সংসদে পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে আগামী ২৮ ও ২৯ অক্টোবর সারাদেশে পূর্বনির্ধারিত কর্মবিরতি পালন করবে পরিবহন শ্রমিকরা। যদি এর মধ্যে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর শ্রমিক স্বার্থবিরোধী ধারা সংশোধন না করা হয় তাহলে ৩০ অক্টোবর থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট পালন করার হুশিয়ারি দিয়েছেন সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু। এসময় তিনি ট্রাক চালক সোহেল হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি করে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে আট দফা দাবি ঘোষণাও দেন।
শ্রমিকদের ৮ দফা দাবিগুলো হলো- সড়ক দুর্ঘটনায় সব মামলা জামিনযোগ্য করতে হবে। শ্রমিকদের অর্থদণ্ড ৫ লাখ টাকা প্রত্যাহার। সড়ক দুর্ঘটনার তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা ৫ম শ্রেণি করতে হবে। ওয়েস্কেলে জরিমানা কমানো ও শাস্তি বাতিল। সড়কে পুলিশি হয়রানি বন্ধ। গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের সময় শ্রমিকের নিয়োগপত্রে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরের ব্যবস্থা রাখতে হবে ও সব জেলায় শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের পর লাইসেন্স ইস্যু এবং লাইসেন্স ইস্যুর সময় হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
এর আগে দুপুর ২টার পর থেকেই সারাদেশ থেকে আসা পরিবহন শ্রমিক নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে একে একে জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে পল্টন থেকে শাহবাগের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শ্রমিক নেতাদের দাবি, সম্প্রতি সংসদে ৫ বছর জেল ও মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যে আইন পাস হয়েছে তা বাতিল করতে হবে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী এ আইন বাতিলে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
বক্তারা বলেন, ‘সারাদেশে কিছু নেতার কারণে সরকারের ক্ষতি হচ্ছে। হঠাৎ করে পোস্তগোলা ব্রিজে টোলের হার ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৪০ টাকা করা হয়েছে। তার প্রতিবাদ করতে গেলে পুলিশ গুলি করে মেরেছে আমাদের এক ট্রাক চালক ভাইকে। আরো অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন।’
এর আগে গত ৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ ৭ দফা দাবিতে পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘট শুরু হয়েছিলো। সে সময় (৯ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছিলো ট্রাক পরিবহন শ্রমিকরা।