দুই সেমিফাইনালে দাপট দেখিয়েছিলেন বোলাররা। ফাইনালেও দেখা গেল একই চিত্র। গতকাল বিশ্বকাপের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে আগে ব্যাটিং নিয়ে ২৪১ রানে আটকে যায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। আসরের প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ২৩৯/৯-এ বেঁধে রাখেন ভারতীয় বোলাররা। পরে ভারতের ব্যাটিং গুঁড়িয়ে ১৮ রানে জয় দেখে বোল্ট-ফার্গুসন-হেনরিদের নিউজিল্যান্ড। অপর সেমিফাইনালে ইংলিশদের গতি ও স্পিনে সমান কাবু অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ থামে ২২১ রানে। লেগস্পিনার আদিল রশিদ নিয়েছিলেন তিন উইকেট। গতকাল অবশ্য আদিল থাকেন উইকেট শূন্য। নিউজিল্যান্ডের পতন হওয়া আট উইকেটই ভাগাভাগি করেন ইংলিশ পেসাররা। তিনটি করে উইকেট পেসার লিয়াম প্লাঙ্কেট ও ক্রিস ওকস। ইংল্যান্ডের দুই ‘একপ্রেস’ বোলার জফরা আর্চার ও মার্ক উড নেন একটি করে উইকেট।
গতকাল লর্ডসে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তবে ইংলিশ অধিনায়ক এউইন মরগানকে টসে হারতে দেখে হয়তো খুশিই হয়েছিল স্বাগতিক সমর্থকরা। বিশ্বকাপে লর্ডসে হওয়া আগের চার ফাইনালের প্রতিটিতেই হার দেখেছে টসজয়ী দল।
লর্ডসে ব্যাটে প্রতিশ্রুতি দেখিয়ে উইকেট খোয়ান ওপেনার মার্টিন গাপটিল। ৬.২তম ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৯/১-এ। দ্বিতীয় উইকেটে ৭৪ রানের জুটি গড়ে ইনিংস মেরামত করেন কেন উইলিয়ামস ও হেনরি নিকোলস । তবে অল্প ব্যবধানে উভয়েই উইকেট খোয়ালে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। ব্যক্তিগত ৩০ রানে পেসার প্লাঙ্কেটের ডেলিভারিতে কিপার জস বাটলারের গ্লাভসে ধরা পড়েন কেন উইলিয়ামসন। আর ব্যক্তিগত ৫৫ রানে প্লাঙ্কেটেরই ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান নিকোলস। এতে ২৬.৫তম ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১১৮/৩-এ। আম্পায়ারের বাজে সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে রস টেইলর বিদায় নিলে শঙ্কায় পড়ে কিউইরা। টেইলরকে লেগ বিফোর আউট দেন প্রোটিয়া আম্পায়ার মারিয়াস এরাসমাস। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা বল স্টাম্পের উপর দিয়ে যাচ্ছিল। আর রিভিউ আগেই খরচ করে ফেলায় সাজঘরের পথ ধরতে হয় টেইলরকে। নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের শুরুতেও দেখা যায় বাজে আম্পায়ারিং। তখন রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান কিউই ওপেনার হেনরি নিকোলস। তৃতীয় ওভারে আর্চারের এলবি’র আবেদনে আঙুল তুলে দিয়েছিলেন লঙ্কান আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। পরে দেখা যায় বল স্টাম্পের উপর দিয়ে যাচ্ছে। তবে দুই ওভার পরেই রিভিউ নষ্ট করেন মার্টিন গাপটিল। শেষ পর্যন্ত উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান টম ল্যাথামের ৪৭ রানে ভর করে লড়াইয়ের পুঁজি পায় কিউইররা।
ফাইনালে আগে ব্যাটিং করে ২৫০ এর কম পুঁজি নিয়ে জেতার নজির একটিই। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে ১৮৩ রান করেও শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত।
ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে দেখেশুনে খেলে ৯০ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন রস টেইলর। শেষ পর্যন্ত ১৮ রানের জয়ে টেলরের ধীর-স্থির, কিন্তু কার্যকরী ইনিংসটিই হয়ে উঠেছিল মহা গুরুত্বপূর্ণ। গতকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালেও আস্তে ধীরে শুরু করেছিলেন টেইলর। কিন্তু ৩৪তম ওভারে এরাসমাসের ওই ভুল সিদ্ধান্তের বেশ বড় খেসারতই দিতে হয় নিউজিল্যান্ডকে।