিং সংক্রান্ত অনুমোদন পেয়েছে সংস্থাটি। এখন থেকে সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজের গতিবিধি অনুসরণ, তাদের কথোপকথন রেকর্ড, চলাফেরা ও পলাতক আসামির অবস্থান শনাক্তে দুদক এই সুবিধা ব্যবহার করবে। এতে তদন্তে বড় ধরনের সহায়তা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সহায়তায় দুদক পুরো কাজটি পরিচালনা করবে। এর দায়িত্বে থাকছে বিশেষভাবে দক্ষ একটি টিম। এই টিমের সদস্যরা সন্দেহভাজন বা দুদকের তালিকাভুক্ত ব্যক্তির গতিবিধি অনুসরণসহ তাদের ওপর নজরদারি করবে। তাদের সবকিছু (কথা, গতিবিধি, অবস্থান ইত্যাদি) ট্রেকিং করে সার্ভারে ধারণ করে রাখবে।
দুদকের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে প্রযুক্তিনির্ভর এ কাজটি দুদক শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমরা এ ধরনের একটা উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
ট্রেকিংয়ের বিষয়টি এককভাবে নিজের হাতে রাখার যৌক্তিকতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারো কথা বলার স্বাধীনতা যেন খর্ব না হয় সেটা আমি নিজে নিশ্চিত করতে চাই। তবে যাদের বিষয়ে দুর্নীতির অর্ভিযোগ আছে তারা এর আওতায় পড়বেন।
তিনি জানান, সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে যাদের দুর্নীতির বিষয়ে জনশ্রতি আছে, সবাই যাদের দুর্নীতির বিষয়ে জানে তাদের বিষয়ে গোপনে আমরা তথ্য সংগ্রহ করব।
গত বছর ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসের এক অনুষ্ঠানে দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছিলেন, নতুন বছরে (২০১৮) তালিকা করে বড় বড় দুর্নীতিবাজকে ধরা হবে। সরকারি সেক্টরের দুর্নীতিবাজদের বিশেষ নজরদারির আওতায় আনা হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুদকের চেয়ারম্যান নতুন বছরে কি করবেন তার ধারণা আগেই জানিয়েছিলেন এবং সেভাবেই দুদক পরিকল্পনাছক চূড়ান্ত করেছে। যার মধ্যে মোবাইল ট্রেকিং কার্যক্রম অন্যতম।
দুদক চায় সংস্থাটির কার্যক্রম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) ও ভারতের সেন্ট্রল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) আদলে পরিচালনা করতে। দুদকের এক মহাপরিচালক সে ধারণা দিয়ে বলেন, আমাদের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় রয়েছে দুদককে একটি প্রশিক্ষিত ব্যতিক্রমধর্মী তদন্ত সংস্থায় পরিণত করা।
সেভাবেই দুদকের প্রশাসনিক ও সাংগঠনকি কার্যত্রম হাতে নেয়া হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ লেনদেন হাতেনাতে ধরার কাজটি আরও গতি পাবে বলে জানান তিনি।