ব্যাটসম্যানদের দিনে বল হাতে নৈপুণ্য দেখালেন সাকিব আল হাসান। আর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দারুণ জয় নিয়ে আসরের প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফ পর্বের টিকিট কাটলো তার দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি আসর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) বৃহস্পতিবার দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে ৯ উইকেটে জয় দেখেন সাকিবরা। চলতি আসরে তালিকার শীর্ষ দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সংগ্রহ ১১ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট। দিল্লিতে ম্যাচের দুই ইনিংসে বোলাররা পান মাত্রই চার উইকেট। এর দুই উইকেটই আসে সাকিবের স্পিন ভেলকিতে।রানআউট হন দিল্লির দুই ব্যাটসম্যান। আগে ব্যাটিং শেষে দিল্লির সংগ্রহ পৌঁছে ১৮৭/৫-এ। তবে দিল্লির পুঁজিটা বড় হতে পারতো আরো। বল হাতে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের সমীহ আদায় করেন সাকিব আল হাসান। ৪ ওভারের স্পেলে মাত্র ২৭ রানে দুই উইকেট নেন সানরাইজার্সের এ বাংলাদেশি বাঁ-হাতি স্পিনার। আর বল হাতে নিজের প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন সাকিব। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শেষ দুই বলে সাকিব সাজঘরে ফেরান দিল্লির দুই ওপেনার পৃথ্বি শ’ ও ইংলিশ ব্যাটসম্যান জেসন রয়কে। এতে ইনিংসের চতুর্থ ওভার শেষে ২১/২ সংগ্রহ নিয়ে চাপে পড়ে দিল্লি। নিজ ভেন্যু ফিরোজ শাহ কোটলা মাঠে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। ৬৩ বলে হার না মানা ১২৮ রানের ইনিংস খেলেন রিষভ পন্ত। হায়দরাবাদের সফল দুই বোলার রশিদ খান ও ভুবনেশ্বর কুমারের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ২৪ বলে ৭০ রান করেন রিষভ। রশিদ খানের ১৩ বলে রিষভ নেন ২৭ রান। আর সাকিবের ১২ বলে ১৭ রান করেন রিষভ। জবাবে ৭ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ইনিংসের শুরুতে স্বস্তি ছিল না হায়দরাবাদেরও। দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ১৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। শিখর ধাওয়ান ও কেন উইলিয়ামসনের অবিচ্ছিন্ন ১৭৬ রানের জুটিতে শেষ পর্যন্ত সহজ জয়ই তুলে নেয় ২০১৬’র চ্যাম্পিয়নরা। ধাওয়ান ৫০ বলে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৯২ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৫৩ বলে ৮ চার ও দুই ছয়ে ৮৩ রান করে অপরাজিত থাকেন উইলিয়ামসন। চলতি আইপিএলে এটি উইলিয়ামসনের ষষ্ঠ হাফ সেঞ্চুরি। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন শিখর ধাওয়ান। এবারের আইপিএলে তার নতুন দল হায়দরাবাদের হয়ে প্রত্যেক ম্যাচেই খেলেছেন সাকিব আল হাসান। আসরে বল হাতে সাকিবের শিকার ১২ উইকেট। আর ব্যাট হাতে ২২.৫৭ গড়ে সাকিবের সংগ্রহ ১৫৬ রান। আসরে ১৬ উইকেট নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছেন কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের অজি পেসার অ্যান্ড্রু টাই। চলতি আসরেই গর্বের দুই ল্যান্ডমার্ক স্পর্শ করেন সাকিব আল হাসান। আইপিএল ক্যারিয়ারে ৫০০ রান ও ৫০ উইকেট পূর্ণ হয় তার। আইপিএল ইতিহাসে এমন কীর্তি রয়েছে মাত্রই ১১ জন ক্রিকেটারের। এবারের আইপিএলে বল হাতে সাফল্য নিয়ে অভিজাত এক তালিকায়ও নাম ওঠে সাকিবের। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৪০০০ রান ও ৩০০ উইকেটের কীর্তি গড়া মাত্র দ্বিতীয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। এমন কীর্তি রয়েছে কেবল ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভোর। ক্যারিয়ারে ২৬৫ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সাকিবের সংগ্রহ ৪১৩৮ রান। বল হাতে শিকার চতুর্থ সর্বাধিক ৩০৬ উইকেট। ব্রাভোর ৪২০, লাসিথ মালিঙ্গা ৩৪৮ ও সুনীল নারাইনের রয়েছে ৩৩০ শিকার।