স্বামী ডা. রেজওয়ানুল হক শাওনের (৩৬) সাথে পাশের সিটে বসে যাচ্ছিলেন তাহিরা তানভিন শশী(২৬)। নিজেদের সপ্তম বিয়ে বার্ষিকী পালন করবেন নেপালে, এই পরিকল্পনা ছিল তাদের। আগামী ১৭ মার্চ ছিল তাদের বিয়ে বার্ষিকী। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার ইচ্ছা ছিল সারা জীবনের। সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিল গতকাল হয়ে যাওয়া ভয়াবহ সেই বিমান দুর্ঘটনা। গতকাল নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে হয়ে যাওয়া দুর্ঘটনায় মারা গেলেন তাহিরা তানভিন শশী। আর তার স্বামী রেজওয়ানুল হক এই মুহূর্তে নেপালের ওম হসপিটাল এন্ড রিসার্চ সেন্টারের আইসিইউতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শাওনের পারিবারিক সূত্রে এ তথ্যটি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মানিকগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকার ডা. রেজা জামানের একমাত্র মেয়ে শশী। শশী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিমিনলজি বিভাগে মাস্টার্স পড়ছিলেন।
শশীর স্বামী শাওনের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাঁটুরিয়া উপজেলায় গোপালপুর এলাকায়। তার বাবার নাম মোজাম্মেল হক। তিনি কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক হিসেবে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে শাওন ছিলেন সবার বড়। ডা. রেজা জামানের মেয়ে শশীর সঙ্গে ডা. শাওনের বিয়ে হয় বছর সাতেক আগে। তবে তাদের কোনো সন্তানাদি নেই। রেজাওয়ানুল হক শাওন রংপুর মেডিকেল কলেজে কর্মরত।শশীর পারিবারিক সূত্রে আরও জানা গেছে, গতকাল দুর্ঘটনার খবর পেয়ে শশীর খালাতো ভাই ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গ্রুপ ক্যাপ্টেন ইকবাল করিম সাথে সাথেই নেপাল যান।
তিনি এই মুহূর্তে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে সেখানকার পরিস্থিতি তদারকি করছেন। বিমান দুর্ঘটনার খবর শুনেই শশীর মা-বাবা ঢাকায় পৌঁছেছেন। মাত্র ২৭ বছর বয়সী শশীর অকাল মৃত্যুতে স্বজনদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।মা-বাবা ও স্বামীসহ শনিবার ঢাকায় খালাতো বোনের বিয়ের দাওয়াত খান শশী। কে জানত এ দেখাই শেষ দেখা হবে!