আসাদুজ্জামান সম্রাট : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জানানো হয়েছে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মূল এলাকার বাইরের উত্তরাংশে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। সরকারের এ উদ্যোগকে সমর্থন জুগিয়েছে সংসদীয় কমিটিও।
সংসদীয় কমিটিতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বড়পুকুরিয়ার সেন্ট্রাল মাইনিং এলাকা সংলগ্ন উত্তরাংশে ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হওয়ার বিষয়টি বর্তমান খনন ঠিকাদার এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম বিসিএমসিএলকে অবহিত করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিসিএমসিএল কর্তৃক বড়পুকুরিয়ার উত্তরাংশের প্রায় ১ দশমিক ৫ বর্গ কি.মি. এলাকায় এবং দক্ষিণের ৩ বর্গ কি.মি. এলাকায় একটি ফিজিবিলিটি সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে।
সমীক্ষা প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, বড়পুকুরিয়া সেন্ট্রাল মাইনিং এলাকা বহির্ভূত উত্তরাংশে দেড় কি.মি এলাকায় ভূগর্ভস্থ রুম অ্যান্ড পিলার মাইনিং পদ্ধতি অবলম্বনে প্রায় ৯২ মিলিয়ন টন ভূতাত্ত্বিক মজুদরত কয়লার মধ্যে মাত্র ৩ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব। ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রতিবেদন অনুযায়ী সেন্ট্রাল মাইনিং এলাকার দক্ষিণাংশে আন্ডারগ্রাউন্ড লংওয়াল মাইনিং পদ্ধতি অবলম্বনে ভূতাত্ত্বিকভাবে মজুদররত ৬২ মিলিয়ন টন কয়লার মধ্যে প্রায় ১০ দশমিক ১৪ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন সম্ভব হবে। এছাড়া বড়পুকুরিয়ারে সেন্ট্রাল মাইনিং এলাকা বহির্ভূত উত্তরাংশে ওপেন পিট মাইনিং পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের বিষয়ে সম্ভাব্যতা যচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতির সভাপতি তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বড়পুকুরিয়া দেশের অর্থনীতির চেহারা বদলে দিতে পারে। এখানে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তেলনের বিষয়ে পরীক্ষা করা যেতে পারে। ফুলবাড়িয়াতে উন্মুক্ত পদ্ধতির খনন করার বিষয়ে বলা যাবে না। কারণ ওখানে ওয়াটার বডি আছে। এই ওয়াটার বডির ক্ষতি হলে মাটি শুষ্ক হয়ে যাবে।
বৈঠকে জানানো হয় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে। বিদ্যমান চুক্তির আওতায় ২০২১ সাল পর্যন্ত এখান থেকে ৩ দশমিক ২০৫ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন সম্ভব হবে। এর পর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উত্তর অংশে দেড় বর্গ কি.মি. এবং দক্ষিণে ৩ কি.মি. মজুদ এলাকা হতে কয়লা উত্তোলনের মাধ্যেম চাহিদা পূরণের উদ্যোগ নেয়া হবে। বৈঠকে আরো জানানো হয়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি সন্তোষজনক এবং এটি আগামী বছর থেকে উৎপাদনে যেতে পারবে।
কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য হুইপ মো. আতিউর রহমান আতিক এম এ লতিফ বৈঠকে অংশ নেন।