(স্বদেশ নিউজ ২৪.কম) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মুলজান গ্রামে শিষ্যের স্ত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক কথিত পীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আবু তাহের (৫৭) নামের ওই কথিত পীরকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যক্তি ও তার স্বজনেরা। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাও হয়েছে।
শিষ্যের স্ত্রী ছাড়াও অনেক নারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ওই পীরের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত আবু তাহেরের বাড়ি সদর উপজেলার দিঘী ইউনিয়নের ভাটবাউর গ্রামে।
ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার দিঘী ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম্য আদালতে পীরের বিরুদ্ধে বিচার আয়োজন করেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মতিন মোল্লা। বিচারে সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লীর চর গ্রামের লুৎফর রহমান জানান, তিনি ওই পীরের শিষ্য। স্ত্রীর সন্তান না হওয়ায় তিনি স্ত্রীকে নিয়ে পীরের কাছে যান। পরে কথিত পীর তাহের তার স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
গ্রাম্য আদালতে তিল্লীর চর গ্রামের আবদুর রহিমের স্ত্রী হানিফা বেগম জানান, তার স্বামী রহিমের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে রহিমের জামিন করানোর কথা বলে তাহের ৩৮ হাজার টাকা নেন। তিনি সেই টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী নারী ও পুরুষ তাহেরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেন।
ওই গ্রামের আনোয়ারা বেগম জানান, কথিত পীর আবু তাহের বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে সহজ-সরল মানুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেন। কলেজে ভর্তি ও চাকরির কথা বলে মানুষজনের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়েছেন। এ ছাড়া ওই পীর অনেক নারীরও সর্বনাশ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পরে গ্রাম্য আদালতের বিচারক ইউপি চেয়ারম্যান মতিন মোল্লা উপস্থিত সবাইকে জানান, এসব অভিযোগ ফৌজদারি হওয়ায় গ্রাম্য আদালতে বিচারবহির্ভূত। এরপর পরিষদ প্রাঙ্গণে ভুক্তভোগী ব্যক্তি ও তাদের স্বজনেরা তাহেরকে গণপিটুনি দেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ওই পীরকে আটক করে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, ‘লুৎফর রহমান নামের এক ব্যক্তি ওই পীরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। পরে তাকে বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’