চাকরি না পাওয়ার হতাশা থেকে সুইসাইড নোট লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজির ছাত্র সৈকত রঞ্জন মণ্ডল। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুবি’র খাজা গেটের পূর্বদিকের ইসলামনগর জামে মসজিদ গলির ডান হাতের একটি দোতলা ভবনের মেসের রুম থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সৈকতের পিতার নাম কৃষ্ণ মণ্ডল, মায়ের নাম রানী মণ্ডল। গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার রমজান নগর ইউনিয়নে।
পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, সৈকতের পাশের দালানের প্রতিবেশী তার জানালা দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে একজনকে ঝুলতে দেখেন। তিনি বিষয়টি জানালে সৈকতের রুমমেট, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে সৈকতকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া পায়। পরে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ডায়েরির সুইসাইড নোট থেকে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আরো দু’বছর আগে পোস্ট গ্রাজুয়েশন শেষ করলেও চাকরি না পাওয়ার হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করেছেন সৈকত।তার রুমে বিসিএস প্রস্তুতির বিভিন্ন বই পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, সৈকত দু’বার বিসিএস পরীক্ষা দিয়েও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তার টেবিলের ড্রয়ার থেকে পাওয়া প্রেসক্রিপশন থেকে জানা যায়, সমপ্রতি হতাশা থেকে বাঁচতে ডাক্তারের শরণাপন্নও হয়েছিলেন।
সমপ্রতি সৈকত নিজের ব্যক্তিগত ডায়েরিতে হতাশার কথা লেখা শুরু করেন। তার রুম থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরির একটি পাতায় লেখা রয়েছে- ‘অনেক স্বপ্ন ছিল চাকরি করবো, মা’র মুখে হাসি ফোটাবো। কিন্তু সব এলোমেলো হয়ে গেল। মা’র শরীর খুব খারাপ। তবুও আমি খুলনায় থেকে পড়ার কথা ভাবছি। বাড়িতে যেতে গেলে সবকিছু নিয়ে যেতে হবে। তাছাড়া আর কোনো উপায় নেই। না আছে টিউশনি, যার উপর নির্ভর করে খুলনায় চলছিলাম।
কোনো চাকরিতেও ভয় পাচ্ছি। আজ এত কঠিন অবস্থা তৈরি হয়ে গেল। আমি শুধু বন্ধুদের কে কি করছে সেইদিকে খেয়াল করে চলছি। আমরা এক মেসে চার বন্ধু থাকতাম। এর মধ্যে আমার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছে। অন্য তিনজন চাকরি পেয়েছে। আসলে প্রত্যেকটি কাজ করতে করতে সেটা ছেড়ে দিয়ে ইঈঝ এর দিকে যাওয়ায় হঠাৎ চাপ বেড়ে যায়। সে জন্য আমি আরো অনহড়ৎসধষ ইবযধারড়ঁৎ প্রদর্শন করছি। প্রজেক্টের কাজে চাপ থাকায় শরীরটা গড়তে পারিনি। সে জন্য অতিরিক্ত চাপ সহ্য হয়নি।’
হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির খান বলেন, সৈকতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে