সুদানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার বিচারকার্য শুরু হয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। গত এপ্রিলে তীব্র গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি। গত জুনে সরকারি আইনজীবীরা জানিয়েছেন, বশিরের বাড়িতে বিশাল অঙ্কের বিদেশি মুদ্রা পাওয়া গেছে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে প্রায় ৩০ বছর ধরে সুদান শাসন করেছেন তিনি। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, বশির ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সুদানে গণতন্ত্রপন্থি ও সামরিক নেতাদের মধ্যে নতুন করে বিরোধ সৃষ্টি হয়। অবশেষে রোববার দুই পক্ষ একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চুক্তি অনুসারে, সামরিক নেতা ও বেসামরিক জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নতুন নিয়ন্ত্রক পরিষদ গঠিত হবে। পরবর্তীতে দুই বছর পর দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার পরিষদের নেতাদের শপথ গ্রহণের কথা ছিল। তবে গণতন্ত্রপন্থিদের অনুরোধে তা দুইদিন পেছানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এদিকে, সোমবার রাজধানী খার্তুমে আদালতের বাইরে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়। বিশাল সামরিক বহরে করে নিয়ে আসা হয় বশিরকে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ বিদেশি মুদ্রা রাখা, দুর্নীতি ও অবৈধ উপহার নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এপ্রিলে সুদানের সামরিক শাসক জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান জানান, বশিরের বাড়ি থেকে নগদ ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার সমপরিমাণ নগদ সুদানি অর্থ ও বিদেশি মুদ্রা পাওয়া গেছে। তবে বশিরের আইনজীবীরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গত মে মাসে সুদানের প্রধান সরকারি আইনজীবী বশিরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের হত্যা ও প্ররোচনা চালানোর অভিযোগ আনে। গত এপ্রিলে এক চিকিৎসকের মৃত্যুকে ঘিরে ওই অভিযোগ আনা হয়। ওই চিকিৎসক নিজের বাড়িতে আহত বিক্ষোভকারীদের চিকিৎসা করছিলেন। কিন্তু পুলিশ এক বিক্ষোভের সময় তার বাড়িতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে তিনি হাত উঁচু করে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। ঘর থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা করে। তার মৃত্যুর পর বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করে ও বশিরের ক্ষমতার অবসান ঘটে। বশিরের বিচারকার্য দেশটির নতুন শাসকদের প্রথম গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিতের পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে।