আমাদের চলচ্চিত্রের সময়টা পরিবর্তন হবে কি করে? এ প্রশ্নটা আমার মাথায় সব সময়ই ঘুরপাক খায়। মাঝে একটা জায়গায় শুনলাম, বাংলা সিনেমায় কি আছে আর! শুধু আছে নির্বাচন আর সংগঠনগুলোর বনভোজন। কথাটা আক্ষেপ করে যেই বলুক না কেন ভেবে দেখলাম ঠিকই বলেছেন তিনি। মুম্বই^, তামিল বা কলকাতা ইন্ডাস্ট্রিতে কয়টা বনভোজন হয়? সেখানকার সংবাদপত্রে বনভোজনের খবর চোখে পড়ে কি? আমাদের সিনেমার কোনো খোঁজ খবর নাই, শুধু আছে নির্বাচন করা আর বনভোজন করা। চলচ্চিত্রের ১৮টি সংগঠনের মধ্যে দশটিই বনভোজন নিয়ে ব্যস্ত। চলচ্চিত্রের এমন সংকটের মধ্যে এত বনভোজন কেন?-কথাগুলো বলছিলেন ঢালিউডের শীর্ষ তারকা শাকিব খান। এবার তিনি শুরু করতে যাচ্ছেন তার নিজের প্রোডাকশন হাউজ (এসকে ফিল্মস) থেকে নতুন ছবি ‘পাসওয়ার্ড’। ছবিটি পরিচালনা করতে যাচ্ছেন দর্শকপ্রিয় নির্মাতা মালেক আফসারী।ছবিতে শাকিবের বিপরীতে শবনম বুবলী ছাড়াও নতুন একটি মুখকে এবার দর্শকরা দেখতে পাবেন। ছবিটি নিয়ে জানতে চাইলে শাকিব খান বলেন, ‘পাসওয়ার্ড’ নাম রাখা হয়েছে এ ছবির। প্রস্তুতি তো অনেকদিন ধরেই চলছে। ছবির চিত্রনাট্য নিয়েও বেশ কয়েকবার বসা হয়েছে। সবার সঙ্গে আলাপ করে তা কয়েকবার সংশোধনও করা হয়েছে। আর পরিচালক আফসারী সাহেব তো আমাদের ইন্ডাস্ট্রির বাণিজ্যিক ছবির একজন সফল দর্শকপ্রিয় নির্মাতা। তবে কাহিনী নিয়ে কিছুই জানাতে চাই না এখন, সবকিছু চমক হিসেবেই থাক। আপনার ছবিতে অনান্য চরিত্র বা শিল্পী নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছেন? উত্তরে শাকিব খান বলেন, কলকাতা থেকে অনেক বড় তারকারাও এ ছবিতে কাজ করতে চাচ্ছেন। তারা কাজ করার জন্য প্রস্তুত। গল্প অনুযায়ি মূলত গ্ল্যামারস এক হিরোইন দরকার ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিতে। আসলে শিল্পী সংকটে ভুগছি আমরা।
কাজের সময় সঠিক শিল্পী খুঁজে পাওয়া যায় না। কাজ করে বড় হতে হবে, এই ভাবনা অনেকেরই নেই এখানে। এজন্য তো দিন দিন ইন্ডাস্ট্রি পিছিয়ে যাচ্ছে। এদিকে গত বছরটা চলচ্চিত্রের জন্য সুখকর ছিল না। এরমধ্যে শাকিব খান অভিনীত কিছু ছবি দর্শকপ্রিয়তা পায়। গত বছর এ অভিনেতার ‘আমি নেতা হব’, ‘ক্যাপ্টেন খান’, ‘সুপারহিরো’, ‘ভাইজান এলো রে’, ‘নাকাব’, ‘চিটাগাঙ্গয়া পোয়া নোয়াখাইল্যা মাইয়্যা’, ‘চালবাজ’ ও ‘পাঙ্কু জামাই’ নামের মোট আটটি ছবি মুক্তি পায়। এ বছরে বেশ কয়েকটি ছবি নিয়ে হাজির হবেন চলচ্চিত্রের এই সফল তারকা। শাকিব খান এরইমধ্যে শাহীন সুমনের ‘একটু প্রেম দরকার’, শামিম আহমেদ রনীর ‘শাহেনশাহ’, সাকিব সনেটের ‘নোলক’ নামের তিনটি ছবির কাজ শেষ করেছেন। বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতার বাজারেও দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এই নাম্বার ওয়ানখ্যাত হিরো। ‘শিকারি’ ছাড়াও শাকিব খান কলকাতার ‘নবাব’, ‘চালবাজ’, ‘ভাইজান এলো রে’ ও ‘নাকাব’ ছবিতে কলকাতার শ্রাবন্তী, শুভশ্রী, নুসরাত জাহান, সায়ন্তিকা, পায়েল মুখার্জির মতো বড় তারকাদের সঙ্গে এরইমধ্যে কাজ করেছেন। তার অভিনীত এসব ছবি ও ছবির গান পেয়েছে ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তাও।
বর্তমানে বাংলা ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলেও সিনেপ্লেক্স সংকটের কথা বারবার জানাচ্ছেন নির্মাতারা। পর্যাপ্ত সিনেপ্লেক্স না হলে সিনেমা হলে আগের মতো দর্শক ফিরবে না বলেও মন্তব্য করেছেন একাধিক নির্মাতা। চলচ্চিত্রের বর্তমান সিনেপ্লেক্স সংকটসহ অনান্য বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে শাকিব খান বলেন, একজন খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে কোটিপতি পর্যন্ত সব মানুষের বিনোদন দরকার। একজন মানুষের বিনোদনের জন্য (সিনেমা হলে ছবি দেখার জন্য) ২০০ টাকা জমিয়ে খরচ করাটা এখন ততটা ব্যয়বহুল না। আর গার্লফ্রেন্ড বা বন্ধুসহ সিনেপ্লেক্সে গেলে ৫০০ টাকা তো খরচ হতেই পারে। অন্তত সুন্দর পরিবেশে বসে তো ছবিটি উপভোগ করতে পারবে এসব দর্শক। এজন্য আমাদের আরো সিনেপ্লেক্স বাড়ানো দরকার। আমি বিশ্বাস করি, এ সমস্যারও দ্রুত সমাধান হবে।