রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরী পাড়ায় এক গার্মেন্ট কারখানায় এক শ্রমিককে পোশাক চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর প্রতিবাদে ইজি ফ্যাশনস নামের ওই কারখানার শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার বিকালে রামপুরার সড়ক অবরোধ করে প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখায়।
নিহত দেলোয়ার ওই পোশাক কারখানার কাটিং সহকারী ছিলেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, বুধবার কারখানা ছুটি হওয়ার পরও দেলোয়ার বের না হয়ে লুকিয়ে ছিলেন। মাঝরাতে তিনি ছয়তলা থেকে কিছু গেঞ্জি জানালা দিয়ে বাইরে ফেললে বাইরে থেকে একজন তা দেখে নিরাপত্তাকর্মীদের খবর দেন।
পরে দারোয়ান কারখানার ম্যানেজারকে খবর দেয়। তিন-চার জন সিকিউরিটি গার্ডকে নিয়ে অফিস সহকারী ইয়াসিন ষষ্ঠ তলায় গিয়ে লুকিয়ে থাকা দেলোয়ারকে খুঁজে বের করে।
উপ কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, “দেলোয়ারকে ধরার পর বেদম পিটুনি দেওয়া হয়। পরে রাতে তাকে গার্মেন্টের ভেতরেই আটকে রাখা হয়।”
শ্রমিকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে দেলোয়ারকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানালেও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম প্রকাশ করেননি উপ কমিশনার আনিসুর।
এদিকে দেলোয়ারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিকাল পৌনে ৩টার দিকে রামপুরার রাস্তায় নেমে আসে। তাদের বিক্ষোভ-অবরোধে মালিবাগ আবুল হোটেল থেকে রামপুরা পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে প্রায় তিন ঘণ্টা।
ফলে অফিস ছুটির ওই সময়ে আশপাশের সড়কগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হয় বলে ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার (রামপুরা) হুমায়ুন কবীর জানান।
পুলিশের শিল্পাঞ্চল জোনের সহকারী কমিশনার সালমান হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সড়ক ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলেও তারা শোনেনি।
“তাদের অবস্থানের কারণে জনগণ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে। পুলিশের অনুরোধে সাড়া না দিয়ে তারা গণ্ডগোলে জড়িয়ে যায়। এক পর্যায়ে তারা পুলিশেকে লক্ষ্যকরে ইটপাটকেল ছুঁড়লে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে লাঠিচার্জ করে আর টিয়ার শেল ও শটগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।”
এ সময় সহকারী কমিশনার সালমান হাসান নিজে এবং অতিরিক্ত উপ কমিশনার হাফিজ আল ফারুক, হাতিরঝিল থানার ওসি আব্দুর রশিদসহ ৮ জন পুলিশ সদস্য আহত হন।
পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার পর সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ওই সড়নে যান চলাচল শুরু হয় বলে ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের সহকারী কমিশনার (রামপুরা) হুমায়ুন কবীর জানান।