হাফছা আক্তার নামে সতেরো বছরের এক কিশোরীকে গত তিনদিন ধরে গরু বাঁধার শেকলে বেঁধে রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে তার নানী-খালা-মামাসহ নিকট আত্মীয়রা। ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাইজোড়া গ্রামে।
নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী পাথরঘাটা উপজেলার লেমুয়া গ্রামের আবুল হোসেন এর মেয়ে। সে লেমুয়া মাদরাসায় দাখিলের শিক্ষার্থী। গত বুধবার বিকালে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থ’লে উপস্থিত হলে পরিবারের লোকজন তাকে শেকল মুক্ত করে।
নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী জানায়, স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। এটা পরিবারের লোকজন মানতে রাজি নয়। গত রোববার ওই ছেলের সঙ্গে পালানোর চেষ্টা করে সে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান তাদের বিয়ে পড়ানোর আশ্বাস দিলে পালানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করে।
মেয়েটির মা-বাবা এলাকায় না থাকায় তিনি ওই কিশোরীকে দক্ষিণ ভাইজোড়া গ্রামের তার নানী হসিনা বেগম ও খালা হনুফা বেগমের জিম্মায় দেন। কিন্তু যাদের জিম্মায় ওই কিশোরীকে রাখা হয়েছে তারা গত রোববার থেকে বুধবার পর্যন্ত গরু বাঁধার শেকল দিয়ে বেঁধে রেখে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালায়। স্থানীয় সাংবাদিকরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তার পায়ের শেকল খুলে দেয়া হয়।
কিশোরীর মা নুরজাহান বেগম বলেন, আমার মেয়ে এখনও অবুঝ। ও যে ছেলেটিকে পছন্দ করেছে সে মাদক মামলার আসামী। ছেলেটির পূর্বেও একটি বিয়ে করেছে। তাই তার সঙ্গে আমার মেয়েকে কিছুতেই বিয়ে দেবো না। তাতে যদি ওকে কেটে ভাসিয়ে দিতে হয়, তা-ই দিবো।
এ বিষয়ে বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, মেয়েটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক। সে মাদক মামলার এক আসামীর সঙ্গে ঘর ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলো। আমি তাকে উদ্ধার করে তার নানী ও খালার জিম্মায় দেই। তারা শেকল দিয়ে বেঁধে রেখে অন্যায় করেছে। এটা করা তাদের ঠিক হয়নি।
বামনা থানার ওসি এসএম মাসুদ্দুজ্জামান বলেন, বিষয়টি এখন পর্যন্ত আমাকে কেউ অবহিত করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।