চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী নতুন রাস্তার মাথায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে যাত্রীবাহী বাস ও যাত্রীবাহী পিকআপ ভ্যানের (স্থানীয় ভাষায় ছারপোকা) মুখোমুখি সংঘর্ষে একসঙ্গে ঝরে গেছে ছয়টি তাজা প্রাণ। নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী।
দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই বাসের অন্তত নারী-শিশুসহ ১০ জন। এদের মধ্যে তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ হতাহতদের উদ্ধার এবং দুর্ঘটনাকবলিত বাস দুটি জব্দ করেছে।
নিহত ছয়জনের মধ্যে তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরা হলেন পিকআপ ভ্যানের চালক চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর স্টেশন এলাকার আহমদ হোসেনের ছেলে খাইর আহমদ (৩৬), চকরিয়ার হারবাং ইউনিয়নের লালব্রিজ এলাকার মনজুর আলমের ছেলে জহির আহমদ (৩২) ও একই ইউনিয়নের পাহাড়তলী পাড়ার সাইদুল আলমের ছেলে আবুল কাশেম (২৭)।
মহাসড়কের বানিয়ারছড়াস্থ চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ (আইসি) নূর-এ আলম পলাশ কালের কণ্ঠকে বলেন, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় তিনজন নারী ও তিনজন পুরুষ নিহত হয়েছেন। নিহত ছয়জনের মধ্যে একজন পিকআপ ভ্যানের চালক এবং অন্য পাঁচজন ওই যানের যাত্রী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কক্সবাজারমুখী স্টার লাইন পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-০৬৩৮) একটি যাত্রীবাহী বাস চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার বরইতলী ইউনিয়নের নতুন রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা চট্টগ্রামের লোহাগাড়ামুখী একটি যাত্রীবাহী পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। মুমূর্ষু অবস্থায় আরও কয়েকজনকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পৌর শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় সেখানে আরও পাঁচজনকে মৃত ঘোষণা করেন সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ ছাড়া আহতদের মধ্যে তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চকরিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা জি এম মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, যাত্রীবাহী বাস ও যাত্রীবাহী পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে কয়েকজন যাত্রী গাড়ির ভেতরেই আটকা পড়ে। এ সময় বিশেষ কৌশলে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ছয়জনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া দুই বাসের অন্তত ১০ যাত্রী আহত হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বেলা দেড়টার দিকে চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের এসআই নাছির উদ্দিন এই দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে পুরুষ তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকি তিনজন নারীর পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দুর্ঘটনাকবলিত যাত্রীবাহী বাস দুটি মহাসড়ক থেকে ক্রেন দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার প্রায় আধঘণ্টা পর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।