শেষ হাসিটা হাসল বাংলাদেশ। কি দুর্দান্ত এক ম্যাচ উপহার দিলো সাকিব,তামিম, মাশরাফিরা। এই জয়ের কোনও বিশেষণ নেই। টাউনটনে আজ বাঁচা-মরার ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বেঁচে গেল টাইগাররা। উইন্ডিজদের দেয়া ৩২১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে বাংলাদেশের লেগেছে মাত্র ৪১.৩ ওভার। সমারসেটের টাউনটনে টস জিতে বাংলাদেশ অধিনায়কের সিদ্ধান্ত বোলিংয়ের। ক্যারিবীয়দের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে শুরু থেকেই চেপে ধরে মাশরাফি-সাইফউদ্দিন। ইংনিসের চতুর্থ ওভারেই গেইলকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেন সাইফউদ্দিন।
এরপর শাই হোপ-এভিন লুইসের ১১৬ রানের জুটিতে এগিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লুইসকে ৭০ রানে ফিরিয়ে ম্যাচে ফিরে বাংলাদেশ। এরপর নিকোলাস পুরানের ২৫ রানে ফেরার পর হোপ আর শিমরন হেটমেয়ার মিলে জুটি গড়েন ৮৩ রানের।
হেটমেয়ারকে ৫০ রানে ফেরান মোস্তাফিজ। একই ওভারে আন্দ্রে রাসেলকেও শূন্য রানে ফেরান কাটার মাস্টার। শত রানের ইনিংস খেলার পথে থাকা হোপকে আশাহত করেন মোস্তাফিজ। ৯৬ রানের মাথায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হোপ। শেষদিকে জেসন হোল্ডারের ১৫ বলে ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩২১ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ক্যারিবীয়রা। ৯ ওভারে ৫৯ রান দিয়ে মোস্তাফিজ নেন ৩ উইকেট। এছাড়া সাইফউদ্দিনও নেন৩টি আর সাকিব নেন ২টি উইকেট।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে তামিম-সৌম্যর উদ্বোধনী জুটি যোগ করে ৫২ রান। সৌম্য ২৯ করে বিদায়ের পর সাকিবকে নিয়ে ৬৯ রানের জুটি গড়েন তামিম। তবে কাঁটা পড়েন অর্ধশতক থেকে দুই রান দূরে থাকতে। ৪৮ রানে শেলডন কটরেলের রান-আউটের ফাঁদে পড়ে ফিরেন সাজঘরে। মুশফিক এলেন আর গেলেন ১ রান করে। বাকিটা ইতিহাস। সাকিব-লিটনের কাছে অসহায় ক্যারিবীয় গতি দানবরা। দুইজনের জুটি থেকে আসে ১৮৯ রান।
বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসর যেন সাকিব আল হাসানের। টাউনটনে দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে পেলেন বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় শতক। ৮৩ বলে ১৩ চারের সাহায্যে সাকিব তুলে নিয়েছেন আসরের দ্বিতীয় শতক। এর আগে গত ২০১৫ বিশ্বকাপে দুই সেঞ্চুরি হাঁকান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপে টানা চার ম্যাচে অর্ধশতক হাঁকিয়ে নিজের নাম লিখিয়েছেন ভারতের নবজাত সিং সিধু (১৯৮৭), শচীন টেন্ডুলকার (১৯৯৬) আর দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথের (২০০৭) সঙ্গে।
দুই অর্ধশতক আর দুই শতকের ইনিংস মিলে সাকিব এখন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় এক নম্বরে। চার ম্যাচে মোট করেছেন ৩৮৪* রান। এছাড়া ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২০২তম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে এসে পূর্ণ করলেন ৬ হাজার রান। সাকিবের আগে দেশের হয়ে ৬হাজার রান পূর্ণ করেন তামিম ইকবাল। মুশফিকুর রহিমও আছেন ছয় হাজারের দৌড়ে। তার সংগ্রহ এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৬৯৯ রান।
সাকিবের ইতিহাসে লিটনও লিখলেন নিজের ইতিহাস। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলেতে নেমেই জিতিয়েছেন বাংলাদেশকে। ৬৯ বলে ৯৪ রানের অনবদ্য ইনিংসে ভর করে ৫১ বলে হাতে রেখেই ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে টাইগাররা। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও ৩২২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয় পায় টাইগাররা। উইন্ডিজদের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন আন্দ্রে রাসেল ও ওশানে থমাস।