রাজধানীতে রাতের অন্ধকারে গরু হয়ে যাচ্ছে মহিষ আর খাসি হয়ে যাচ্ছে ছাগল। অতি মুনাফার লোভে এমন প্রতারণা করছেন মাংস ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্ট মালিকরা। তেহারি, কাচ্চি বিরিয়ানী বা ভুনা খিচুড়িতে মহিষ বা ছাগলের মাংস দিয়ে তা গরু-খাসি হিসেবে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে।
এমন কারসাজিকে ক্রেতাদের সঙ্গে চরম প্রতারণা বলছেন ভূক্তভোগীরা। রাজধানীতে পশুর মাংস নিয়ে এভাবে চলছে প্রতারণা।
পুরান ঢাকার কেল্লার মোড় কাঁচাবাজার। এখানে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭টি মহিষ জবাই করা হয়। অথচ এই মাংস খুচরা বিক্রি হয় অতি সামান্যই। বরং নির্দিষ্ট অর্ডারের ক্রেতাদের কাছেই পৌঁছে যায় বেশিরভাগ মহিষের মাংস।
রাজধানীর নামি-দামি রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে ছোট তেহারির দোকানে এসব মহিষের মাংস ব্যবহার হয় বলে জানান মাংস ব্যবসায়ীরা।
তবে মাংস নিয়ে এমন প্রতারণার অভিযোগ প্রথমত মানতে চান না রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা। পরে মহিষের মাংসের বিভিন্ন ভালো দিক তুলে ধরা হলে বেরিয়ে আসে সত্যতা।
তাছাড়া রেস্টুরেন্টগুলোতে গরু, খাসি ও মুরগির মাংসের তালিকা দেয়া থাকলেও মহিষ কিংবা ছাগির মাংসের কোনও তালিকাই নেই। তাই এটাকে চরম প্রতারণা হিসেবেই দেখছেন ক্রেতারা।
ক্রেতারা বলছেন, এটা আমাদের সঙ্গে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের প্রতারণা। আমরা না জেনে প্রতিনিয়ত তাদের কাছ থেকে ঠকছি। গরু মনে করে মহিষ খাচ্ছি। এটা আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে।
রান্নার পর গরু-মহিষ কিংবা ছাগী ও খাসির মাংস আলাদা করার সুযোগ না থাকায় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া কঠিন বলে জানান উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, রান্নার পর কিন্তু গরু, মহিষ বা খাসি কিনা তা আর বোঝার উপায় থাকে না। গরুকে গরু, মহিষকে মহিষ বা ছাগিকে ছাগির মাংস বলায় শ্রেয়। এগুলো বললেও তো মানুষ। কারণ এগুলো তো অখাদ্য না। তবে যিনি মহিষ খান না, তাকে গরুর নামে মহিষ খাওয়ানো প্রতারণা ছাড়া কিছু না।
তবে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।