1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
শিশুর নৈতিকতা গঠনে পারিবারিক শিক্ষা ও পর্দা অনুশীলনের গুরুত পর্ব- ০৪ - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেলের জয়লাভ গোবিন্দগঞ্জে অটোচালক দুলা হত্যার মূল আসামি আটক চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু পলাশবাড়ীতে উপজেলা নির্বাচনে অনলাইন মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেই বিএনপি বলে বিরোধীদল দমন’ এবার বুবলী-শাকিবের ‘কোয়ালিটি টাইম’ নিয়ে মুখ খুললেন অপু বাংলাদেশের সফলতা চোখে পড়ার মতো: সিপিডির রেহমান সোবহান চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে যা বললেন নিপুণ তালিকা দিতে না পারলে ফখরুলকে ক্ষমা চাইতে বললেন ওবায়দুল কাদের প্রকাশিত হলো দিদারের ‘বৈশাখ এলো রে এলো বৈশাখ’ আ.লীগের মতো ককটেল পার্টিতে বিশ্বাসী নয় বিএনপি: রিজভী হৃদয় খানের সঙ্গে জুটি ন্যান্সিকন্যা রোদেলার শাকিব ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পুরুষকে ভাবতে পারি না: বুবলী শাকিবের এমন সময় আমাদেরও ছিল: ওমর সানী কত টাকা সালামি পেলেন জায়েদ খান, দিতে হলো কত লাখ?

শিশুর নৈতিকতা গঠনে পারিবারিক শিক্ষা ও পর্দা অনুশীলনের গুরুত পর্ব- ০৪

  • Update Time : রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
  • ৩১৯ Time View

নারীর পর্দার কতিপয় দিক:
একজন মুসলিম নারী পর্দার বিধান মেনে চলতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলবেন। না হয় তার পর্দার বিধান পুরোপুরি মেনে চলা হবে না। আল্লাহর বিধান পরিপূর্ণভাবে না মানলে দুনিয়াবী ফিতনা ফাসাদ থেকে মুক্ত থাকাও সম্ভব নয়।

১. সতর ঢাকা:
নারীর দেহ আবৃত করে রাখাই পর্দার উদ্দেশ্য। কোনোভাবেই নারীদেহ প্রদর্শন করা যাবে না। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষ প্রয়োজনে তার শরীর থেকে এমন কিছু অংশ সতরের বহির্ভুত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে, যা প্রকাশ না করলেই নয়। এ মর্মে কুরআনে বলা হয়েছে, “তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষদেশে ফেলে রাখে।” [সূরা আন-নূর,আয়াত: ৩১]

এখানে যা সাধারণত প্রকাশমান দ্বারা অধিকাংশ শরী‘আহ বিশেষজ্ঞের মতে, হাতের তালু এবং বহিরাবরণকে বোঝানো হয়েছে। এগুলো সে আজনবীদের সামনে প্রকাশ করতে পারবে।

২. পরপুরুষের সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ না করা:
পরপুরুষের সামনে কোনো মুসলিম নারী তার সৌন্দর্য প্রকাশ করবে না। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, “তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষদেশে ফেলে রাখে।” [সূরা আন-নূর,আয়াত: ৩১]

শুধু দৈহিক সৌন্দর্য প্রদর্শন থেকে বিরত থাকলেই চলবে না বরং কণ্ঠের সৌন্দর্যকেও পরপুরুষ থেকে দূরে রাখতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “যদি তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে করা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। তোমরা সঙ্গত কর্থাবার্তা বলবে।” [সূরা আল-আহযাব,আয়াত: ৩২]

নারীদেরকে আল্লাহ তা‘আলা নীরবে পথ চলতে বলেছেন, যাতে দুষ্ট লোকেরা তাদের পায়ের আওয়াজ শুনে ব্যাকুল হয়ে না ওঠে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “তারা যেন পদযুগল এমনভাবে স্থাপন করে, যাতে তাদের গোপন সৌন্দর্য টের পাওয়া যায়।” [সূরা আন-নুর,আয়াত: ৩১]

বর্তমানে অধিকাংশ নারীগণ রাস্তায় বের হলে তাদের রূপ-সৌন্দর্যকে মানুষের সামনে তুলে ধরতে প্রায় মরিয়া। নানা ধরনের পারফিউম, সাজগোজ, পায়ে ঝুমকা, বাহারি ডিজাইনের পোশাক পরিধান করে তারা একদিকে যেমন আল্লাহর বিধানকে লঙ্ঘন করছে, পাশাপাশি পুরুষদের যৌন ক্ষুধা বাড়িয়ে দিয়ে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনছে।

বর্তমানে বোরকাও ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। নানা ডিজাইনের বোরকা আধুনিক নারীদের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলছে। বোরকা যদি পর্যার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন না করতে পারে তাহলে তার পরিধান করা অর্থহীন। আমাদের মা বোনদের বোরকা এমন হওয়া উচিত, যা তাদের সৌন্দর্যকে আবৃত করবে। বোরকার সৌন্দর্য যেন পুরুষদের আকর্ষণ না করে।

৩. নর-নারীর নির্জন সাক্ষাৎ বর্জন:
ইসলামে নর-নারীর নির্জন সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ। এটি অত্যন্ত ভয়ানক। নারী-পুরুষের নির্জনে সাক্ষাৎ কিংবা গোপন সম্পর্ক, যখন উভয়ের মধ্যে কোনো পর্দা বা আড়ালও থাকে না। এরূপ পরিস্থিতিতে এমন কোনো বাহ্যিক চাপ থাকে না, যা মানুষকে আবেগ উত্তেজনার কাছে পরাভূত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। নর-নারীর সম্পর্ক ইসলামের দৃষ্টিতে নিছক দৈহিক লালসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর উপর আবর্তিত হয় অনেক দায়-দায়িত্ব। তাই এ সম্পর্কের সাথে সামাজিক বন্ধন ও স্বীকৃতি থাকা অত্যাবশ্যক, যেন এই দায়-দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সমাজ ব্যক্তির সাহায্যে এগিয়ে আসে। আর যদি ব্যক্তি তা পালন করতে অবহেলা করে বা পাশ কাটিয়ে যেতে চায় তাহলে তাকে জবাবদিহির জন্য পাকড়াও করতে পারে। এই বন্ধন বা বাধ্য-বাধকতাই তার বিপথগামিতার পথে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। ফলে নর-নারী কারো অধিকার বিনষ্ট হওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। মানুষের এই দুর্বলতার কথা বিবেচনা করে বেগানা নারী-পুরুষের নির্জন দেখা সাক্ষাৎ ইসলাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছে।[30]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমাদের কেউ যেন কোনো বেগানা নারীর সাথে একান্তে সাক্ষাৎ না করে, তবে তার সাথে তার কোনো মাহরাম পুরুষ আত্মীয় থাকলে ভিন্ন কথা।” [31]

অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নর-নারীর নির্জন আড্ডা থেকে সর্তক করে বলেন, “একান্ত নির্জনে বেগানা নর-নারী যখন কথাবার্তা বলে, শয়তান তখন তাদের মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে যায়।” [32]

আল্লাহ তা‘আলা বরেন, “মেয়েরা গোপনে বা চুপিসারে বন্ধুত্ব করবে না।” [সূরা আন-নিসা,আয়াত: ২৫]

অনুরূপ ছেলেদেরকে বলা হয়েছে, “পুরুষেরাও গোপনে বা চুপিসারে বন্ধুত্ব করবে না।” [সূরা আল-মায়েদা,আয়াত: ৫]

৪. পুরুষদের মতো পোশাক পরিধান না করা:
নারীদের জন্য পুরুষের পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামসে সকল নারীদের অভিসম্পাত করেছেন, যারা পুরুষের পোশাক পরিধান করে। হাদীসে এসেছে, “রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের অনুকরণকারী পুরুষদের এবং পুরুষদের অনুকরণকারী নারীদের অভিসম্পাত করেছেন।”[33]

৫. পাতলা স্কিন টাইট কিংবা পুরো দেহ আবৃত করে না এমন পোশাক পরিধান:
আবু হোরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “জাহান্নামীদের এমন দুটি দল রয়েছে, যাদের আমি দেখিনি। তাদের এক দলের হাতে গরুর লেজের মতো চাবুক থাকবে, যা দিয়ে তারা লোকদেরকে মারবে। আর একদল নারীদেরকে। তারা পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করা সত্ত্বেও উলঙ্গ, বিচুৎতকারিণী ও স্বয়ং বিচ্যুত। বুখতী উটের উচু কুঁজের মতো তাদের চুলের খোপা। এসব নারী কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধি অনেক অনেক দূর থেকে পাওয়া যাবে।” [34]

ইসলাম নগ্নতা, বেহায়াপনা, নির্লজ্জ চালচলন নিষিদ্ধ করে অবাধ যৌনচর্চার দুয়ার বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ, অবাধ যৌনচর্চা মানবতার মহাসর্বনাশ সাধন করতে পারে। এর ফলে যুবশক্তির ধ্বংস সাধনসহ মারাত্মক যৌনব্যাধি, শারীরিক শক্তি নাশ, পারিবারিক শৃঙ্খলার বিলোপ, বেশ্যাবৃত্তির প্রসার, ইভটিজিং ও নানা প্রকার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। আজকের বাংলাদেশের সামাজিক অবস্থা যার বাস্তব প্রমাণ।[35]

৬. নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা বর্জন:
মানুষ পাপের আস্তানার পাশ দিয়ে দৃষ্টি অবনত করে অতিক্রম করতে পারে। কিন্তু যেখানে গোটা সমাজকে ব্যভিচারের আঁখড়ায় পরিণত করা হয়েছে, সেখানে যে কোথায় গিয়ে পালিয়ে আত্মরক্ষা করবে? নিজের নৈতিকতা ও কর্মের পরিমার্জনের জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে? বর্তমানে অবস্থা এই যে, কোনো ব্যক্তি সে বাজারের দোকানদার হোক কিংবা কারখানার শ্রমিক, কলেজের ছাত্র হোক কিংবা অফিসের কেরানি, সে কোনো হোটেলে বসে থাকুক বা পার্কে ভ্রমণরত হোক-প্রতিটি স্থানেই বিপরীত লিঙ্গ তার সামনে পাপের পয়গাম নিয়ে হাজির আছে। জীবনের এমন কোনো অঙ্গন নেই, বর্তমান সভ্যতা যেখানে নারী ও পুরুষের একসাথে কাজ-কর্ম অনিবার্য করে দেয়নি। শুধু তাই নয়; বরং এই একত্রে মেলামেশাকে এতটা বৈচিত্র্যময় ও আকর্ষণীয় করে দিয়েছে যে, সমাজের ওপরে যৌন ক্ষুধা ও যৌন উপবাসের মতো পরিস্থিতি ছেয়ে আছে। মনে হয়, যেন যৌনতা সর্বত্র ভিক্ষাপাত্র হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নারী ও পুরুষের অভাদ মেলামেশা যতদিন উচ্ছেদ না করা যাবে, ততদিন এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি লাভ করা যাবে না।

ইসলাম সব সময় নারী ও পুরুষের কর্মক্ষেত্র পুরোপুরি আলাদা করে রাখে। তাই ইসলামের নীতিমালার ওপর প্রতিষ্ঠিত সমাজে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেলার সুযোগ নিতান্ত কম। কোনো সময় নারী ও পুরুষের একই গন্ডির মধ্যে কাজ করার প্রয়োজন হলেও ইসলাম তাদের পরস্পর মেলামেশা থেকে দূরে থাকতে কঠোরভাবে নির্দেশ দেয়। [36]

একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামনারী ও পুরুষদের পারস্পরিক মিশে যেতে দেখে নারীদের বললেন, “পেছনে চলে যাও। রাস্তার মাঝখান দিয়ে তোমাদের চলা উচিত নয়। তোমাদের রাস্তার একপাশ দিয়ে চলা উচিত।” [37]

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকোনো পুরুষকে দুইজন স্ত্রীলোকের মাঝ দিয়ে চলতে নিষেধ করেছেন।[38]

উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেন, “নারীদের সাথে অবাধে মেলামেশা থেকে সাবধান হও। একজন আনসারী বললেন, দেবরের সাথে মেলামেশার ব্যাপারে আপনার মতামত কী? তিনি বললেন, দেবর তো সাক্ষাৎ মৃত্যু” [39] (অর্থাৎ মৃত্যু যেমন দেহে পচন ধরায়, দেবরের কারণে দাম্পত্যজীবনে তেমিন পচন ধরতে পারে)।

পুরুষের পর্দা:
নারীর পর্দার পাশাপাশি পুরুষের পর্দা করাও ফরয। পবিত্র কুরআনের পর্দার বিধান সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সূরা আন-নূরের আয়াত দুটিতে প্রথমেই পুরুষদের পর্দার বিষয়ে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, “মুমিনদেরকে বলনু, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।” [সূরা আন-নূর,আয়াত: ৩০]

সুতরাং যেসব বস্তু মানবহৃদয়কে আল্লাহর স্মরণবিমুখ করে দেয়কিংবা যে দিকে তাকাতে শরী‘আতে নিষেধাজ্ঞা উচ্চারিত হয়েছে, সে দিক থেকে দৃষ্টিকে বিরত রাখতে হবে। যেমন ঘরে বইরে, রাস্তা ঘাটে পরনারী ও আজনবী মহিলা, টেলিভিশন কিংবা সিডি ভিডিও-র নাটক, ছায়াছবির অশ্লীল দৃশ্যাবলী কিংবা দেয়াল পোস্টারের অশালীন ছবি ইত্যাদি। মূলতঃ অসংঘত দৃষ্টির কুপ্রভাব শুধু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মন-মানসকেই কলুষিত করে না; বরং তা তার গোটা দেহের সমস্ত কর্মকান্ডে সংক্রমিত হয়ে ক্রামন্বয়ে ব্যক্তি পর্যায় অতিক্রম করে এক সময় তা সমূহবিপদ নিয়ে জাতীয় অস্তিত্ববিনাশী অশনি সংকেত হয়ে দাঁড়ায়।

আকাশ সংস্কৃতি, পাশ্চাত্য থেকে আসা অশ্লীল ছবির কুপ্রভাবে আমাদের যুব সমাজের মধ্যে বর্তমানে নৈতিক অবক্ষয়ের যে ধস নেমেছে, তা এই নির্মম সত্যেরই কিছু বাস্তবতা। এই অপসংস্কৃতির করাল গ্রাস রোধ করতে যদি আমরা অক্ষমতার পরিচয় দেই তাহলে আগামী দিনে ইসলামী আদর্শ-ঐতিহ্য নিয়ে আমাদের জাতীয় স্বকীয়তা সংরক্ষণ করা কিছুতেই সম্ভব হবে না। আর এ কথা স্বতঃসিদ্ধ যে, আনতনয়ন বিশিষ্ট হওয়াই নিষিদ্ধ দৃষ্টি থেকে আত্মরক্ষার ও দৃষ্টির পবিত্রতা বিধানের প্রকৃষ্ট পদ্ধতি-কৌশল। স্বয়ং চক্ষুদাতা মহান আল্লাহ তা‘আলাই আমাদের এ শিক্ষা দিয়েছেন।

দৃষ্টির অবাধ বিচরণের নাম স্বাধীনতা নয়। যেমন অনেক নির্বোধ মুর্খ ধারণা করে থাকে; বরং তা হচ্ছে কুপ্রবৃত্তির কাছে নিজের পরাধীনতার বহিঃপ্রকাশ। একটি ক্ষুধার্ত সিংহকে লোকালয়ে ছেড়ে দিলে সে যতটা হত্যাযজ্ঞ চালাতে পারে, অনিয়ন্ত্রিত কুপ্রবৃত্তির ধ্বংসযজ্ঞ তার চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। কু-রিপুর পূজারীরা মূলত যালিম ও সীমালঙ্ঘণকারী। ইসলামের দৃষ্টিতে, মানুষ তো তখনই স্বাধীন হতে পারে, যখন সে কুপ্রবৃত্তির দাসত্ব থেকে মুক্তি লাভ করে।[40] এজন্যই কুরআনুল কারীমে কুপ্রবৃত্তি পূজাকারীদেরকে চরম ধিক্কার দেওয়া হয়েছে, “অবশ্য আমরা ইচ্ছা করলে তার মর্যাদা বাড়িয়ে দিতাম সে সকল নিদর্শনসমূহের বদৌলতে; কিন্তু সে যে অধ:পতিত এবং নিজের রিপুর অনুগামী হয়ে রইল। সুতরাং আর অবস্থা হলো কুকুরের মতো; যদি তাকে তাড়া কর তবুও হাঁপাবে আর যদি ছেড়ে দাও তবুও হাঁপাবে।” [সূরা আল-আ‘রাফ,আয়াত: ১৭৬]

অতএব, সুস্থ সমাজ গঠন করতে নর-নারীর চোখের পর্দার কোনো বিকল্প নেই। চোখের পর্দাই পারে ইভটিজিং থেকে আমাদের মা-বোনদের রক্ষা করতে।

উপসংহার
ইসলাম যে সকল অশান্তি, অন্যায়-অনাচার ও অপরাধকে দুর করে শাস্তি ও সুখী সমাজ গঠন করতে পারে তা প্রমাণিত। চৌদ্দ শত বছর পূর্বে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরবের জাহেলী সমাজকে পরিণত করেছিলেন সোনার সমাজে। সমাজ থেকে সকল অপরাধ বিতাড়িত করতে হলে পারিবারিক শিক্ষা ও পর্দা অনুশীলনের বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে ইসলামের দিক নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।আল্লাহ আমাদের সকলকে ইসলামের নির্দেশিত পথে চলার তাওফীক দিন। আমীন।

সমাপ্ত
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৩১৯, খন্ড ১, পৃ. ৪৬৫।
[2] সুনানুত তিরমিযী, হাদীস নং-২০৭৯।
[3]মাজ্জাল্লাতুল বুহুস আল ইসলামিয়্যাহ, খন্ড, ২১, পৃ. ৪৫২।
[4] বুখারী, কিতাবুল আদব, বাবু রাহমাতিন ওয়ালাদ, হাদীস নং-৫৯৯৭।
[5]বুখারী, কিতাবুল জানায়েয, হাদীস নং-১৩০৩।
[6]বায়হাকী, ওয়াবুল ঈমান ৮৬৪৯।
[7] . সুনানু আবিদ দাউদ, কিতাবুল সালাত, হাদীস নং-৪৯৫।
[8]জালালুদ্দীন সুয়ুতী, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-৯৬১।
[9] আব্দুল্লাহ নাসির ওলওয়ান, তারবিয়াতুল আওলাদ ফিল ইসলাম, প্রথম খন্ড, পৃ. ৩১৮।
[10] প্রাগুক্ত, পৃ. ১৫০।
[11] ইসলামের দৃষ্টিতে সন্তাস কারণ ও প্রতিকার, প্রাগুক্ত, পৃ. ২০৯।
[12]সুনানুত তিরমিযী, হাদীস নং-২০৭৯।
[13]সুনানু ইবনি মাজাহ, হাদীস নং-৩৮০২।
[14] মাজমাউয যাওযায়েদ, হাদীস নং-১২৮২৯।
[15] সুনানুত তিরমিযী, হাদীস নং-২০৭৮।
[16] সুনানুত তিরমিযী, হাদীস নং-২০৭৬।
[17] সহীহ আল-বুখারী, হাদীস নং-২৪৬৫, খণ্ড, ৯, পৃ. ১৩৯।
[18] . মসনদে আহমদ, হাদীস নং-২২১০৪।
[19] সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৬০।
[20]সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬৭০৮।
[21] সুনানুত তিরমিযী, হাদীস নং-২৬০১।
[22]সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩৮৬।
[23] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৭৫১।
[24]সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪৯৩।
[25]সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৪৮৩।
[26] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬১১৭।
[27]সুনানুত তিরমিযী, হাদীস নং ২০৪৩।
[28] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০৩৫।
[29]সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৫৩৪।
[30] ড. বি.এম. মফিজুর রহমান আল আযহারী, ইসলামের দৃষ্টিতে সন্ত্রাস ককারণ ও প্রতিকার (চট্টগ্রাম-ইউনিক লাইব্রেরী, প্রথম প্রকাশ, ২০০৬ ইং), পৃ. ২২৯।
[31]সহীহ বুখারী, কিতাবুন নিকাহ, হাদীস নং-৫২৩৩।
[32] সূনানুত তিরমিযী, কিতাবুর রিদা‘, হাদীস নং-১২০৪।
[33] সহীহ বুখারী, কিতাবুল লিবাস, হাদীস নং ৫৮৮৫।
[34] সহীহ মুসলিম, কিতাবুল লিবাস, হাদীস নং ৫৭০৪।
[35] ইসলামের দৃষ্টিতে সন্ত্রাস কারণ ও প্রতিকার, প্রাগুক্ত, পৃ. ২৩৭।
[36] প্রাগুক্ত, পৃ. ২৩০।
[37] সুনানু আবি দাউদ, আবওয়াবুস সালাম, হাদীস নং-৫৩৭৪।
[38] প্রাগুক্ত, হাদীস নং ৫২৭৫।
[39]সুনানুত তিরমিযী, কিতাবুর রিদা‘, হাদীস নং-১২০৪।
[40] ইসলামের দৃষ্টিতে সন্ত্রাস কারণ ও প্রতিকার, প্রাগুক্ত, পৃ. ২২২।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com