তাদের যুক্তি, মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারেলপ্রতি ৩০ ডলার করে বেশি দাম দিতে হচ্ছে ডিজেলে। ফার্নেস তেলের দামও বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। বিপিসি আশঙ্কা করছে, দীর্ঘ মেয়াদে টানা লোকসান দিলে আবারো আগের অবস্থায় চলে যেতে পারে এই সংস্থাটি।
সূত্র মতে, পাশাপাশি কেরোসিন ও ফার্নেস তেলের দামও বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চলছে। চলতি বছরে ১০০০ মিলয়ন ঘনফুট এলএনজি (তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করতে ১৪ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে। এ টাকা সমন্বয় করতে গ্যাসের দাম বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আগামী মার্চেই এই ঘোষণা আসতে পারে। বিপিসি এ ব্যাপারে সরকারের সম্মতি নিয়ে রেখেছে।
সূত্র মতে, বর্তমানে দেশের বাজারে দৈনিক সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার তেল বিক্রি করে বিপিসি, যার ৭০ শতাংশই ডিজেল। আর এই পণ্যের পুরোটাই কিনে আনতে হয় আন্তর্জাতিক বাজার থেকে। আবার লিটারপ্রতি দাম, মোট বিক্রি কিংবা লাভ-লোকসান নির্ভর করে বৈশ্বিক দরদামের ওপর। আর এ কারণে সাড়ে তিন বছরে মোটা অঙ্কের লাভও করেছে বিপিসি। কিন্তু, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়তে থাকায় গেলো নভেম্বর থেকে আবারো লোকসানের ধারায় চলে গেছে রাষ্ট্রীয় এই সংস্থা। যা সমন্বয় করতে নতুন করে দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত মিলছে সরকার থেকে।
কিন্তু এই ইঙ্গিতকে খুব ভালোভাবে নিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ঢাকা চেম্বারের সাবেক এক সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আলোচনা করতে হবে ভোক্তাদের সঙ্গে।
বিপিসির হিসাব মতে, ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রতি ব্যারেল ৫০ ডলার করে কিনে আনুষঙ্গিক খরচের পরও ডিজেলে লিটারপ্রতি লাভ করা গেছে ২০ টাকার বেশি। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারিতে সেই পণ্য কিনতে হয়েছে প্রতি ব্যারেল ৮২ ডলার করে। এর ফলে, লিটারপ্রতি খরচ দাঁড়াচ্ছে ৭০ টাকায়। যা বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে ৫ টাকা লোকসানে।
এছাড়া, এই সময়ে ফার্নেস তেলের দামও প্রতিটন ২১৬ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪১২ ডলার। তাই, সেখানেও লোকসান যাচ্ছে বেশ খানিকটা। সব মিলিয়ে, দিনে অন্তত ১০ থেকে ১২ কোটি ডলার লোকসান গুণছে বিপিসি। সংস্থার চেয়ারম্যানের মতে, এই অবস্থা দীর্ঘ মেয়াদে চললে শঙ্কা রয়েছে আবারো পুরনো ধারায় চলে যাওয়ার।
বিপিসির হিসাবে দুই বছরের ব্যবধানে অপরিশোধিত তেলের দামও বেড়েছে ব্যারেলপ্রতি ২২ ডলার।