রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া শর্ত পূরণের পরও গণসংহতি আন্দোলনকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। দলটির দাবি, ইসি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিষয়টি পুনঃনিরীক্ষণ করুক।
৫ জুলাই, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে গণসংহতি আন্দোলনের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর এক স্মারকলিপিতে এই দাবি আনে।
গণসংহতি-আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন জানায়। চলতি বছরের ৮ এপ্রিল দলের নিবন্ধনের জন্য কমিশনের দুটি ঘাটতি পূরণ করে ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়।
ইসির চিঠিতে দলের গঠনতন্ত্রে অঙ্গ সংগঠন না রাখার বিধান যুক্ত করা এবং বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ার বিস্তারিত জানতে চায় বলে দলটি জানায়। গণসংহতির দাবি, ‘ইসির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী তাদের দল এই দুটি বিষয়ই গঠনতন্ত্রে যুক্ত করে সেটার অনুলিপি নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়।’
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত পুনঃনিরীক্ষার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে দলটি। এরপর প্রেসক্লাব থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মিছিল নিয়ে আসার পথে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে তারা। পুলিশের বাধা অতিক্রম করে তারা শাহবাগ পর্যন্ত আসে।
এ বিষয়ে জোনায়েদ সাকি প্রিয়.কমকে জানান, যানজটের কারণে তারা মিছিল সংক্ষিপ্ত করেছেন।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৭৫টি দল রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে। কিন্তু এডভোকেট রেজাউল করিমের ‘বাংলাদেশ কংগ্রেস’ ও আতাউল্লাহ খানের ‘গণ আজাদী লীগ’ ছাড়া বাকি ৭৩টির আবেদন বাতিল করে দেয় কমিশন। এগুলোর মধ্যে জোনায়েদ সাকির গণসংহতি আন্দোলনও রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের বিধি ৭-এর উপবিধি ৫(গ) অনুযায়ী, ‘দরখাস্তকারী দলকে অনূর্ধ্ব পনেরো দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় দলিলাদি সরবরাহসহ অন্যান্য ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ প্রদান করিয়া পত্র প্রদান করিবে।’
উপবিধি ৬-এ বলা হচ্ছে, ‘উপ-বিধি (৫)-এ উল্লিখিত পত্র প্রাপ্তির পর দরখাস্তকারী দল প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করিলে কমিশন উপ-বিধি ২, ৩ ও ৪-এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিয়া দরখাস্তটি মঞ্জুর বা না-মঞ্জুর করতি পারিবেন।’
গণসংহতি আন্দোলনের স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়, ‘দরখাস্তকারী গণসংহতি আন্দোলন এই চাহিদা পূরণ করেছে এবং কোনো আপত্তি বিষয়ক শুনানি না করেই নির্বাচন কমিশন দরখাস্তকারী গণসংহতি আন্দোলনের দরখাস্তটি না-মঞ্জুর করেছে এই মর্মে খবর বেরিয়েছে। যদিও এই বিষয়ে আমরা আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি বা বক্তব্য নির্বাচন কমিশনেরও কাছ থেকে এখন পর্যন্ত পাইনি।’
নিবন্ধনের জন্য আবেদনের বড় অংশ বাতিল করা প্রসঙ্গে ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, সঠিক কাগজপত্র ইসির নিকট উপস্থাপন করতে না পারায় ২৮টি দলকে নিবন্ধন না করার বিষয়টি দলের চেয়ারম্যান/সভাপতিকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। বাকি ৪৭টি দলকে যাচাই বাছাই শেষে ৪৫টি দলকে নিবন্ধনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। চূড়ান্ত পর্যায়ে দুটি দলকে রাখা হয়। পুনরায় যাচাই-বাছাইয়ে সন্তোষজনক হলে দুটি দলকে নিবন্ধন দেবে ইসি।