রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় পড়ে নিহত রাজীব হোসেনের দুই ভাইয়ের দায়িত্ব নিয়ে নতুন করে আবারও আলোচনায় আসলেন চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল। তার এ মহৎকর্মের জন্য অনেকে তাকে বাস্তব জীবনের হিরো বলেও উপাধি দেন। এদিকে আবার অনন্ত জলিলের প্রশংসা করতে গিয়ে তার বাস্তব জীবনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরলেন তারই ভক্ত আরিয়ান মাহমুদ পারভেজ।
অনন্ত জলিলতিনি অনন্ত জলিলকে স্যালুট জানিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের সিনেমায় এক নায়কের আবির্ভাব ঘটল। নিজের টাকা দিয়ে বানিয়ে নিজের সিনেমায় নিজেই অভিনয় করেন। বেশ হাসাহাসি, কৌতুক চলল তার সিনেমা জুড়ে। কারণ, তিনি মোটেই ভালো অভিনয় করেন না।’
‘তবে বাংলাদেশের সিনেমায় গ্রাফিক্স ভিডিও ক্যামেরাতে অনেক বেশি আধুনিকতা নিয়ে আসেন তিনিই প্রথম। কয়েকটা সিনেমা করে শেষে বাদ দিলেন। সবাই হাসাহাসি আরও বেশি করে করল। বলল, টাইমলাইনে আসার জন্য শুধু শুধু এত টাকা খরচ করল।
তারপর একদিন হঠাৎ করে সিনেমা করা লোকটাই লম্বা পাঞ্জাবি টুপিতে পাক্কা হুজুর বেশ ধারণ করে আবার আলোচনায় আসলেন।’
‘সিনেমা থেকে সরাসরি ধর্মকর্মতে! নাহ! ব্যাটা আবার টাইমলাইনে আসার নতুন ধান্ধা শুরু করছে। ট্রল হলো– তার নায়ক বডিতে টাইট ফিট পাঞ্জাবি নিয়ে; তার মাথার পাগড়ি নিয়ে; তার নতুন জীবনের কথোপকথন নিয়ে।’
‘গত বর্ষায় উত্তরবঙ্গে বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতি হলো। তিনি সবাইকে বন্যাবন্দি মানুষদেরকে সাহায্য করার জন্য বিনীত আবেদন জানালেন। এরপর তিনি নিজেই টাইট পাঞ্জাবি পরে একটা হেলিকপ্টার উড়িয়ে চলে গেলেন উত্তরবঙ্গে। একটা বড় সংখ্যক দুর্যোগ পীড়িত মানুষকে সাহায্য করলেন। তখনও আবার বলা হলো, তিনি টাইমলাইনে আসার জন্যই এই কর্ম করেছেন।’
‘কয়েকদিন আগে রাজধানীতে দুই বাসের চাপে রাজীব নামের এক ছেলের হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল শরীর থেকে। ছেলেটি এতিম, বাবা–মা কেউ নেই। শুধু দুইটা ছোটভাই আছে। সে কাজ করে নিজের লেখাপড়ার খরচ যুগিয়ে ছোট দুই ভাইয়ের খরচও চালাত।
হাত ছাড়াও তার আরও ইন্জুরি ছিল। হাসপাতালে যুদ্ধ করে গতকাল রাজীব মরেই গেল। দুই এতিম ছোট ভাইকে রেখে চলেই গেল রাজিব।’
‘বেপরোয়া গাড়ির প্রতিযোগিতার বলি হয়ে নিঃশেষ হয়েই গেল সংগ্রামী জীবন নিয়ে স্বপ্ন দেখা এতিম যুবক রাজীব। সে যখন মারা গেল, টাইমলাইনে আসতে চাওয়া সেই নায়ক তখন মক্কায় ছিলেন নিজের পরিবার নিয়ে। তিনি সেখানে বসেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন, রাজীবের দুই ভাইর সম্পূর্ণ দায়িত্ব তিনি নিতে চান। সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে তার সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়।’
‘নিশ্চয়ই এই নায়ক ব্যাটা আবারও টাইমলাইনে আসার জন্য একটা ছুতা খুঁজে পেয়েছেন! তবে তাই যদি হয়, বাংলাদেশে তার মতো যত CIP(Commercially Important Person) আছে, তারা যদি সবাই এরকম করে একটু টাইমলাইনে আসার চেষ্টা করত, তবে বিশ্বাস করুন, পুরো বাংলাদেশটাই টাইমলাইনে চলে আসত।’
‘ইউ ডিজার্ব এ স্যালুট, অনন্ত জলিল। আর হ্যাঁ, তিনি টাইমলাইনে না আসার জন্য যা করেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো, তার গার্মেন্টস এর সকল নারী কর্মীরা গর্ভকালীন ছুটি পায়। যেখানে অন্য গার্মেন্টস এ মেয়েরা প্রেগন্যান্ট হলে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। আপনি টাইমলাইনে আসার সংজ্ঞাটাই চেঞ্জ করে দিচ্ছেন অনন্ত জলিল। আপনাকে আবারও স্যালুট।’
তথ্যসূত্র : ফেসবুক।