ঢাকা, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার
যে বিষয়ে সাকিবের কিছু ‘আসে-যায় না’
খেলা
স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে | ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৭:৪৯
আফগানদের বিপক্ষে কী হবে বাংলাদেশের অস্ত্র! ধরাণা করা হচ্ছে স্পিন শক্তি নিয়ে মাঠে নামবেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিশ্বের সেরা বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডার নিজেদের সেরা অস্ত্রই ব্যবহার করতে চাইছেন। অন্যদিকে আফগানদের মূল শক্তিও স্পিন। বিশেষ করে বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বের সেরা লেগ স্পিনার রশিদ খান তাদের অধিনায়ক। এছাড়াও দলে আছেন জহির খানের মতো তরুণ বেশ কয়েকজন তরুণ স্পিনারও। তাই আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া টেস্টে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ঘূর্ণিঝড়ই দেখার সম্ভাবনা বেশি। তবে নিজেদের মাটিতে স্পিন আক্রমণ সাজিয়ে জয় পাওয়া নিয়ে হয় সমালোচনা। এমন ম্যাচে জিতলেও হয় না প্রশংসা।
তবে সাকিব জানিয়ে দিলেন এমন সমালোচনা তিনি পাত্তাই দেন না।
প্রশ্ন: স্পিন আক্রমণ নিয়ে খেলে জিতলে প্রশংসা হয় না, কীভাবে দেখেন?
সাকিব: আমি ব্যক্তিগতভাবে পাত্তা দেই না। কারণ যখন ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় খেলা হয়, চার সিমার খেলে, কোনো স্পিনার খেলে না, সেগুলো নিয়ে তো আমরা সমালোচনা করি না। আমার কাছে মনে হয় না এগুলো নিয়ে চিন্তা করার কিছু আছে। আমাদের চিন্তা থাকবে ম্যাচটি জেতার। সেটি যদি দু’জন সিমার বা ৩ সিমার নিয়ে খেলতে হয়, খেলবো। ১ সিমার নিয়ে খেলতে হলে খেলবো। যেটাই আমরা পরিকল্পনা করবো, সেটিতেই অটল থাকার চেষ্টা করবো। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করবো। আর প্রশংসা হয় না, আমার কাছে মনে হয় ভুল ধারণা। কারণ আমরা ক্রিকেটাররা জানি এটা কত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ এবং প্রতিটি ম্যাচ জিততে হলে কতটা পারফর্ম করতে হয় ও কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। মানুষ বা আপনারা কতটা অ্যাপ্রিশিয়েট করেন, এটা আসলে আমাদের জন্য খুব একটা ম্যাটার করে না।
প্রশ্ন: প্রত্যাশার চাপ কতটা থাকে?
সাকিব: প্রত্যাশা সবসময়ই থাকে, একেক সময় একেকরকম। প্রত্যাশার চাপও থাকে। কিন্তু সবসময়ই চাওয়াটা থাকে দলের জয়ে যতটুকু অবদান রাখা সম্ভব, ততটুকু যেন করতে পারি। সবসময় হয় না। সবসময় ওভাবে প্রস্তুতি নেয়া যায় না। তবে চেষ্টার কখনও কমতি থাকে না।
প্রশ্ন: টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে র্যাঙ্কিং নিয়ে ভাবনা?
সাকিব: র্যাঙ্কিং খুব বেশি ম্যাটার করে বলে আমার কাছে মনে হয় না। এর একটি বড় কারণ হলো, ওরা আসলে এতদিন ধরে শর্ট ফরমেট খেলছে এবং এত ভালো ক্রিকেট খেলছে, স্বাভাবিকভাবেই হয়তো ফরমেট ভিন্ন বলে আমরা ভিন্নভাবে চিন্তা করছি। কিন্তু ওদের দলে তো এরকম ক্রিকেটার আছে যারা ম্যাচ জেতাতে সক্ষম।
প্রশ্ন: দেশের পেসারদের চিন্তা কোথায় মনে করেন?
সাকিব: বলাটা মুশকিল, কিসের অভাব। আমি যেহেতু পেস বোলার নই, ওদের মনমানসিকতা আমার জন্য বোঝা কঠিন। একটা কারণ হতে পারে যে ঘরোয়া ক্রিকেটে ওরা এতটা বোলিং করে অভ্যস্ত নয়। সেটা একটি কারণ হতে পারে। হয়তো ফিটনেসের সমস্যা হতে পারে। তবে যেটাই হোক, আমি নিশ্চিত, পেস বোলিং কোচ নতুন যিনি এসেছেন, বোলারদের সঙ্গে ওসব নিয়ে কাজ করবেন এবং এই জায়গাগুলিতে উন্নতি করবে ওরা।
প্রশ্ন: ব্যাটসম্যানদের আক্রমণাত্ম ব্যাটিং অনুশীলনের কারণ?
সাকিব: দুইটি দিক আছে। একটি দিক আছে যে অনেক সময় ব্যাটসম্যানরা আত্মবিশ্বাস অনুভব করার জন্য অনেক সময় কিছু শট খেলে। শট লাগলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। দ্বিতীয়ত, একজন ব্যাটসম্যান কখনোই সেট নয়, যতক্ষণ না রান করছে। আপনি যদি ১০০ বলে ১০ করেন, তখনও আপনি সেট নন। কিন্তু ১০ বলে ৪০ বা ৫০ করলে সেট। তো রান করতে হবে। উইকেটে শুধু টিকে থাকাই এখনকার টেস্ট ক্রিকেট নয়। আগে ছিল যেমন ক্রিজে পড়ে থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ। এখন রানও করতে হয়। দুটি দিকই থাকতে পারে। আমি জানি না মুশফিক ভাই কি কারণে পজিটিভ খেলেছেন। আমার মনে হয়, অনেক সময় আত্মবিশ্বাস একটু নিচে থাকে, কিছু শট খেললে শরীর খুলে যায়।
প্রশ্ন: প্রতিপক্ষ নিয়ে পরিকল্পনা কী?
সাকিব: হ্যাঁ, একটি দলের বিপক্ষে যখন প্রস্তুতি নিতে হয়, তখন নিজেদের শক্তি-দুর্বলতা জানা যেমন জরুরি, একইসঙ্গে প্রতিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা জানাটাও জরুরি। এই সবকিছু মিলেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এবং এই সিদ্ধান্তগুলো সাধারণত দলের সবাই মিলেই নেয়। পরে হয়তো কিছু কিছু মতামত আসে, তার পর সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠিত করা হয়।
প্রশ্ন: টস কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
সাকিব: এশিয়াতে সবসময়ই টস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বাড়তি সুবিধা একটু থাকবে (জিতলে)। তবে যতোই সুবিধা-অসুবিধা থাকুক, গুরুত্বপূর্ণ হলো যে আমরা বোলিং করি বা ব্যাটিং, শুরুটা যেন ভালো করতে পারি। মোমেন্টাম আমাদের দিকে যেন নিতে পারি।