স্বাধীনতা লাভের ৪৭ বছর পর স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) শ্রেণি থেকে বের হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করল বাংলাদেশ। জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যোগ্য বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে এলডিসি থেকে উত্তরণ বিষয়ে এক ঘোষণায় বাংলাদেশের এ যোগ্যতা অর্জনের তথ্য প্রকাশিত হয়।১৫ মার্চ প্রকাশিত ওই তথ্যে দেখা যায়, বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এই যোগ্যতা অর্জন করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে উন্নয়নশীল দেশ হবে বাংলাদেশ। তবে তার জন্য দুই মেয়াদে (২০১৮ ও ২০২১ সাল) এই অর্জন ধরে রাখতে হবে।বাংলাদেশের সঙ্গে লাওস, মিয়ানমারও একই যোগ্যতা অর্জন করেছে।
ভুটান, সাও তোমে ও প্রিনসিপে এবং সলোমন দ্বীপপুঞ্জ দ্বিতীয়বারের মতো যোগ্যতা অর্জন করায় তাদের এলডিসি থেকে উত্তরণের সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইকোসক) উন্নয়ন নীতিবিষয়ক কমিটি (সিডিপি)। গতকাল শুক্রবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে বাংলাদেশের এই স্বীকৃতি পাওয়ার কথা জানান।তিনি বলেন, জাতিসংঘের উন্নয়ন বিষয়ক কমিটি গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে নিউইয়র্কে বৈঠকে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উত্তরণের সব সূচক প্রথমবারের মতো অর্জন করেছে। আজকে (শুক্রবার) তারা আমাদের জাতিসংঘের স্থায়ী মিশনে এটা নিশ্চিত করে একটা চিঠি হস্তান্তর করবে।
নিয়ম অনুযায়ী ৩ বছরে পরপর দুইবার এটা অর্জন করলেই চূড়ান্তভাবে একটা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আমাদেরকে এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে এবং ২০২১ সালে আবারও তা নিশ্চিত করতে হবে একই সূচকগুলো অর্জনের মধ্য দিয়ে।বাংলাদেশ এর আগে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়। মাথাপিছু আয়ের বিবেচনায় এ শ্রেণীকরণ করে বিশ্বব্যাংক। জাতিসংঘ তার সদস্য দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত (এলডিসি), উন্নয়নশীল এবং উন্নত- এ তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করে। বাংলাদেশ ১৯৭৫ সাল থেকে এলডিসি।
জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী, মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা- এ তিনটি সূচকের দুটিতে উত্তীর্ণ হলে কোনো দেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। ২০১৮ সালের পর্যালোচনায় এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা হিসেবে মাথাপিছু আয়ের মানদণ্ড ১২৩০ ডলার বা তার বেশি। কিন্তু গত তিন বছরে বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১২৭২ ডলার।প্রতি তিন বছর অন্তর এলডিসি দেশগুলোর ওপর পর্যালোচনা বৈঠকে বসে সিডিপি। এবারের পর্যালোচনায় মানবসম্পদ সূচকে যোগ্যতা নিরূপণের জন্য স্কোর ধরা হয় ৬৬ বা তার বেশি।
বাংলাদেশের স্কোর সেখানে ৭২ দশমিক ৮। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে যোগ্য হওয়ার নির্ধারিত স্কোর ছিল ৩২ বা তার কম। বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়িয়েছে ২৫।