মালয়েশিয়ার পরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মায়ানমার রাজি করাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আমরা চাইবো রোহিঙ্গারা নিরাপদে তাদের জন্মস্থানে ফিরে যাবে। সেই প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নিতে মায়ানমারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন বলে মনে করছেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন বিন আবদুল্লাহ।
তিনি মনে করেন ,রোহিঙ্গাদের নিজের ইচ্ছায় যদি ফিরে যেতে না চায়, তাহলে তাদরেকে জোর করে দেশে পাঠানো ঠিক হবে না। তাদের মতামত অনুযায়ী প্রত্যাবাসন করতে হবে।
দেশটির পররাষ্ট্র বলেন, ‘মালেয়শিয়া রোহঙ্গিা প্রত্যাবাসনে যতটুকু সম্ভব সহযোগতিা করবে। তাছাড়া মালয়শিয়া চায়, যত দ্রুত সম্ভব রোহঙ্গিাদরে প্রত্যাবাসন শুরু হোক। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গাদের যুক্ত করতে হবে ।এই ক্ষেত্রে মায়ারমারকে ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের ভূমিকা ছাড়া এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠতি এক বৈঠকে নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব¡ দেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমনে ও মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন বিন আবদুল্লাহ
এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমনে বলনে, ‘মালয়শিয়া আসিয়ানের রোহঙ্গিা ইস্যু নিয়ে বাংলাদশেরে পক্ষে কাজ করবে। বাংলাদশে ও মিয়ারমার দুই দেশই চায় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনকভাবে ফিরত দিতে’
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সরজমিনে দেখতে এবং এ নিয়ে আলোচনায় তিনদিনের সফরে শনিবার ঢাকায় আসেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণেই তার এই সফর। রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই মালয়েশিয়া বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে সাইফুদ্দিন বিন আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে খুবই কৃতঙ্গ। বাংলাদেশ শ্রমিকরা দারুন কন্ট্রিবিউট করছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে। মালয়েশিয়া ভিন্ন ভিন্ন টাইপের কাজের সুযোগ আছে। আমরা ভালো বেতন দিয়ে বাংলাদেশের শ্রমিকদের নিয়ে যাবো।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সফরের প্রথম দিনে ঢাকাস্থ মালয়েশিয়ান দূতাবাসের অভ্যন্তরীণ একটি অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে বিকালের ফ্লাইটে কক্সবাজার চলে যান তিনি। রোববার বিকাল অবধি তিনি কক্সবাজারে ছিলেন। সেখানে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও ফিল্ড হাসপাতালের কার্যক্রম পরিদর্শন ছাড়াও তিনি বাস্তুচ্যুতদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের নেতৃত্বাধীণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা সঙ্কটসহ দুই দেশের স্বার্থ-সংশ্লিস্ট বিষয়ে আলোচনায় বসেন। এদিকে আগেই মালয়েশিয়ার বিদেশ মন্ত্রণালয় জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবদুল্লাহ’র সফর দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করবে। মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সুদৃঢ় বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৮ সালে উভয় দেশের মধ্যে প্রায় ২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য সম্পাদিত হয়েছে। এটি তার পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় শতকরা ৩৫ দশমিক ৪ ভাগ বেশি। চলতি বছর দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যের হার ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী বর্তমানে মালয়েশিয়ায় কর্মরত রয়েছেন। উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সাইফুদ্দিন বিন আব্দুল্লাহর এটাই প্রথম বাংলাদশ সফর।