বেকারত্ব, সরকারি সেবার নাজুক মান এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইরাক। এরই মধ্যে নিহতের সংখ্যা প্রায় ১০০। এ অবস্থায় কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে প্রাণহানী বন্ধের জোরালো আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের ইরাক মিশনের প্রধান জেনিন হেনিস প্লাসচার্ট বলেছেন, ৫ দিনের যে পরিমাণ মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন তা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এসব প্রাণহানীর জন্য যারা দায়ী তাদেরকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা উচিত। শনিবার নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা পূর্ব বাগদাদে একটি বড় র্যালি ভন্ডুল করে দিয়েছে। এদিনের সহিংসতায় কমপক্ষে ৫ জন নিহত হয়েছেন। আবারও নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা সরাসরি গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে বলে রিপোর্ট পাওয়া গেছে।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
ইরাকি পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশন বলেছে, মঙ্গলবার শুরু হয় ওই বিক্ষোভ। তা আস্তে আস্তে ইরাকের দক্ষিণদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ পর্যন্ত এই বিক্ষোভে কমপক্ষে ৯৯ জন নিহত ও প্রায় ৪০০০ মানুষ আহত হয়েছেন। ২০১৭ সালে ইরাকে পরাজিত হয় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। তারপর এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ বিক্ষোভ ও প্রাণহানীর ঘটনা। বিষয়টিকে প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মাহদির ভঙ্গুর সরকারের জন্য প্রথম বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তার সরকার প্রায় এক বছর আগে ক্ষমতায় এসেছে। কারফিউ জারি করে এবং পুরো ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে কর্তৃপক্ষ এই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।
শনিবার রাজধানী বাগদাদ থেকে দিনের বেলা কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে বিক্ষোভকারীদের ছোট একটি গ্রুপ নতুন করে তাদের কর্মসূচি শুরু করেছে। শহরের তাহরির স্কয়ার হলো বিক্ষোভের প্রাণকেন্দ্র। তবে শনিবার তা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। এ অবস্থায় শনিবার বিকেলে পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন ডাকা হয়। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। ওদিকে বেশ কিছু টেলিভিশন চ্যানেল স্টেশনে হামলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আল এরাবিয়া নিউজ চ্যানেলের অফিস। নাসিরিয়ায় ৬টি ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রধান কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী মাহদি বিক্ষোভে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, ইরাক সমস্যার কোনো ম্যাজিক সমাধান নেই। তিনি এ জন্য নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের পূর্ণাঙ্গ সমর্থন দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আচরণ করতে বলে দিয়েছেন। ওদিকে ইরাকের সবচেয়ে সিনিয়র শিয়া ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী আল সিস্তানি সরকারের প্রতি সংস্কার দাবি করেছেন। ওদিকে সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র। তারা ইরাক কর্তৃপক্ষের প্রতি সংযত আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে।