ব্রাজিলীয় দলটি ভারসাম্যপূর্ণ। খেলোয়াড়েরা সামর্থ্য ও প্রতিভাবান। তাঁরা জানেন প্রেসিং ফুটবলে গোল আদায় করতে।
নেইমারই দলটির সবকিছু নন—২০১৮ বিশ্বকাপের জন্য ব্রাজিলের যে ২৩ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষিত হয়েছে, সেটি সম্পর্কে এমনটি বলাই যায়। গত বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ভরাডুবির মূল কারণই ছিল এটি—অতিমাত্রায় নেইমারের ওপর নির্ভরশীলতা। কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে চোটে পড়ে নেইমার যখন দল থেকে বেরিয়ে গেলেন, তখনই বেরিয়ে পড়ল ব্রাজিলীয় দলের নখদন্তহীন চেহারাটা। সেমিতে নেইমারবিহীন ব্রাজিল জার্মানির বিপক্ষে সাত গোল খেয়ে প্রমাণ করেছিল, এক নেইমারের চোট গোটা দলকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল।
এবার অবশ্য সেই ব্যাপার নেই। তিতের ব্রাজিল এক নেইমারের ওপর নির্ভরশীল নয়। এই দলে নেইমার ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন তারকা আছেন। অবশ্যই নেইমার গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তিনি দলের জন্য ‘শেষ কথা’ নন।
এই পরিবর্তনটা এসেছে তিতে ব্রাজিলীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই। তিনি যে পদ্ধতিতে দলকে খেলান, তাতে নেইমার অনেক বেশি স্বাধীনতা নিয়ে খেলতে পারেন। তিনি ব্যক্তি বিশেষ নির্ভরতা থেকে দলকে বের করে নিয়ে এসে গড়েছেন পুরোদস্তুর একটা দল।
তিতের সময় নেইমার, মার্সেলো, দানি আলভেজদের (যদিও চোটে পড়ে আলভেজ বিশ্বকাপ মিস করছেন) সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন তারকা, যারা মাত্র শুরু করেছেন, ক্ষমতা ও সামর্থ্য রাখেন আরও অনেক দূর যাওয়ার। গ্যাব্রিয়েল জেসুস, পাওলিনহো, উইলিয়ান, ফিরমিনহো, ফার্নান্দিনহো ও কুতিনহোদের মতো খেলোয়াড়। ব্রাজিলের এই দলটা জানে কীভাবে পাসিং ও প্রেসিং ফুটবল খেলে প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করে ফেলা যায়।
ব্রাজিলের রক্ষণভাগও শক্তিশালী। সে হিসাবে তিতের এই দল প্রতিপক্ষকে ঠেকিয়ে রাখতে জানে। আলভেজ নেই তো কী হয়েছে, আছেন অভিজ্ঞ মার্সেলো, কাসেমিরো, দানিলো, ফাগনার, মিরান্দা, থিয়াগো সিলভারা কিংবা মারকিনেহাসরা। ব্রাজিলের এক নম্বর গোলরক্ষক অ্যালিসনকে তো ‘গোলবারের মেসি’ তকমাই দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ব্রাজিলের মূল শক্তিটাই হলো এই দলের গভীরতা ও ভারসাম্য। দলটির গভীরতার কারণে ফিরমিনহো ও দানিলো ও ডগলাস কস্তার মতো খেলোয়াড়দের বসে থাকতে হতে পারে ডাগ আউটে। যে খেলোয়াড়েরা বিশ্বকাপে যেকোনো দেশের জন্য ‘সম্পদ’ হতে পারেন, যাঁদের মতো খেলোয়াড়দের দলে নিতে যেকোনো মূল্য পরিশোধে রাজি অন্য দলগুলো, তাদেরই কিনা ব্রাজিলের মূল একাদশে সুযোগ পাওয়া নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে।
ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ে সব অস্ত্রই হাতের নাগালে ব্রাজিল দলের। অপেক্ষা কেবল সময় ও সুযোগমতো গর্জে ওঠা। ব্রাজিল কী পারবে?