বিষাক্ত মদ পান করে আসামে আরো কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার সেখানকার পুলিশ এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর ফলে সেখানে মদ পানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪৪। আরো দুই শতাধিক মানুষ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এতে বলা হয়, এর আগে একইভাবে উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে মারা গেছেন প্রায় একশত মানুষ। তার দু’সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে আসামে এ ঘটনা ঘটেছে। রোববার আসাম পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মুকেশ আগারওয়াল বলেছেন, গোলাঘাট ও জোরহাট জেলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে১৪৪।এ ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মদের নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এখন অপেক্ষা রিপোর্টের জন্য।
পুলিশ বলছে, বৃহস্পতিবার দিনশেষে অবৈধ উপায়ে তৈরি করা মদ পান করে একের পর এক মানুষ অসুস্থ হতে থাকে। এর মধ্যে রয়েছেন অনেক নারী। তারা ওই অঞ্চলের চা প্রধান এস্টেটের শ্রমিক। চিকিৎসকরা বলেছেন, যাদেরকে তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা মারাত্মকভাবে বমি করছিলেন। বুকে তাদের প্রচন্ড ব্যথা হচ্ছিল এবং দম টানতে পারছিলেন না। এ ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের সরকারি দু’জন কর্মকর্তাকে মদ বিক্রির ক্ষেত্রে আগেভাগে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর জন্য যাদেরকে দায়ী পাওয়া যাবে তাদেরকেই বিচারের আওতায় আনার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্বশর্মা।
উল্লেখ্য, ভারতের গ্রাম এলাকায় স্থানীয়ভাবে তৈরি মদ হাতের নাগালে পাওয়া একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। এর সঙ্গে মেশানো হয় মিথানল। যদি এর পরিমাণ বেশি হয় তাহলে মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। লিভার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকি মারাও যেতে পারে। প্রতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে কয়েক শত গরিব মানুষ এভাবে মারা যান।
প্রতি বছর ভারতে প্রায় ৫০০ কোটি লিটার মদ পান করা হয়। এর মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগই তৈরি হয় অবৈধ উপায়ে। এ তথ্য ইন্টারন্যাশনাল স্পিরিটস অ্যান্ড ওয়াইন এসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার।