ভারত-শাসিত কাশ্মীরে শ্রীনগরের ৪৩ বছর বয়সী নারী সাফিয়া আজাদ জানেন না যে তার স্বামী এখন জীবিত নাকি মৃত। গত ২৬ বছরে তিনি তার চেহারা যেন প্রায় ভুলতে বসেছেন। তাই প্রতিদিন তাকে মনে করার চেষ্টা করেন।
১৯৯৩ সালের এপ্রিলের এক বিকেলে তার স্বামী হুমায়ুন আজাদকে ভারতীয় আধা-সামরিক বাহিনী নিজের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই নিখোঁজ শ্রীনগর থেকে এক কিলোমিটার দূরবর্তী গ্রামের এই ব্যবসায়ী।
গত ১৫ জানুয়ারি ‘অ্যাসোসিয়েশন অব প্যারেন্টস অব ডিজঅ্যাপিয়ার্ড পার্সন্সস’র(এপিডিপি) ব্যানারে সাফিয়া এবং স্বজন হারানো অন্য কাশ্মীরীদের একটি দল নিখোঁজদের স্কেচ এবং তাদের গল্প দিয়ে ক্যালেন্ডার চালু করেছে।
পারভিনা অহনগার নামের এক ৬৫ বছর বয়সী নারী ১৯৯০ সালের প্রথমদিকে তার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর এপিডিপি’র গোড়াপত্তন করেন।
তিনি আল কাতার-ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরাকে জানান, এটি হারানো স্বজনদের মনে রাখতে এবং খুঁজতে পরিবারের সদস্যদের একটি ইউনিক উপায়।
কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, কেউ মারা গেলে তাকে কবর দেয়া হয়, তাদের জন্য স্বজনরা কান্নাকাটি করে। কিন্তু নিখোঁজরা আমাদেরকে ভালোভাবে কাঁদতেও দেয় না। তারা আমাদেরকে প্রতিটি মুহূর্তে ব্যথা দেয়।
ক্যালেন্ডারটির ১২টি মাসের জায়গায় ১২ নিখোঁজ ব্যক্তিকে বসানো হয়েছে। রক্তের দাগে তাদের নিখোঁজ হওয়ার দিনটি চিহ্নিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থী, কৃষক, শ্রমিক, দরজি ও ড্রাইভারসহ সব পেশার মানুষই আছেন এই নিখোঁজদের মধ্যে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে আট হাজার জন নিখোঁজ হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, নিখোঁজদের কয়েকজনকে আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায় এবং অন্যরা বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি।