মেহেদীর শুকানোর আগেই লাশ হতে হলো লাবণী দাস নামের এক নববধুকে। নিহতের স্বজনদের দাবি, যৌতুকের দাবিতে শ্বশুর বাড়ির লোকজন ওই নববধুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার নেহালপুর গ্রামে।
ঘটনার পর থেকে ওই গৃহবধুর স্বামী ও শশুর পলাতক রয়েছেন। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে নিহতের স্বজনদের কাছে তা হস্তান্তর করে। নিহত লাবণী দাস মণিরামপুর ডিগ্রি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
বুধবার সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার নেহালপুর গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করে ফাঁড়ি পুলিশ। এসময় লাবণীর বাম হাতের রগ কাটা ছিল।আর মুখের ভেতরে পাওয়া গেছে টিস্যু পেপার।
স্থানীয়রা জানান, গত ১০ আগস্ট সাতক্ষীরার এক তরুণের সঙ্গে লাবণীর বিয়ে ঠিক করেন তার বাবা। কিন্তু বিয়ের আগের রাতে প্রেমিক পরেশ দাসের হাত ধরে পালিয়ে বিয়ে করেন লাবণী।
পরেশ দাস নেহালপুরের গৌর দাসের ছেলে। তিনি যশোর সরকারি এমএম কলেজের মাস্টার্স (বাংলা) শেষ বর্ষের ছাত্র। আর লাবণী দাস একই গ্রামের স্বপন দাসের মেয়ে। তিনি মণিরামপুর কলেজের অনার্স (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার পরেশের মাস্টার্স পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। সেই সুবাদে ঘটনার সময় তিনি যশোরে অবস্থান করছিলেন বলে তার স্বজনরা দাবি করেছে।
লাবণীর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছেন, রাতের খাবার খেয়ে ননদ চায়নাকে সঙ্গে নিয়ে ঘরে ঘুমাতে যান তিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে তারা লাবণীকে ঝুলতে দেখে পুলিশে খবর দেন। তবে, লাবনীর সঙ্গে ঘুমাতে যাওয়া চায়না ঘটনার কিছুই জানে না বলে পুলিশকে জানিয়েছে।
লাবণীর মা লিপিকা দাস বলেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে যৌতুকের দাবিতে শ্বাসরোধে হত্যা করে হাতের রগ কেটে ফেলেছে।এই ঘটনা চাপা দেওয়ার জন্য তারা লাশের গলায় ওড়না জড়িয়ে আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে আতœহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে।
নেহালপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খাইরুল বাসার বলেন, এই ঘটনায় মেয়েটির বাবা থানায় একটি মামলা করেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে লাবণী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত সঠিক ভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।