মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের জামাতা ও বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনার ডিজিএম প্রভাষ কুমার দত্ত (৫৬)-এর গুলিবিদ্ধের ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় কোনো মামলাও হয়নি। তবে, পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এক্ষুণি আইনের পদক্ষেপ নিয়ে ভাবছি না। চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৮/২ নং বকশিপাড়াস্থ নিজ বাড়িতে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পোস্ট অপারেটিভে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে প্রভাষ কুমার দত্ত বাইরে থেকে এসে বেডরুমে ঢুকে কাপড়-চোপড় পরিবর্তন করছিলেন। এ সময় রুমের ভেতরে থাকা একজন মুখোশধারী তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে।গুলিটি তার পেটের ডান পাশে বিদ্ধ হয়। আত্মরক্ষার্থে তিনি বার্থরুমে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে মুখোশধারী ওই ব্যক্তি কীভাবে বাইরে গেছে কেউ বলতে পারে না।
জানায়, মুখোশধারী ওই ব্যক্তি আগে থেকেই ওই ঘরে লুকিয়ে ছিল। তবে, অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রভাষ সন্ধ্যা ৭টায় বাসায় প্রবেশ করেন। এরপর রাত ৮টার দিকে বের হয়ে যান। পরে বাইরের কাজ শেষে ১০টার দিকে বাসায় ফেরেন। এরপর একজন মুখোশধারী তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। সূত্রটি আরো জানায়, প্রভাষের বড় ছেলে ভারতের উড়িশ্যায় অবস্থান করছেন। আর মেয়ে থাকেন ঢাকায়। প্রভাষের স্ত্রী বেবী চন্দ গত বছর ঢাকার নিজ বাসায় হারপিক খেয়ে আত্মহত্যা করে। এরপর থেকে তার ছেলে ও মেয়ে বেশির ভাগ সময় তার কাছে থাকতেন না। তার এক ভাইজি তার বাসায় থাকতেন। তার ভাইঝি বাসায় থাকাবস্থায় কীভাবে মুখোশধারী তার বেডরুমে অবস্থান করছিল তা নিয়ে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রভাষের পেটের ডান দিকে গুলি লেগেছে। তার অস্ত্রোপচার সফলভাবে হয়েছে। বর্তমানে পোস্ট অপারেটিভে রয়েছে।
ঘটনার সময় বাসায় ছিলেন প্রভাষের ভাতিজি। তিনি জানান, রাতে অচেনা চারজন লোক তাদের বাসায় ঢুকে পড়েন। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের মধ্যে একজন তার চাচাকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। এরপর দ্রুত পালিয়ে যান তারা।
প্রভাষের বড় শ্যালক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র বলেন, ‘প্রভাষকে বকশীপাড়ার বাসভবনে গুলি করার ঘটনা ঘটেছে। তার কোনো শত্রু ছিল না। কেন এ ঘটনা ঘটলো তা প্রভাষ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বলা কঠিন।’ তিনি বলেন, এক্ষুণি আইনের পদক্ষেপ নিয়ে ভাবছি না। আগে চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বকশিপাড়া রোড এলাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের খুলনা শাখার ডিজিএম প্রভাষ কুমার দত্ত নিজ বাসার বেডরুমে ছিলেন। এ অবস্থায় মুখোশধারীরা প্রভাষকে লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি বাথরুমে ঢুকে আত্মরক্ষা করেন। তার পেটের ডান পাশে গুলি লাগে। পরে তাকে আহত অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া এন্ড কমিউনিটি পুলিশিং) সোনালী সেন বলেন, সন্ত্রাসীদের শনাক্ত ও আটক করার চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশের বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে।