ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে ইরানকে হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। রোববার নিজের ইচ্ছেমতো পরমাণু কার্যক্রম পরিচালনা ও ইউরেনিয়াম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের ঘোষণা দেয় ইরান। একইসঙ্গে দেশটি ২০১৫ সালের সমঝোতার প্রতিটি শর্ত থেকেই বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়ে দেয়। এর প্রেক্ষিতেই রোববার ইরানকে সরাসরি সাবধান করে দেন ট্রাম্প। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।
ইরানের সামপ্রতিক পদক্ষেপ সম্পর্কে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে ইরানের সাবধান হওয়া উচিত। কারণ তারা একটি কারণেই ইউরেনিয়াম উৎপাদন করছে। আমি কারণটি বলে দিচ্ছি না, কিন্তু এটি ইরানের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না।
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে আসেন ট্রাম্প।
এরপর থেকেই ওই চুক্তি অনুযায়ী ইরানি স্বার্থ নিশ্চিত নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। গত মে মাসে ইরান পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী দেশগুলোকে চুক্তিতে থাকা অর্থনৈতিক ও তেলের বিষয়ে দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য ৬০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল। সে সময় ইরান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, যদি সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী দেশগুলো প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণের মাত্রা বাড়াবে। এরইমধ্যে, ইরান প্রতিশ্রুতি স্থগিত রাখার প্রথম পর্বে ৩.৬৭ মাত্রায় সমৃদ্ধকৃত ইউরেনিয়ামের মজুদ অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বাড়িয়েছে। একইসঙ্গে সমৃদ্ধকৃত ইউরেনিয়াম ও হেভি ওয়াটার অন্য দেশের কাছে বিক্রির সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। রোববার ইরানের উপ-পরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি, পরমাণুশক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালবন্দী ও ইরান সরকারের মুখপাত্র আলি রাবিয়েই তেহরানে একটি সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন এবং ইরানের নতুন এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন। এটি সরাসরি দেশটির টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। এতে ইরানি কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, প্রতি ৬০ দিনে ইরান এই চুক্তির একেকটি শর্ত থেকে বেড়িয়ে আসবে।
ইরানের ওই ঘোষণার পর সাংবাদিকদের কাছে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন ট্রাম্প। তবে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে তা বিস্তারিত বলেন নি তিনি। ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তেহরান কখনই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না। উল্লেখ্য, প্রথম থেকেই ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে।
এদিকে, রোববার ইরানের পরমাণু কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ঘোষণার প্রেক্ষিতে দেশটির বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও একটি টুইটে ইরানকে হুমকি দিয়েছেন। এতে তিনি লিখেন, পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে ইরানের সিদ্ধান্ত তাদেরকে নতুন অবরোধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ ইরান সমগ্র পৃথিবীর জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।