দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রকাশক এজি সাল্সবার্গার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, তিনি যেন সাংবাদিকদের ‘জনগণের শত্রু’ হিসেবে অভিহিত না করেন। কারণ এর ফলে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে। খবর পার্সটুডের।
রোববার হোয়াইট হাউজের আমন্ত্রণে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের পর এ হুঁশিয়ারি দেন সালসবার্গার। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার আলোচনার বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে বলে কথা হয়েছিল কিন্তু ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় সে সমঝোতা লঙ্ঘন করেছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার টুইটার বার্তায় লিখেছেন, সালসবার্গারের সঙ্গে তার ভালো আলোচনা হয়েছে এবং গণমাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ‘ভুয়া খবর’ প্রকাশের ব্যাপারে কথা হয়েছে। এসব ভুয়া খবর কীভাবে সাংবাদিকদেরকে ‘জনগণের শত্রুতে’ পরিণত করছে তা নিয়েছে কথা হয়েছে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, এটা দুঃখজনক।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ টুইটার বার্তা প্রকাশিত হওয়ার পর নিউ ইয়র্ক টাইমসের পক্ষ থেকে সালসবার্গার এক বিবৃতি প্রকাশ করে ট্রাম্পের এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমবিরোধী বক্তব্যের ব্যাপারে নিজের ‘গভীর উদ্বেগ’ জানাতে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছিলেন। সালসবার্গার বলেন, তিনি ট্রাম্পকে এ কথা বোঝানোর চেষ্টা করেন, ‘ভুয়া খবর’ নামের যে পরিভাষা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারবার ব্যবহার করছেন তা ‘অবাস্তব ও ক্ষতিকর’। এছাড়া ট্রাম্প সাংবাদিকদেরকে জনগণের শত্রু হিসেবে অভিহিত করে যে বক্তব্য দিচ্ছেন তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রকাশক ট্রাম্পকে আরও বলেন, তিনি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে যেসব কথা বলেন তা বিশ্বের অন্য অনেক দেশের ক্ষেত্রে সঠিক। ট্রাম্পের এ ধরনের বক্তব্যকে ব্যবহার করে ওইসব দেশের সরকার সেসব দেশের গণমাধ্যমকে দমন করার সুযোগ পাচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এক টুইটার বার্তায় নিউ ইয়র্ক টাইমস, এনবিসি, আইবিসি ও সিএনএনকে ‘মার্কিন জনগণের শত্রু’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং এক সপ্তাহ পর এক সংবাদ সম্মেলনে ওই বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন।
গত মাসে অভিবাসী মায়েদেরকে জোরপূর্ব তাদের শিশুদের থেকে আলাদা করে ফেলার মর্মান্তিক আচরণ মার্কিন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়। এসময় ট্রাম্প আবার গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সেই পরিভাষা ব্যবহার করেন। এরপর মার্কিন গণমাধ্যম সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠকের সমালোচনা করলে ট্রাম্প আবার মার্কিন গণমাধ্যমকে ‘জনগণের শত্রু’ বলে অভিহিত করেন।