1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
একজন মিকেলার চোখে বাংলাদেশ - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
সোনার দাম আরও কমল রাজধানীতে পানি, স্যালাইন ও শরবত বিতরণ বিএনপির জায়েদ খানের এফডিসিতে ফেরা হবে কিনা, জানালেন ডিপজল কক্সবাজার জেলায় কত রোহিঙ্গা ভোটার, তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট সিনেমা হলে দেওয়া হচ্ছে টিকিটের সঙ্গে ফ্রি বিরিয়ানি ঢাকায় বড় জমায়েত করতে চায় বিএনপি ১৫ বছর পর নতুন গানে জেনস সুমন যশোরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেলের জয়লাভ গোবিন্দগঞ্জে অটোচালক দুলা হত্যার মূল আসামি আটক চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু পলাশবাড়ীতে উপজেলা নির্বাচনে অনলাইন মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেই বিএনপি বলে বিরোধীদল দমন’ এবার বুবলী-শাকিবের ‘কোয়ালিটি টাইম’ নিয়ে মুখ খুললেন অপু বাংলাদেশের সফলতা চোখে পড়ার মতো: সিপিডির রেহমান সোবহান

একজন মিকেলার চোখে বাংলাদেশ

  • Update Time : বুধবার, ২২ আগস্ট, ২০১৮
  • ২৬১ Time View

ইতালিয়ান ইমিগ্রেশন অফিসের এক রুটিন সভায় বসে আছি। পেছন থেকে কেউ একজন সালাম দিলেন। উচ্চারণ শুনেই বুঝতে পারলাম সালাম দাতা নিশ্চই একজন ইতালীয়। আমার আন্দাজ ভুল হলো না। ঘাড় ফিরিয়ে দেখি সহকর্মী মিকেলা বসকলো ফিওরে (Michela Boscolo Fiore)। মিকেলা বসকলো ভেনিসের ইমিগ্রেশন অফিসের সহযোগী পরিচালক।কাজের সুবাদেই তার সঙ্গে পরিচয়।

সদা হাস্যোজ্বল সুন্দরী ইতালীয় যুবতী মিকেলা। কথা বলে কোনোভাবেই বোঝার উপায় নেই তিনি ইমিগ্রেশন অফিসের এতবড় দায়িত্বে আছেন। সবার সঙ্গে একেবারে সাদা-মাটাভাবে মিশেন। এতটুকু বস বস ভাব নেই। তিনি মনে করেন, সহকর্মীদের মধ্যে বন্ধুত্ব না থাকলে সঠিক কাজ সহজভাবে করা যায় না।

ঘাড় ফেরানোর আগে বুঝতে পারিনি আমার জন্য আরো কিছু বিস্ময় অপেক্ষা করছে। গালভরা হাসি নিয়ে মিকেলা বললেন, ভালো আছ কি? আমি মুহূর্তের জন্যে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। কী উত্তর দেবো? কীভাবে উত্তর দেবো? ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এমন পরিস্থিতিতে আমি আগেও পড়েছি। কোনো বিদেশির মুখ থেকে হঠাৎ বাংলা শুনলে আমি এতবেশি আবেগি হয়ে যাই যে, মুখ দিয়ে কোনো কথা বেরুতে চায় না। দীর্ঘদিন ইতালিতে থেকে সারাক্ষণ ইতালীয় কলিগদের সঙ্গে তাদের ভাষায় বক-বক করতে এবং শুনতে কান অভ্যস্ত হয়ে গেছে। তাই হঠাৎ কারো মুখে দুই-একটি বাংলা শব্দ শুনলে আমি ভাষা হারিয়ে ফেলি। কি বলবো সব গুলিয়ে ফেলি। মিকেলার বেলাও তাই হলো। জানতে চাই- আপনি বাংলা জানেন?

মিকেলা ইতালিয়ান ঢংয়ে বললেন, হ্যাঁ, আমি বাংলা বলতে পারি। বাংলাদেশেও গিয়েছি। তার কথা শুনে আমার কৌতূহল আরও বেড়ে গেল। আমার আগ্রহ মিকেলার বুঝতে বাকি রইলো না। তিনি বললেন, আমি অনেক আগে থেকে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করি। এ কাজ করতে গিয়ে অনেক ভাষাভাষী, জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে মেশার সুযোগ হয়। বাংলাদেশিদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে ধীরে ধীরে কৌতূহলী হয়ে উঠি। ইতালিতে অভিবাসী বাংলাদেশিদের (সকলের না) ভাষাগত দুর্বলতা তো আছেই, পাশাপাশি আর একটা বিষয় খেয়াল করি একেক জনের চিন্তার ধরন একেক রকম। কারও সঙ্গে কারও মৌলিক কোনো মিল নেই। অন্যান্য দেশের অভিবাসীরাও ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা করে। কিন্তু তাদের চিন্তায় মিল আছে। যা বাংলাদেশিদের মধ্যে খুঁজে পাই না। আমি বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভৌগোলিক, মানসিক অবস্থান জানতে চেষ্টা করি। এ থেকেই মূলত বাংলাভাষা শেখা এবং বাংলাদেশে যাওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি হয়।

মিকেলা ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সফর করেন। সে অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমার বাংলাদেশ সফরের গোড়াতেই গলদ ছিল। আমার সঙ্গে ইতালি থেকে একজন বাংলাদেশি দোভাষী যাওয়ার কথা ছিল। তার উপর নির্ভর করে যখন বাংলাদেশ সফরের সব ঠিক করি তখন আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। খানিকটা হোঁচট খেলেও আমি দমে যাইনি। বাংলাদেশ সফর বাতিল করিনি।

মিকেলা বলেন, আমি ভালো ইংরেজি জানি, তারপরেও বাংলাদেশে গিয়ে ভাষাগত সমস্যা টের পাই। অনেক কষ্টে দূতাবাসের মাধ্যমে একজন মহিলা অনুবাদকের সন্ধান পাই। কিন্তু তিনি আমাকে ঢাকায় সময় দিতে রাজি হলেও ঢাকার বাইরে যেতে অপারগতা জানান। অগত্যা কী আর করা, আমি একাই রওনা দিলাম শরীয়তপুরের উদ্দেশে। আমি প্রশ্ন করলাম, বাংলাদেশের এত জায়গা রেখে শরীয়তপুর কেন? মিকেলা হেসে উত্তর দেন, কারণ দু’টি। প্রথমত, আমি পড়াশোনা করে জেনেছি, বাংলাদেশ দেখতে হলে, বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি জানতে হলে, মানুষের চিন্তা-চেতনার ধরন বুঝতে হলে মাটির কাছে যেতে হবে, অর্থাৎ গ্রামে যেতে হবে। শহুরে কোলাহলে বাংলাদেশের রূপ-লাবণ্য বোঝা যাবে না। দ্বিতীয় কারণ হলো ভেনিসের বাংলাদেশি কমিউনিটির অধিকাংশ মানুষ শরীয়তপুর থেকে এসেছেন। শরীয়তপুরের অনেকের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে, বন্ধুত্ব আছে। ইতালিতে বসে এত বেশি শরীয়তপুরের গল্প শুনেছি যে শরীয়তপুর বাদ দিয়ে আমি বাংলাদেশ ভাবতেই পারি না।

মিকেলার চোখে-মুখে মুগ্ধতার আলো ঝলমল করছে। তিনি বলতে থাকেন, আমি শুধু শরীয়তপুর দেখিনি, গোটা বাংলাদেশ দেখেছি। বাংলাদেশের রূপ-বৈচিত্রে মুগ্ধ হয়েছি। মানুষ আর প্রকৃতির নিবিড় বন্ধন দেখেছি। মাটি আর মানুষের ভালোবাসা দেখেছি। গ্রাম বাংলার সরল জীবন দেখেছি। বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তা আমি কোনোদিন ভুলতে পারবো না। তারা মানুষকে ভালোবাসতে জানে, বুক পেতে আপন করে নিতে জানে। সেখানে প্রকৃতির মতো উদারতা আছে। নেই কোনো অকৃতিম অভিনয়।

কথার ফাঁকে মিকেলা গেয়ে উঠলেন, ‘ও আমার দেশের মাটি তোমার উপর ঠেকাই মাথা…।’ আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো মিকেলার দিকে তাকিয়ে থাকি। তাঁর চোখের আয়নায় বাংলাদেশকে দেখি। এক সময় আমার দুই চোখ ভিজে যায়। তা দেখে মিকেলা হেসে ফেলে বলেন, তোমরা এত আবেগি কেন? এত আবেগ বুকে নিয়ে তোমরা বাঁচো কি করে? আমি মিকেলার কথার কোনো উত্তর দিতে পারি না। তিনি আমার দিকে একটা বই বাড়িয়ে দেন। বুঝতে পারি, প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে ভারি হয়ে ওঠা পরিবেশ মিকেলা হালকা করতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যাওয়ার আরও একটা কারণ ছিল, ভেনিস বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতিতত্ত্ব বিভাগের জন্য একটি থিসিস লেখা। আমি বাংলাদেশ থেকে ফিরে সে কাজটি করেছি। আমার দেখা এবং অনুভব করা বাংলাদেশের খুঁটিনাটি সব বিষয় নিয়ে একটা প্রবন্ধ লিখেছি। যা বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে।

মিকেলা তার বই সম্পর্কে বলেন, আমি বাংলাদেশের মানুষকে আমার বইতে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি। মিকেলার বইয়ের পাতা উল্টাতে শুরু করি। বাংলাদেশের ইতিহাস, ভৌগলিক অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা, সমাজ-সংস্কৃতি, শরীয়তপুর-নড়িয়ার সব বিষয় তুলে ধরেছেন। বইতে সাধারণ মানুষের কাজ, পর্দা, লজ্জা, বিয়ে, তালাক, যৌতুক, প্রেম-ভালোবাসা, ধর্মচর্চা কি নেই?

মিকেলা বলেন, বাংলাদেশে গিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। মানুষের জীবনের বৈচিত্র দেখেছি। যা কোনোভাবেই বইপত্র পড়ে, ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা সম্ভব নয়। বাংলাদেশে এখনও যৌথ পরিবার আছে, যা আমার খুবই ভালো লেগেছে। কিন্তু সমস্যা হলো অনেক যৌথ পরিবারে একজনের আয়ের উপর ৫/৭ জন নির্ভর করে। একজন প্রবাসীর আয়ের উপর নির্ভর অনেক সংসার  চলে। তারা অপেক্ষা করে থাকে কখন প্রবাসী ছেলে বা স্বামী টাকা পাঠাবে? সেই টাকায় তারা সংসার চালাবে, নিত্য-প্রয়োজন মেটাবে, ছোট-বড় উৎসব করবে, আনন্দ ফূর্তি করবে। যা আমার কাছে সঠিক মনে হয়নি।

মিকেলা বলেন, হয়তো আমার বোঝায় অনেক ভুল থাকতে পারে। কিন্তু আমার কাছে বাস্তবতা এমনই মনে হয়ছে। অনেক অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তাদের ছেলেকে বাড়ি, দোকান, জমি বিক্রি করে, বন্ধক রেখে বিদেশে পাঠিয়েছেন। ছেলে বিদেশে গিয়ে বৈধ হতে পারেনি। ভালো কাজ পায়নি। সংসারের চাহিদা মেটাতে পারছে না। বাবা, মা, স্ত্রীর মুখে হাসি ফোটাতে পারছে না। একদিকে ছেলে বিদেশে কষ্ট করছে, অন্যদিকে বাবা-মা-স্ত্রী সন্তানরা দেশে কষ্ট করছে। অনেক স্ত্রীকে দেখেছি তাদের কষ্টের কোনো সীমা নেই। তারা মুখ ফুটে কাউকে কিছু বলতেও পারে না। স্ত্রী বছরের পর বছর স্বামীকে কাছে পায় না, সন্তান কাছে পায় না তাদের বাবা কে। কেউ কেউ বছরে মাত্র একবার ৩/৪ সপ্তার জন্য তাদের প্রিয় মানুষকে কাছে পান, যাকে কোনো ভাবেই স্বাভাবিক জীবন বলা যায় না।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com