মাদারীপুরে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে হাসির কারণে শিক্ষিকার বেত্রাঘাতে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শম্পা আক্তারের (১০) চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
৩ জুলাই, মঙ্গলবার সকালে চোখে রক্তক্ষরণ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা দিল আফরোজ রত্নাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ।
আহত শম্পা শহরের পানিছত্র এলাকার সিরাজুল হক হাওলাদারের মেয়ে ও দরগাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী।
আহত শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ, সোমবার দুপুরে শহরের দরগাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরতির পর শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নিতে প্রবেশ করেন শিক্ষিকা দিল আফরোজ রত্না। শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকা সবাই দাঁড়িয়ে শিক্ষিকাকে সম্মান প্রদর্শন করেন।
এ সময় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী শম্পা দুষ্টুমির ছলে হেসে ওঠে। এতে ওই শিক্ষিকা ক্ষিপ্ত হয়ে শম্পাকে বেত দিয়ে পেটানো শুরু করেন। এর একপর্যায়ে শম্পার বাম চোখে বেতের আঘাত লাগে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে তার সহপাঠীরা বাসায় নিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন পরে তাকে মাদারীপুর চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত শিক্ষার্থী শম্পা বলে, ‘ম্যামকে মারতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু ম্যাম শরীরের একাধিক স্থানে বেত দিয়ে পিটিয়েছেন। আর দুষ্টুমি করব না বললেও ম্যাম আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।’
আহত শিক্ষার্থীর বাবা সিরাজুল হক হাওলাদার বলেন, ‘এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে আমাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ এখন কী হবে কিছুই জানি না। এ ঘটনা আর যেন না ঘটে, তার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
মাদারীপুর চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক এ. আর. অমিত বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর চোখ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে সময় লাগবে। আর পর্যাপ্ত চিকিৎসা না নিলে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আমরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেছি।’
মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নাসিরউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘খবর জানার পরই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের প্রতিনিধি বিদ্যালয় পরিদর্শন করে অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।’
অভিযুক্ত শিক্ষিকা দিল আফরোজ রত্নার মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগের করা সম্ভব হয়নি।