নড়াইল এক্সপ্রেস,বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের উজ্জল এক নক্ষত্র। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নেয়ার অসামান্য ক্ষমতার কথা আসলে যার নাম প্রথমেই আসে তিনি মাশরাফি বিন মর্তুজা । অর্জন বা প্রাপ্তি হিসেবে মাশরাফি অন্য সবার থেকে এগিয়ে।
ক্রিকেটার বলতে একেধারে বোলার, ব্যাটসম্যান, ফিল্ডার আর অধিনায়ক। মাশরাফির এবারের বিপিএলের পারফরমেন্স বুঝিয়ে দিয়েছে যে তিনি ফুরিয়ে যাননি । মাশরাফির কৃতিত্ব, তার পারফরমেন্স ও ব্যাট বল হাতে যে কোন সময় জ্বলে উঠে দল জেতানোর অসাধারন ক্ষমতা।
কিন্তু সব থেকে কষ্টকর আর নির্মম সত্য যে, টি টোয়েন্টি ফরমেটে মাশরাফি এত উজ্জ্বল আর সফল, সেই ফরমেটেই জাতীয় দলে নেই তিনি ।চন্ডিকা হাথুরুসিংহের নীল নকশায় মনের দুঃখে অধিনায়কত্ব ছাড়ার পাশাপাশি ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট ফরমেটে জাতীয় দলে না খেলার ঘোষণাও দিয়েছেন মাশরাফি।
মূল কথা লাল সবুজ জার্সি গায়ে টি টোয়েন্টি ফরমেটে বাংলাদেশের হয়ে তাকে আর দেখা যায় না, নেতৃত্বও দিচ্ছেন না এ সফলতম অধিনায়ক।
এই বয়সে এবারের বিপিএলে মাশরাফির এমন ক্ষিপ্রতা, ভালো খেলার অদম্য বাসনা এবং দল জিতানো দৃঢ় সংকল্প দেখে অভিভূত সবাই। শুধু রংপুর রাইডার্স কিংবা মাশরাফি ভক্তরাই নন, সারা দেশের ক্রিকেট অনুরাগী এবং দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞরাও অভিভূত।
ক্রিকেটের এ ফরমেটে এখনো মাশরাফি দারুণ পারফরমার। এখানে শরীরের ওপর ধকল পড়ে কম। ওয়ানডের মতো ১০ ওভার বোলিং করতে হয় না। চার ওভারই যথেষ্ট। মাঠে ২০ ওভারের বেশি ফিল্ডিংও করতে হয় না।
আর মাশরাফি যে সব পজিশনে নামেন তাতে সর্বোচ্চ ২৫-৩০ বলের বেশি ব্যাট করার সুযোগও নেই। সব মিলে ওয়ানডের চেয়ে অনেক কম শক্তি ও সামর্থ্যর প্রয়োজন। যা মাশরাফির জন্য প্লাস পয়েন্ট। তার চেয়ে বড় কথা তার পারফরমেন্সটা এখনো বেশ ভালো।
মাশরাফিই তো সব দিক থেকে সেরা। টি টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে তাকেই মানায়। তাকে আবার অধিনায়ক করা হলে কেমন?
কয়েক মাস ধরেই দেশের দর্শকদের মুখে এমন কথা। মাশরাফির কাছেও নানা মহল থেকে এমন প্রস্তাব গেছে।
তাকে আবার জাতীয় দলের টিটোয়েন্টি অধিনায়ক হবার প্রস্তাব দিয়েছেন অনেকে।
এ নিয়ে মাশরাফি কোনো রকম মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকলেও তার একান্ত ঘনিষ্ট মহল থেকে জানা গেছে, বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের কেউ কেউ নাকি এখন আবার মাশরাফির কথাই ভাবছেন।
তার যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব,উজ্জ্বল ও অতি কার্যকর পারফরমেন্স,সব মিলে তার কাঁধে আবারো টি টোয়েন্টি দল পরিচালনার দায়িত্ব দেবার চিন্তা চলছে। মাশরাফির কাছে সিদ্ধান্ত পাল্টানোর অনুরোধও আসছে প্রচুর।
একটি বিশেষ সূত্র থেকে জানা যায়, মাশরাফি নেতৃত্ব থেকে সরে দাড়ানোর পর যার কাঁধে অধিনায়কত্বর গুরু দায়িত্ব বর্তেছে, সেই টি টোয়েনন্টি ফরমেটে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার সাকিব আল হাসানও নাকি মাশরাফিকেই অধিনায়ক হিসেবে দেখতে আগ্রহী।
গোপন সুত্র থেকে জানা যায়,কতদিন আগে সাকিব সরাসরিই মাশরাফিকে টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে আবার জাতীয় দলের অধিনায়ক হবার অনুরোধ করেন। এ নিয়ে সরাসরি কোনো রকম মন্তব্য করতে রাজি হননি মাশরাফি।
তবে বোঝা যায়, মাশরাফির ভিতরে চাপা কষ্ট ও দুঃখ আছে। এ নিয়ে সরাসরি কোনো তির্যক মন্তব্য করেননি মাশরাফি।
সাবেক কোচ হাথুরুসিংহেই চাননি মাশরাফি আর টি টোয়েন্টি খেলুক। দুঃখজনক হলেও সত্য, হাথুরুর নীল নকশা বাস্তব রুপ পেয়েছে বোর্ড শীর্ষ কর্তাদের অনুমোদনেই।
এখন যদি মাশরাফি বাংলাদেশ দলের টি টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে আবার মাঠে নামেন, তাহলে অবাক হবার মতো কিছু নেই। কারণ তার যোগ্যতা আর দর্শকদের ভালোবাসাই ম্যাশকে আবার ফিরিয়ে আনবে। এমনটাই মনে করছেন অনেকে।