যশোরে কথিত গোলাগুলিতে শিশু তৃষা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান সন্দেহভাজন আসামি শামীম (৩৫) নিহত হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে শহরতলীর খোলাডাঙ্গা দক্ষিণপাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত রাইস মিলের পাশ থেকে গুলিবিদ্ধ শামীমের লাশ উদ্ধার করে কোতয়ালী থানা পুলিশ। এসময় ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
যশোর কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপূর্ব হাসান নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত রাত সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ খবর পায় খোলাডাঙ্গা দক্ষিণপাড়ায় দু’দল সন্ত্রাসীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। পর পরই পুলিশ ঘটনাস্তলে পৌঁছে গুলিবিদ্ধ এক যুবককে দেখতে পেয়ে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। পরে পুলিশ তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়।
নিহত শামীম যশোরের আরবপুর ইউনিয়নের ধর্মতলা গাজীপাড়া এলাকায় বারেক আলীর ছেলে। সে ওই এলাকার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী তৃষা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি ছিল।
পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শিহাবুর রহমান জানান, শহরতলীর ধর্মতলা এলাকার শিশু তৃষা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন কয়েকজন আসামি খোলাডাঙ্গার একটি পরিত্যক্ত রাইস মিলে অবস্থান নিয়ে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটাচ্ছে। এমন সংবাদ পেয়ে রাত সাড়ে ৪ টার দিকে পুলিশের দুটি টিম সেখানে অভিযান চালায়।পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে উভয় গ্রুপের সন্ত্রাসীরা পাল্টা গুলি ও বোমাবাজি শুরু করে। এসময় পুলিশ পাল্টা ১০ রাউন্ড গুলি করলে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে। পরে মিলের পার্শ্ববর্তী মাঠে তল্লাশি করে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অজ্ঞাত এক যুবককে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ সেখান থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি এবং ৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ বিকেলে খেলতে গিয়ে কারবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ও ইজিবাইকের চালক তরিকুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে আফরিন তৃষা নিখোঁজ হয়। পর দিন সন্ধ্যার দিকে এলাকার হরষিতের বাড়ির পাশের একটি গর্ত থেকে তৃষার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত স্কুল ছাত্রীর পিতা তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে এলাকার বখাটে যুবক ও সন্ত্রাসী শামীমকে প্রধান করে কোতয়ালি থানায় শিশু ধর্ষন ও হত্যা মামলা দায়ের করে।
নিহত তৃষার সহপাঠীসহ স্থানীয় এলাকাবাসী এই হত্যাকান্ডের বিচার ও খুনিদের শাস্তি দাবি করে গত ৫ মার্চ শহরের ধর্মতলা মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এর একদিন পরই সন্দেহ ভাজন আসামী শামীম কথিত গোলাগুলিতে নিহত হলো। এদিকে শিশু তৃষা হত্যাকান্ডের প্রধান সন্দেহভাজন আসামি শামীম কথিত গোলাগুলিতে নিহত হওয়ায় এলাকাবাসী সস্তি প্রকাশ করেছেন।