শ্রীদেবীকে বলা হয় বলিউডের প্রথম নারী সুপারস্টার। সবাই তাঁকে চিনতেন অভিনেত্রী আর ভালো নৃত্যশিল্পী হিসেবে। কিন্তু শ্রীদেবী যে অনেক ভালো চিত্রশিল্পী, সেটা তাঁর কাছের মানুষ ছাড়া তেমন কেউ জানতেন না। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে শ্রীদেবীর আকস্মিক মৃত্যুর পর তাঁর এই গুণের কথা সামনে আসে। সম্প্রতি তাঁর স্বামী চিত্র প্রযোজক বনি কাপুর শ্রীদেবীর আঁকা ছবিগুলো নিয়ে একটি প্রদর্শনী করার পরিকল্পনা করছেন।
শ্রীদেবী অনেক আগে থেকেই ছবি আঁকতেন। কিন্তু তাঁর এই গুণের কথা সেভাবে প্রকাশ করেননি। শ্রীদেবীর বাড়ি আর বনি কাপুরের অফিসের অনেক দেয়ালে দেয়ালে এখনো ঝুলছে এই নায়িকার আঁকা চিত্রকর্ম। এ ছাড়া তিনি নানা সময় তাঁর কাছের বন্ধু আর আত্মীয়দের নিজের আঁকা ছবি উপহার দিয়েছেন। ২০১০ সালে লন্ডনের একটি নিলামে শ্রীদেবীর আঁকা ছবি ২২ লাখ রুপিতে বিক্রি হয়।
মৃত্যুর আগে শ্রীদেবী তাঁর ননদের ছেলের বিয়েতে দুবাই যান। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিল পুরো কাপুর পরিবার। কিন্তু বিয়ে শেষে সবাই ভারতে ফিরে এলেও শ্রীদেবী সেখানে আরও কয়েক দিন থাকার পরিকল্পনা করেন। জানা যায়, নিজের আঁকা কিছু ছবি নিলামে তোলার জন্য দুবাইয়ে থাকতে চেয়েছিলেন তিনি। সেখানে বনি কাপুরের ভাতিজি নায়িকা সোনম কাপুরের একটি ছবিও ছিল। কিন্তু ছবি নিয়ে আর কোনো কাজ করা হয়নি শ্রীদেবীর। তার আগেই পৃথিবী থেকে তিনি চিরবিদায় নেন।
স্ত্রীর স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে অনেক কিছুই করছেন বনি কাপুর। এবার শ্রীদেবীর আঁকা ছবিগুলো সংগ্রহ করে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করবেন।
এদিকে গতকাল শনিবার ছিল শ্রীদেবী আর বনি কাপুরের ২২তম বিবাহবার্ষিকী। বিশেষ এই দিনে শ্রীদেবীকে নিয়ে অনলাইনে আবেগী এক পোস্ট শেয়ার করেন বনি কাপুর। মৃত্যুর আগে এই তারকার কাটানো শেষ মুহূর্তের কিছু ছবি নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন বনি। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আজ আমাদের ২২তম বিবাহবার্ষিকী। আমার জীবন, আমার আত্মার বন্ধু, আমার ভালোবাসা, আনন্দ…তুমি আজীবন আমার মাঝে জীবন্ত হয়ে থাকবে।’
মা-বাবার বিবাহবার্ষিকীতে বড় মেয়ে জাহ্নবী কাপুরও তাঁদের একটি সুন্দর ছবি ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করেন। দুবাইয়ের জুমেইরাহ এমিরেটস টাওয়ারের বাথরুমের বাথটাবের পানিতে দম আটকে মৃত্যু হয় শ্রীদেবীর। ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন থেকে সে রকম তথ্যই পাওয়া যায়। শিশুশিল্পী হিসেবে বলিউডে অভিষেক হয় শ্রীদেবীর। চিত্তাকর্ষক চোখ, রুপালি পর্দায় উপস্থিতি আর অভিনয় দক্ষতা তাঁকে তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয়। তিনি হিন্দি ছবির পাশাপাশি তামিল, তেলেগু আর মালায়ালম ছবিতে সমান তালে কাজ করেছেন। ২০১৩ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে।