গাজা উপত্যকার খান ইউনুসে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিলেন এক ফিলিস্তিনি। তার অসহায়ত্ব দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে গেলেন এক নার্স রজন আল নাজার। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মমতা। ইসরাইলের সেনারা তাকেও গুলিতে ঝাঁঝড়া করে দিলো। মাটিতে লুটিয়ে পড়েলেন তিনিও। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে নিলেন।শুক্রবার এমনই এক ভয়াবহ দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা সীমান্তে। এদিন ফিলিস্তিনিরা গাজা সীমান্তে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছিলেন। তারা প্রায় দিনই এমন বিক্ষোভ করেন। বিশেষ করে শুক্রবার বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা অনেক বেশি হয়। ইসরাইলের অভিযোগ ওই বিক্ষোভ থেকে তাদের সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে হাতবোমা ও গুলি চালানো হয়েছে। এর জবাব দিতে তারা গুলি চালিয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, ৩০ শে মার্চ গাজা উপত্যকায় সাপ্তাহিক বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়ালো ১১৯। গাজা উপত্যকাটি ইসলামপন্থি হামাস নিয়ন্ত্রিত। সেখানে খান ইউনুস এলাকায় শুক্রবার বিক্ষোভের সঙ্গে ছিলেন ২১ বছর বয়সী নার্স নাজার। তিনি স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসা সহায়তাকারী হিসেবে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন। যখন তিনি দেখতে পান সীমান্তের কাছে এক ফিলিস্তিনি ভাই গুলি খেয়ে পড়ে আছেন, তার সহায়তায় এগিয়ে যান তিনি। এ সময় তিনি ছিলেন নার্সদের জন্য নির্ধারিত সাদা পোশাক পরা। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, নাজার ওই ভাইকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে নিজে দু’হাত শূন্যে তুলে ধরেন এবং এগিয়ে যান। কিন্তু তার হাতে কোনো অস্ত্র না থাকলেও, হাত উঁচুতে ধরা থাকলেও ইসরাইলি সেনারা তার ওপর গুলি করে। গুলি তার বুকে বিদ্ধ হয়। জীবন বাঁচাতে গিয়ে এভাবে মুহূর্তের মধ্যে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলেন নাজার। এ বিষয়ে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্রের তরফ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায় নি। গাজায় মেডিকেল বিষয়ক কর্মকর্তারা বলছেন, শুক্রবারের গণবিক্ষোভে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে কমপক্ষে ১০০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। তবে আলাদা একটি বিবৃতি দিয়েছে ইসরাইলের সেনাবাহিনী। এতে বলা হয়েছে, তারা পাঁচটি স্থান থেকে ‘কয়েক হাজার দাঙ্গাকারীকে’ ছত্রভঙ্গ করেছে। এতে আরো বলা হয়েছে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের নিরাপত্তা বেষ্টনি অতিক্রম করে একজন সন্দেহভাজনকে ইসরাইলে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। সে হাতবোমা পেতে রেখে সরে গেছে। পরে তা বিস্ফোরিত হয়েছে। তবে এই সংঘাত চলাকালে ইসরাইলের কেউ হতাহত হন নি। বলা হয়েছে, গাজা থেকে একরকম ঘুড়ি উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তার সঙ্গে বেঁধে দেয়া হয়েছে অগ্নিবোমা। এসব ঘুরি কৃষিজমিতে পড়ে বড় ধরনের ক্ষতি করেছে।