তার বাড়ি বাংলাদেশে হলে নাম হয়ে যেত ‘প্রেমকুমার’। না, তিনি বাংলাদেশ কিংবা ভারতের মন্ত্রী নন; তার দেশ ইংল্যন্ড। ব্রিটেনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। প্রথম বিয়ে ৬ বছর টিকেছিল। দ্বিতীয় বিয়ে ২৫ বছর ধরে চলছে। কিন্তু ৩ বান্ধবীর সঙ্গে ফস্টিনস্টি আর একজনকে গর্ভবতী করে এবার তার বিয়েই ভেঙে যাওয়ার মুখে। বিবাহবিচ্ছেদের খবর প্রকাশ হতেই নতুন করে প্রধানমন্ত্রীত্বের দাবিদার বরিস জনসন এখন মহাবিপদে পড়ে গেছেন!
গতকাল শনিবার ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট ম্যাচ দেখতে তিনি কেনিংটন ওভালে গিয়েছিলেন। কিন্তু যেই স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় তার মুখ ভেসে উঠল, সারা স্টেডিয়াম তাকে দুয়ো দিতে লাগল। স্ত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করার জন্য ক্ষিপ্ত দর্শকেরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিসের স্ত্রী মারিনা হুইলার আবার ভারতীয় বংশদ্ভুত। মারিনার বাবা পাঞ্জাবী। নিজেকে ভারতের জামাই বলতেও পছন্দ করতেন বরিস।
কিন্তু বান্ধবীর সঙ্গে তার বিবাহিত জীবনই ভেঙে গেল। গত ভ্যালেন্টাইন ডেতেই বরিসকে একটি রেস্টুরেন্টে দেখা গিয়েছিল তার নিজের দলেরই এক নারীর সঙ্গে। সেই নারীর সঙ্গে প্রেমই তার বিয়ে ভেঙে দিল বলে মনে করছেন অনেকেই। আরও যে দুজন নারীর সঙ্গে বরিসের সম্পর্ক ছিল, তারা ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সঙ্গে কাজ করতেন। তৃতীয় নারী কাজ করতেন ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনের সঙ্গে।
২০০৪ সালেই বরিসের প্রথম বিবাহ-বহির্ভূত প্রেমের সম্পর্কের কথা সামনে আসে। এক কলমচি পেট্রোনেলা ওয়াটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল তার। পেট্রোনেলার মা দাবি করেছিলেন তার মেয়েকে বরিস গর্ভবতী করেছিলেন। পরে পেট্রোনেলাকে গর্ভপাত করাতে হয়।বরিসও একথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। তাকে দলের পদও হারাতে হয়েছিল।
কিন্তু ২০০৬ সালে যখন দ্বিতীয় বান্ধবী আন্না ফাজাকারলির সঙ্গে বরিসের সম্পর্কের কথা সামনে আসে, তখন অবশ্য বরিসকে বরখাস্ত করেননি তৎকালীন টোরি নেতা ডেভিড ক্যামেরন। তিনি বলেছিলেন, এটা বরিসের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
২০০৯ সালে বরিস এক শিল্প পরামর্শদাতা হেলেন ম্যাসিনটায়ারকে গর্ভবতী করেছিলেন বলে খবর প্রকাশ্যে আসে। সেই বাচ্চার বাবা কে তা না প্রকাশ করার জন্য বরিস হাইকোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন।
কিন্তু এত কিছু করেও ছোটবেলার বন্ধু মারিয়ার সঙ্গে বরিসের বিয়ে টিকে ছিল। মারিয়া নিজে একজন মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী। তাদের চার সন্তানও রয়েছে। মারিনা ও বরিসের বিবাহ বিচ্ছেদের খবর শুক্রবারই প্রকাশ্যে এনেছেন তারা নিজেই। সাবেক মন্ত্রী নাকি খোরপোষের দেওয়ার হাত থেকে বাঁচতে আইনি লড়াইয়ের পরিকল্পনা করছেন এখন। ক্রিকেট খেলা দেখতে এসেও যে দুয়ো শুনতে হবে সেটা কি ভেবেছিলেন বরিস?