জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য স্যাক্সনির রাজধানী ড্রেসডেনে ‘নাৎসি জরুরি’ অবস্থা জারি করা হয়েছে। শহরে উগ্র ডানপন্থিদের তৎপরতা মোকাবিলায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। শহরের কাউন্সিলররা জানান, উগ্র ডানপন্থিবাদ মোকাবিলায় নতুন প্রস্তাবনা পাস করেছে তারা। তবে বিরোধীরা এসব পদক্ষেপকে বাড়াবাড়ি বলছেন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, ‘২০২৫ ইউরোপিয়ান ক্যাপিটাল অব কালচার’ হওয়ার প্রতিযোগিতায় লড়ছে ড্রেসডেন। শহরটি বহু বছর ধরে উগ্র ডানপন্থিদের দুর্গ হিসেবে পরিচিত। এখান থেকেই ২০১৪ সালে শুরু হয়েছিল ইসলামবিরোধী পেগিডা আন্দোলন। শহরে উগ্র ডানপন্থিবাদের বিস্তার মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন।
গত বুধবার কাউন্সিলররা উগ্র ডানপন্থি চরমপন্থিতা মোকাবিলায় ‘নাজিনটস্ট্যান্ড’ বা নাৎসি জরুরি অবস্থা শীর্ষক একটি প্রস্তাবনা পাস করেছে। প্রস্তাবনাটির প্রবর্তক কাউন্সিলর ম্যাক্স অ্যাশেনবাক বলেন, নাজিনটস্ট্যান্ড অনেকটা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সৃষ্ট জরুরি অবস্থার মতো। এর মানী হচ্ছে, আমরা গুরুতর একটি সমস্যার সম্মুখীন। আমাদের উন্মুক্ত গণতান্ত্রিক সমাজ হুমকির মুখে।
বামপন্থি দিয়ে পার্তেই দলের সদস্য অ্যাশেনবাক আরো বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন তিনি। কেননা, রাজনীতিবিদরা উগ্র ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে জানান দিতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এই জরুরি অবস্থা সে ধারায় পরিবর্তন আনার একটি চেষ্টা। তিনি বলেন, এছাড়া, আমি নিজেও জানতে চাই যে, আমি কী ধরনের মানুষের সঙ্গে ড্রেসডেনের কাউন্সিলে কাজ করছি।
কাউন্সিলরদের পাস করা প্রস্তাবনা অনুসারে, ড্রেসডেনে ডানপন্থিবাদ নিয়ে চরমপন্থি মনোভাব ও কার্যক্রম খুব দ্রুত হারে বাড়ছে। প্রস্তাবনায় শহরের ডানপন্থি সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের সাহায্য করতে, সংখ্যালঘুররে রক্ষা করতে ও গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে তুলতে আহ্বান জানানো হয়েছে। বুধবারে ড্রেসডেনের সিটি কাউন্সিলে ৩৯ ভোট পেয়ে পাস হয় প্রস্তাবনাটি। এর বিপক্ষে ভোট পড়ে ২৯টি।
উগ্র-ডানপন্থিবাদের সঙ্গে ড্রেসডেনের সম্পর্ক
বহু বছর ধরেই উগ্র-ডানপন্থিবাদের আস্তানা হিসেবে পরিচিত ড্রেসডেন। গত শতকের নব্বইয়ের দশকে নিও-নাৎসি দলগুলো সেখানে সমাবেশ করতো। ‘বোমা হামলার হলোকাস্ট’ নাম দিয়ে ১৯৪৫ সালে জার্মানিতে বৃটিশ ও মার্কিন বোমা হামলার স্মৃতিচারণে করা হতো ওইসব সমাবেশ। পরবর্তীতে দলগুলোর সদস্যরা আশপাশের শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। স্যাক্সনি রাজ্যটিও বেশ আগ থেকেই উগ্র-ডানপন্থি ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অব জার্মানি (এনপিডি) এর মূল ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। পরবর্তীতে অপর এক উগ্র-ডানপন্থি দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) এর ঘাঁটি হিসেবেও পরিচিতি পায় রাজ্যটি।