ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর সদর উপজেলার কলাবাড়ী এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ওরস মাহফিলের যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে ৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত আরো অর্ধশতাধিক যাত্রী। অপরদিকে পৃথক সদর উপজেলার খাগদী ও রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম বাবনাতলা নামক স্থানে দুপুরে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আরো ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। পৃথক দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- হাবি হাওলাদার (৫০), আব্বাস খান (৩২), হাসিয়া বেগম (৫৫), হাসান (১৪), আক্কাস (৪০), নয়ন (২৭), সায়েম (২৫), নাঈম বেপারি (২৫) ও অজ্ঞাত (৩৫)। এদের সবার বাড়ি মাদারীপুরের ভাঙ্গাব্রিজ, পান্তাপাড়া, খৈয়রভাঙ্গা এলাকায়।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের চন্দ্রপাড়া মাহফিলে অংশ নেয়ার জন্য মঙ্গলবার বাড়ি থেকে চন্দ্রপাড়া যায় মুসল্লিরা। সকালে মাহফিল শেষে চন্দ্রপাড়া থেকে মাদারীপুর সদরের ভাঙ্গাব্রিজ এলাকায় সুবিন-নবীন নামের একটি লোকালা বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন মুসল্লিরা। সদর উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাককে সাইড দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায় বাসটি। এ সময় ঘটনাস্থলে ৭ জন নিহত হয়।সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রী। খবর পেয়ে মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে মাদারীপুর-টেকেরহাট সড়কের রাজৈর উপজেলার বাবনাতলা এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নাইম বেপারি (২৫) নামের একজন বিকাশকর্মী নিহত হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নাইম কাজ শেষে মোটরসাইকেলযোগে মাদারীপুর শহরে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে উক্ত বাবনাতলায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটি সজোরে ধাক্কা দেয়। এ সময় নাইম ছিটকে রাস্তার ওপর পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাজৈর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত ডাক্তার নাইমকে মৃত ঘোষণা করেন। নাইম মাদারীপুর শহরের বাগেরপাড় এলাকার ইব্রাহিম বেপারির ছেলে। সে বিকাশে এসআর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রাজৈর থানার এস আই দিনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া শহরের খাগদী এলাকায় ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আরো এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। তার নাম পরিচয় জানা যায়নি।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হলেও এর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক অখিল সরকার বলেন, পৃথক দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত আছেন প্রায় অর্ধশতাধিক। নিহতের সংখ্যার বাড়তে পারে। আমরা আহতদের যথাসাধ্য চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। গুরুতর বেশ কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।