1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
৯ বছরে ২ লাখ কোটি টাকা লুট - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
ভারতীয় পণ্য বর্জনের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত বিএনপির প্রতিটা নিঃশ্বাস যেন খুঁজছে তোমায়: পূজা চেরি প্রযোজককে এসিড নিক্ষেপের হুমকি, চিত্রনায়িকা পলির বিরুদ্ধে জিডি ছেলেদের সৌন্দর্য কিসে, জানালেন জায়েদ নিপুণের আবেদনে পেছাল ভোটের তারিখ, অসন্তুষ্ট মিশা ফরজ গোসল না করে সেহরি খেলে কি রোজা হবে? ৫৬ সেকেন্ডের ভিডিও, কোন সম্পর্কের ইঙ্গিত দিলেন বুবলী-রাজ রোজা রাখলে পাবেন ৫ উপকার ‘রিয়াজ এখন নিপুণের চামচা হয়ে গেছে, এটা খুব কষ্টের’ মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রশ্নে যা বললেন ওবায়দুল কাদের বেশি কথা বললে সব রেকর্ড ফাঁস করে দেব: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘খালেদা জিয়া একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা’ রিজভীর ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলা নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের বুর্জ খলিফায় শাকিবের সিনেমার প্রচারে ব্যয় কত? বুবলী-পরীমনির দ্বন্দ্বের মাঝে অপু বিশ্বাসের রহস্যময় স্ট্যাটাস

৯ বছরে ২ লাখ কোটি টাকা লুট

  • Update Time : শুক্রবার, ১১ মে, ২০১৮
  • ৪৪৭ Time View

ব্যাংকিংখাতকে লোপাট করে সরকার দেশের অর্থনীতিকে  ‘রক্তশূন্য’ করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি অভিযোগ করেছে, ঋণের নামে ও বিভিন্ন কারসাজি করে আওয়ামী লীগের সমর্থক, মদদপুষ্ট ও নেতাকর্মীরা গত নয় বছরে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। সুশাসন আর জবাবদিহিতার অভাব, দুর্নীতি, লুটপাট, নীতিহীনতা আর বিশৃঙ্খলার কারণে অস্থিতিকর ও নৈরাজ্যকর অবস্থায় রয়েছে বর্তমান ব্যাংকিং খাত। এসব কারণে দেশের অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, ননব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিদারুণ ধ্বংসের মুখে পতিত হয়েছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের ব্যাংকিং সেক্টর। ব্যাংকিং খাতের এই মরণ-ঘণ্টার জন্য সরকার দায়ী।বিশেষত, অর্থ মন্ত্রণালয়। কারণ অর্থমন্ত্রী নিজেই সরকারি ব্যাংকের এমডি- চেয়ারম্যান ও পরিচালক নিয়োগ দেন। ব্যাংকিং খাতের এই অবস্থার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারই দায়ী। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তৃৃত্ব আরো বাড়াতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন রাষ্ট্র সরাসরি ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়েছিল। সেটা আওয়ামী লীগ আবার চালু করেছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এটি আবার বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে দলটি। গতকাল বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের ব্যাংকিং খাতের চরম দুরবস্থার চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ঋণের নামে ও বিভিন্ন কারসাজি করে গ্রাহকের প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী, সমর্থক ও আওয়ামী মদদপুষ্ট গোষ্ঠী। মুখ থুবড়ে পড়েছে ব্যাংকিংখাত। প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় কোনো নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে ব্যাংকের মালিকানা জোর করে বদল করা হচ্ছে। ব্যাংকগুলোতে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও পরিবারতন্ত্র কায়েমে বেড়ে গেছে মুদ্রা পাচার ও ঋণখেলাপির মাত্রা। এতে প্রথমসারির অর্থনীতিবিদরা অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত মনে করছেন। আমরা মনে করি, বর্তমানে সব ব্যাংকিং খাতে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তা অচিরেই অর্থনীতিকে রক্তশূন্য করে ফেলবে।
মির্জা আলমগীর বলেন, জনগণের কাছে বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি ব্যাংকিং খাতকে লোপাট করে আরো টাকার পাহাড় গড়তে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমরা বলতে চাই, দুর্নীতিগ্রস্ত ফ্যাসিস্ট এই সরকারের এহেন গণবিরোধী অর্থনীতি বিধবংসী কর্মকাণ্ড জনগণ কখনো ক্ষমা করবে না। একদিন জনতার আদালতে এদের বিচার হবে ইনশাআল্লাহ্‌। তিনি বলেন, ব্যাংকিংখাতের বিপর্যয়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বমূলক ভূমিকার বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থনীতি সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে ক্ষিপ্ততার সঙ্গে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। আর্থিকখাতে সুশাসন না থাকার ফলে ব্যাংক লুটেরা চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় আওয়ামী আশীর্বাদপুষ্ট মহল আরো উৎসাহিত হয়ে নানা কৌশলে ব্যাংকের অর্থ লুণ্ঠন করেই যাচ্ছে।
তিনি বলেছেন, বর্তমানে ব্যাংকগুলো তীব্র তারল্য সংকটে জর্জরিত। ধার-দেনা করে চলছে দেশের বেশির ভাগ ব্যাংক। সরকারি ব্যাংকগুলোও তাদের মূলধনের অনেকাংশই লুটে নিয়েছে। আমানতকারীরা লাইন ধরে আমানতের টাকা ফেরত নিতে চাচ্ছে। তারা চেক দিয়েও সময়মতো টাকা পাচ্ছে না। তহবিলের অভাবে চেক বাউন্স হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের ঋণের অর্থ সময়মতো ছাড় করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। অনেক ক্ষেত্রে অনুমোদনপ্রাপ্ত ঋণও ফেরত নেয়া হচ্ছে। এফডিআর ভাঙানোর হিড়িক পড়েছে ব্যাংকগুলোতে।
ঋণখেলাপির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি অভিযোগ করে বলেন, খেলাপি ঋণই বাংলাদেশের ব্যাংকের সংকটের মূল কারণ। ঋণের নামে গ্রাহকদের হাজার হাজার কোটি টাকার আমানত লুটে নিচ্ছে খেলাপিরা। ‘অবলোপন’ এর দোহাই দিয়ে ঋণের তালিকা থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে খেলাপিদের। খেলাপি ঋণের পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারিতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সাবেক ডেপুটি গভর্নরের মতে, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক থেকে ঋণের নামে সব টাকা বের করে নিয়ে গেছে। এসব টাকা ফেরত আসার সম্ভাবনা নেই।
বেসরকারি ব্যাংকের ‘নাজুক অবস্থা’র চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৫ সালে ৫শ’ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে এমন ১১ বড় ব্যবসায়ী গ্রুপের ১৫ হাজার কোটি টাকার পুনর্গঠনের নামে ঋণ নিয়মিত করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে শীর্ষ খেলাপির তালিকা থেকে বাদ যায় আওয়ামী আশীর্বাদপুষ্ট কয়েকটি বড় গ্রুপ। যার মধ্যে একটি গ্রুপের কর্ণধার বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারিখাত বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত আছেন। তিনি বলেন, বড় খেলাপিরা সবাই ক্ষমতাবান, প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট। অন্যদিকে যাদের প্রয়োজন সেই ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণকারীরা উপেক্ষিত। কারণ তাদের ক্ষমতা, রাজনৈতিক আশীর্বাদ নেই। স্পষ্টতই বাংলাদেশ এখন দ্বৈতনীতির আশ্রয় নিয়েছে যা নজিরবিহীন ও সকল মানদণ্ডে অনৈতিক। মির্জা আলমগীর বলেন, সামপ্রতিক আতঙ্ক বেসরকারি খাতের ফারমার্স ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনা থেকে শুরু হলেও প্রকৃতপক্ষে বড় ধরনের ব্যাংক কেলেঙ্কারির শুরুটা হয় ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক গ্রুপ কেলেঙ্কারি থেকে।
মির্জা আলমগীর বলেন, চমৎকার অর্থনীতি বলছে তার চিত্র দেখুন। সরকারি ব্যাংকের ২৫% ঋণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা মাত্র ২০২২ জন ঋণগ্রহীতাকে প্রদান করা হয়েছে। ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো এ বিষয়ে কম যায় না। গুটিকয়েক পরিবারের হাতে ঋণের নামে ব্যাংকের অর্থ কুক্ষিগত হয়ে পড়েছে। সে কারণে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং নেই বললেই চলে। অপরদিকে গ্রাম-গঞ্জে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা ঋণ পাচ্ছে না। অর্থাৎ ব্যাংক ঋণসুবিধা প্রাপ্তি বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠেছে। ব্যাংকিংখাতে এ রকম অবস্থায় এই বছর আরো ‘তিনটি বেসরকারি ব্যাংকে’র অনুমতি প্রদান এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘ক্ষমতা খর্ব’ করার সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকারের আমলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ৮০০ কোটি টাকা লুট হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ডলার চুরির ঘটনায় ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা’ রয়েছে এবং ‘ব্যাংক ডাকাতির হোতারা ব্যাংকের ভিতরেই আছে’ বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। বাংলাদেশ সরকারের আশীর্বাদ না থাকলে ব্যাংক ডাকাতির হোতাদের বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরে থাকা সম্ভব নয়। চুরি হয়ে যাওয়া অর্থের সামান্য অংশ ফেরত এলেও সিংহভাগ অর্থই আর ফেরত পাওয়ার সম্ভবনা নেই। চুরির ঘটনার পরপর আমরা ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায় সরকারি কর্মতৎপরতা দেখলাম, অথচ বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ সরকার একেবারেই নির্লিপ্ত। এ টাকা উদ্ধারে দীর্ঘ দু’বছর বিলম্বে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো কেন? বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লুটের বিষয়ে ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দীনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টটি কেন আজ পর্যন্ত প্রকাশ করা হলো না- তা এখন আর রহস্যাবৃত নয়।
মির্জা আলমগীর বলেন, আগে যেখানে একটি ব্যাংকে একই সময়ে একটি পরিবারের ২ জন পরিচালক ২ মেয়াদে ৬ বছর পর্যন্ত থাকার নিয়ম ছিল বর্তমান সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা বাড়িয়ে একই পরিবারের ৪ জনকে পরিচালক পদে টানা ৩ মেয়াদে ৯ বছর থাকার সুযোগ করে দিয়েছে। আর সঙ্গে যোগ হয়েছে একই পরিবারের বহু ব্যাংকের মালিকানার সুযোগ। ঐ পরিবারগুলো আবার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সর্বোচ্চ পরিমাণের ঋণ গ্রহীতা। ঝুঁকির এ ধরনের বড় নজির পৃথিবীতে নেই। সংশোধিত আইন কার্যকর করা হলে পরিবারতন্ত্র কায়েমের মাধ্যমে পরিচালকদের লুটপাটের পরিমাণ নিঃসন্দেহে আরও বেড়ে যাবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রীর নিকট থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার অনৈতিক সুবিধা হাতিয়ে নেয়ার পরেই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের গণভবনে নৈশভোজে আপ্যায়ন করেন। এর পরেই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে তারা ১৬০ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করেন। এর আগেও আমরা দেখেছি যে কিছুদিন পর পর ব্যাংক মালিকদের সংগঠনের ব্যানারে ব্যাংক মালিকরা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কোটি কোটি টাকার চেক দান করেছেন। ব্যাংকগুলো যেখানে আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে পারছে না সেখানে কিভাবে তারা সিএসআর-এর নামে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কোটি কোটি টাকার অর্থ প্রদান করেন তা নিয়ে আমানতকারীদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মির্জা আলমগীর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এর নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর ঋণ আমানত অনুপাত থাকার কথা ৮৫%। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে বেপরোয়া ব্যাংকিংয়ের ফলে ১০ ব্যাংকের আমানত অনুপাতের সীমা ৮৫ ভাগেরও বেশি ছাড়িয়ে গেছে। এতে গোটা ব্যাংক খাতে হঠাৎ করেই বেড়েছে তারল্য চাহিদা। বাড়তে শুরু করেছে ঋণের সুদের হার। অন্যদিকে ২০১৫ সনে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে এমন ১১ বড় ব্যবসায়ী গ্রুপের ১৫ হাজার কোটি টাকা পুনর্গঠনের নামে ঋণ নিয়মিত করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারি ব্যাংকের ২৫% ঋণ অর্থাৎ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা মাত্র ২০/২২ জন ঋণগ্রহীতাকে প্রদান করা হয়েছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোও এই বিষয়ে কম যায় না।
তিনি বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাত যখন খেলাপি ঋণের ভারে নুয়ে পড়েছে এবং অনিয়ম ও বিচারহীনতায় নিমজ্জিত এবং লাগামহীন লোপাটে তলায়মান, তখন বাংলাদেশের ব্যাংকের উচিত ছিলো ব্যাংকিং ব্যবস্থায় কঠোরভাবে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ ব্যাংকের যথাযথ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। অতিসমপ্রতি ব্যাংক মালিকদের চাপের মুখে আরো ছাড় দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি ব্যাংকগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক নগদ জমার হার (সিআরআর) এক শতাংশ কমিয়ে দিয়েছেন। এতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর হাতে যাবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। মুদ্রানীতির সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হচ্ছে সিআরআর। বিশ্বে সব কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাপক আলোচনা ও গভীর বিশ্লেষণের পর এই হার নির্ধারণ করে থাকে। অথচ বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী এই কাজ করলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে প্রথমে ডেকে নিয়ে ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে মুখোমুখি বসে। ব্যাংক মালিকদের চাপে এহেন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা খর্ব করা হলো। অর্থমন্ত্রী নিজেই সাংবাদিকদের বলেছেন, সিআরআর বিষয়ক সিদ্ধান্ত সালমান এফ রহমানের আইডিয়া।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই সরকার যেহেতু জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই তারা জনগণের পকেট কেটে সেই অর্থ গুটিকয়েক মানুষের মধ্যে বিতরণ করছে, দুর্নীতির পাহাড় গড়ছে। যেহেতু সরকারের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা, জবাবদিহিতা নেই। জনগণের কল্যাণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলেই ব্যাংকিং খাতে এই ধরনের লুটপাট ও অরাজগতা হচ্ছে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ব্যাংকিং খাতের যা হচ্ছে তা হলো ভোগ ও নিয়ন্ত্রণ। সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করো, বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করো, ব্যাংকি নিয়ন্ত্রণ করো- সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ব্যাংকের যে একটা আলাদা সত্তা থাকে সেটা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিয়েছে এ সরকার। সমস্ত কিছুকে তারা রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে। এতে ভুক্তভোগী হচ্ছে দেশের সাধারণ জনগণ। সরকারের একদলীয় নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে তারা ব্যাংকিং খাতকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এনে এই খাতে এই ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে এনেছে। ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশে একজন মালিক ৮টা ব্যাংকের মালিক। কাজে মনোপলি কোথায় গেছে আজকে বাংলাদেশের অর্থনীতি সেক্টরের দিকে তাকালে সেটা বুঝতে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তিনদিন আগে প্রকাশিত জাতিসংঘের একটি রিপোর্টে বাংলাদেশের ফাইন্যান্সিয়াল সম্পর্কিত বিষয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে কী ধরনের লুটপাট হচ্ছে তা বিশদভাবে এসেছে। এককথায় বলতে চাই, আমাদের ম্যাক্রো ইকোনমির যে চিত্র সেটা গভীর আশঙ্কার সম্মুখীন। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন ব্যাংকিং ডিভিশনটা বন্ধ করে দিয়েছিলো। আমরা চাইনি রাষ্ট্র সরাসরি এখানে জড়িয়ে পড়ুক। তখন ব্যাংকিং সেক্টর রেগুলেটরি বোর্ড ছিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে। ব্যাংকিং খাত মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনার অর্থই হচ্ছে দুর্নীতি। যেটা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ব্যাংকিং ডিভিশনটা আবার চালু করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংকিং সেক্টর ও মিনিস্ট্রি অব ফাইন্যান্স সবগুলোতে একটা দেয়াল আছে। আওয়ামী লীগ এই দেয়ালটা ভেঙে ফেলেছে। এখন আর দেয়াল নাই। এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ব্যাংকিং সেক্টর এবং মিনিস্ট্রি অব ফাইন্যান্স সব একাকার হয়ে গেছে। আজকে আওয়ামী লীগ সেই দেয়ালগুলো লুটপাট করে ভেঙে ফেলেছে। ব্যাংকিং সেক্টর, শেয়ারবাজার, লুটপাট একই সূত্রে গাঁথা। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্ষমতা পুনর্বহাল ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশন বন্ধ করে দেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com