সম্প্রতি সৌদি আরব সংলগ্ন সীমান্তে হামলা চালিয়ে ৫০০ সৌদি সেনা হত্যার দাবি করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। এছাড়া, আরো ২০০০ সেনা আটক ও একটি সৌদি সামরিক গাড়ি বহর জব্দ করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে তারা। রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির পক্ষে ছবি ও সেনা আটকের ভিডিও প্রকাশ করেছে ইয়েমেন-সমর্থিত বিদ্রোহী দলটি। তবে আটক করা সেনাদের অনেকেই সামরিক পোশাক পরিহিত ছিল না। তাই ভিডিও দেখে তাদের পরিচিয় নিশ্চিত করা যায়নি। সৌদি আরবও হুতিদের দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেনি। এর আগে শনিবার এই হামলায় কয়েক হাজার সেনা আটকের দাবি করেছিল হুতিরা। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
খবরে বলা হয়, হুতিরা সংবাদ সম্মেলনে সৌদি সামরিক যান ও গাড়ি বহর জব্দের ছবি দেখিয়েছে।
তাদের দাবি, তিন দিন ধরে সৌদি আরবের নারজান অঞ্চল সংলগ্ন এলাকায় এই হামলা চালানো হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে আরো জোরদার হামলা চালানো হবে। হুতি মুখপাত্র মোহাম্মদ আব্দুল সালাম, হামলাটিকে ‘অপারেশন ভিক্টরি ফ্রম গড’ বা ইশ্বর প্রদত্ত বিজয় অভিযান হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযানগুলোর একটি ছিল এটি। শত্রুপক্ষ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অল্প কয়েকদিনে বিশাল ভূখ- মুক্ত করা গেছে। তিনি আরো বলেন, অভিযানে বহু সৌদি সেনা আহত হয়েছে। অনেকের লাশ ময়দানে পড়ে ছিল। সৌদি আরবের কাছে পিছু হটা ছাড়া উপায় ছিল না।
স্বতন্ত্রভাবে এই হামলার দাবি যাচাই করা গেলে সৌদি আরবের ভেতরে হুতিদের শক্তির এক অনন্য নজির স্থাপন হবে। সৌদির জন্য এটা হবে চরম লজ্জার বিষয়। এই হামলার আগে ১৪ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে সৌদি আরবের দুটি তেল ক্ষেত্রে ড্রোন হামলা চালানোর দাবি করে হুতিরা।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের পক্ষে হুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোট। চার বছর ধরে সেখান প্রতিনিয়ত বিমান হামলা চালিয়ে আসছে তারা। তবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, ইয়েমেনের কিছু অংশে বিমান হামলা বন্ধ করতে ও হুতিদের সঙ্গে বন্দি বিনময় করতে সম্মত হয়েছে সৌদি আরব। পাশাপাশি দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা করতে চেয়েছিল তারা। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে গার্ডিয়ানের এক পশ্চিমা কূটনৈতিক সূত্র। এছাড়া, চলতি বছর ইয়েমেন থেকে বেশকিছু সংখ্যক সেনা প্রত্যাহার করে নেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। তারা জানায়, দেশটিতে নিশ্চিত সামরিক জয়ের সম্ভাবনা নেই।
এদিকে, সৌদির তেলক্ষেত্রে হামলা চালানোর এক সপ্তাহের মধ্যে দেশটিকে শান্তি প্রস্তাব দিয়েছিল হুতিরা। কিন্তু সৌদি আরব তাৎক্ষণিকভাবে ওই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।