1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
কেন হতাশ তরুণ সমাজ? - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
আজ টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ইফতার-সেহরিতে কী খাবেন রোজায় কম দামে মাছ মাংস দুধ ডিম মিলবে যেখানে শনিবার দেশে ফিরছেন ওবায়দুল কাদের এফডিসিতে কাজের পরিবেশ ফিরে আসুক: শাকিব খান ২০২৪ সালে টিকটকে আয়ের নতুন সুযোগ এবার ঈদে চমক দেখাবেন বুবলী ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে যে নতুন কৌশল নিচ্ছে বিএনপি শাকিব যেভাবে খেলছে খেলতে থাকুক: ওমর সানী বিপাকে পড়েছেন নিপুণ প্রয়োজনে আমরাও স্যাংশন দিতে পারি: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুক বিভ্রাটের শিকার ৫ লাখের বেশি ব্যবহারকারী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হলেন মেহের আফরোজ চুমকি চৌদ্দগ্রাম প্রেসক্লাবের বার্ষিক বনভোজন ২০২৪ অনুষ্ঠিত ভ্রমণে নামাজ যেভাবে পড়বেন

কেন হতাশ তরুণ সমাজ?

  • Update Time : সোমবার, ২১ মে, ২০১৮
  • ৩২৯ Time View

মেহেরপুর থেকে উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে রুবেল ঢাকায় আসেন ২০১২ সালে। সংসারে তিনিই বড় সন্তান। রুবেলের বাবা ছিলেন মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। বাবার সামান্য পেনশনের টাকা ও অল্প জমির আয়ে তিন ভাইবোন ও মাকে নিয়ে কোনোমতে চলছে সংসার। দুই বছর আগে বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেন।বড় ছেলে হওয়ায় সঙ্গত কারণেই তার ওপর সংসারের দায়িত্ব বর্তায়। তিনি এখন থাকেন মিরপুরের একটি মেসে। এই কয়েক বছরে পড়াশুনার পাশাপাশি কিছু রোজগারের আশায় নানা চেষ্টা করেছেন তিনি। পড়ার খরছ যোগাতে পরিচয় গোপন করে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের ফুটপাথে  কাপড়ও বিক্রি করেছেন। বিবিএ পাস করার পর সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টারভ্যু দিয়েছেন। কিন্তু চাকরি নামক ‘সোনার হরিণ’ অধরা তার কাছে। হতাশ সজল বলেন, উচ্চশিক্ষিত হয়েও আমি বেকার। নিজেকে সবসময় ছোট মনে হয়। পুরো পরিবার আমার ওপর নির্ভর করছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে আমি হতাশ। এ হতাশা বোঝানো যাবে না।

মো. ওয়ালীউল্লাহ ওলি (২৯)। ২০১৪ সালে বরিশাল বিএম কলেজ থেকে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর পেরিয়ে গেছে ৪ বছর। কিন্তু চাকরি এখনো অধরা ওলির কাছে। মাদারীপুরের ছেলে ওলি থাকেন মিরপুরের কাজীপাড়ার একটি মেসে। তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে না পারছি নিচে নামতে না পারছি উপরে ওঠতে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমাও প্রায় শেষের পথে। শুধু আমি নই, আমার বন্ধুদের অনেকেরই একই অবস্থা। ওলি জানান, ঘুষ, তদবির আর রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়া এখন আর চাকরি হয় না। আর চাকরি না পাওয়ায় পরিবার, স্বজনদের চাপ রয়েছে। সামাজিকভাবেও হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি। এলাকায় গেলেই সবাই জানতে চায় কেন চাকরি হচ্ছে না? নিজেকে সবসময় ছোট মনে হয়। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কারণে আমি হতাশ।

কেবল বেকারত্বের জন্য নয়, চারদিকে খুন, ধর্ষণ, সড়কে মৃত্যুর মিছিলসহ নানা নেতিবাচক ঘটনা ঘটছে। এতে করে আমাদের মতো তরুণদের হতাশা আরো বাড়ছে। কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী প্রিতী বলেন, যখন কলেজে পড়া শুরু করি তখন থেকেই ইচ্ছে ছিল চাকরি করবো, নিজের পায়ে দাঁড়াবো। কারো মুখাপেক্ষী হবো না। গৃহিণী হয়ে থাকবো না। কিন্তু চাকরির বাজারের যে অবস্থা তাতে পড়াশুনা শেষ করে একটি মানসম্মত চাকরি পাবো কি না এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে তরুণদের হতাশার একটি বড় কারণ কর্মসংস্থানের অভাব বা বেকারত্ব। শিক্ষিত বেকারদের মধ্যে এ হতাশা আরো বেশি বলে মনে করেন তারা।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, শুধু শিক্ষিত বেকার নয়, গ্রামাঞ্চলে তরুণ যুব সমাজ ব্যাপকহারে বেকার রয়েছে। আর ব্যাপকহারে বেকারত্বের কারণেই কিন্তু বেকারদের একটি অংশ মাদকে আসক্ত হচ্ছে।  এসব হতাশা, নিরাশা থেকেই হয়। তরুণদের এই হতাশা নিরাশা দূর করাও কিন্তু একটি জাতীয় দায়িত্ব। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ, মাদকের বড় কারণই হচ্ছে হতাশা ও নিরাশা। এটি চাকরি পেয়েও হতে পারে আবার চাকরি না পেয়েও হতে পারে। একজন যদি এম এ পাস করে ৩ হাজার ৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে তাহলে তার এই চাকরি পাওয়া এবং বেকার থাকার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আবার  কোনোক্ষেত্রে যদি বেতন কমও হয় কিন্তু আশা থাকে যে ২/৩ বছর পার করলে ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা আছে, তাহলেও হয়তো চালিয়ে নেয়া যায়। মূল কথা হলো কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দু’বছর আগে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন আল মাসুদ সজীব। বর্তমানে টিউশনির টাকায় নিজের খরছ চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, চাকরির জন্য বিশেষ করে সরকারি চাকরির জন্য গত দু’বছর ধরে চেষ্টা করছি। কিন্তু হচ্ছে না। তরুণ সমাজের বেশির ভাগই প্রত্যাশা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছে না। শিক্ষিত তরুণদের জন্য চাকরির বাজারটা ক্রমেই যেন সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। এতে করে অনেকেই চাপে পড়ে হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছে। আর হতাশা থেকে অনেকেরই সামাজিক অবক্ষয় ঘটছে। তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের অভাব যেমন দেখতে পাচ্ছি তেমনি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো যুগোপযোগী ও ঢেলে সাজানোরও প্রয়োজন রয়েছে।

আজহার করিম শাহেদ। খুলনার পাইকগাছা থেকে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে ঢাকায় এসেছিলেন। উচ্চশিক্ষিত হয়েছেনও। কিন্তু মূল যে উদ্দেশ্য ছিল চাকরি সেটি এখনো অধরা তার কাছে। তিনি এখনো বেকার। তিনি বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পেরিয়ে যাচ্ছে। পরিবারকে কিছুই দিতে পারছি না। বেকার বলে বিয়েও করতে পারছি না। যাকে বিয়ে করবো আমার বেকারত্বের জন্য সেই প্রেমিকাও হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি চাকরি পেতে গেলে ঘুষ দিতে হয়। রাজনৈতিক যোগাযোগ থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ শিক্ষার্থীদের সে উপায়ও নেই। বেসরকারি চাকরিতেও আমার সনদের মূল্যায়ন হয় না। এ অবস্থায় দুঃসহ জীবন পার করছি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ  বলেন, বেকারত্ব থাকলে যা হয়, এটির একটি হলো সামাজিক প্রভাব অন্যটি অর্থনৈতিক এই দু্‌’দিক দিয়েই ক্ষতি হচ্ছে। সামাজিক দিক হলো বেকারদের তো সিকিউরিটি অব লাইফ অর্থাৎ যেটি আয়কে বোঝায়, সেটা তাদের নেই। তাদের প্রতিনিয়ত পরিবারের কাছে হাত পাততে হচ্ছে। আর হাত পাতলে সবসময় পাওয়াও যায় না। একজন শিক্ষিত যুবক যখন পরিবারের কাছে টাকা চায় তখন সব পরিবারই সবসময় তা দিতে পারে না। এতে বেকারদের মনে হতাশাজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং এ থেকে তারা সামাজিক অপরাধ, অস্থিরতা ও বেআইনি কাজে লিপ্ত হয়। তিনি বলেন, এটি কিন্তু আমাদের জন্য বিরাট সমস্যা। এ অবস্থা যদি বাড়তে থাকে তাহলে এটি দেশকে ভীষণ অস্থিতিশীল ও অস্থির করে তুলবে। তাই এ নিয়ে জরুরিভিত্তিতে চিন্তা করা উচিত।

অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, শিক্ষিত তরুণ সমাজের হতাশার দুটো কারণ রয়েছে। একটি হচ্ছে কর্মসংস্থানের পরিমাণের সংকট। অন্যটি স্বচ্ছ প্রতিযোগিতার জায়গায় একটি সংকট আছে। তিনি বলেন, হতাশা থেকে বেকারদের একটি অংশ অপরাধজনক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। আর বেকারদের  বৃহৎ একটি অংশ জীবনবাজি রেখে ঝুঁকি নিয়ে বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছে-এটিও হতাশা থেকেই। দেশের প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তনের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের আরো বেশি কর্মমুখী ও কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠী প্রয়োজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, রাষ্ট্র তরুণদের জন্য প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে না। কাজ না পাওয়াতে তরুণরা হতাশায় ভুগছে। আর এ হতাশা থেকে তরুণদের একটি অংশ নানা সামাজিক অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থী পাস করে কর্মজীবনে প্রবেশ করবে- এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু বাবা মায়েরা অনেক কষ্ট করে সন্তানকে পড়াশুনা করান, স্বপ্ন দেখে। কিন্তু পাস করে চাকরি ক্ষেত্রে সেই সন্তান কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাবা মা স্বজনদের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না।

স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হচ্ছে। আর এ থেকেই কোনো কোনো তরুণ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ দুঃস্বপ্ন ভুলে থাকার জন্য মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে। একদিকে তারা হতাশা ভুলে থাকার জন্য মাদক গ্রহণ করছে অন্যদিকে মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। তৌহিদুল হক বলেন, একদিকে আমরা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে তরুণদের একটি অংশকে অপরাধের দিকে ঠেলে দিচ্ছি অন্যদিকে সেই অপরাধের জন্য তাদের বিচার হচ্ছে। এটি স্ববিরোধী। তিনি বলেন, তরুণ সমাজ নিয়ে আমাদের আরো বেশি ভাবতে হবে। আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে বেকারত্ব  বাড়ছে। একই সঙ্গে তরুণদের হতাশাও বাড়ছে। শুধু পাসের সংখ্যা বাড়িয়ে কোনো লাভ হবে না। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন পর্যায়ে নিতে হবে যেন তরুণদের বেকারত্বের হতাশায় ভুগতে না হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com