দেশের সামস্টিক অর্থনীতি আগের চেয়ে দুর্বল হচ্ছে বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে দেশের সম্ভাবনা কাজে লাগানো সম্ভব হবে না। এতে কমবে প্রবৃদ্ধির গতি। রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ২০১৯-২০ অর্থবছরের পারম্ভিক মূল্যায়ন নিয়ে সিপিডির সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের এক চতুর্থাংশ সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে খুব আশাব্যঞ্জক ফলাফল দেখা যায় নি। এর ফলে এবছরের রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ গত অর্থ বছরের চেয়েও বেশি হবে বলে আশঙ্কা করেন সিপিডি। রাজস্ব আহরণে দুর্বলতা, ব্যাংকিং খাত এবং পুঁজিবাজারে অস্থিরতার কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। এজন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সিপিডির গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, রাজস্ব আহরণের কৌশলে বড় কোন পরিবর্তন আসেনি। এর ফলে রাজস্ব আহরণের ৮৭ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি থাকবে বলেও উল্লেখ করেন সিপিডির গবেষক। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির চারটি খাত চিহ্নিত করেছে যেখানে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করে সিপিডি। এই চারটি ক্ষেত্র হলো রাজস্ব সংগ্রহের হার, ব্যাংকিং খাত, পুঁজি বাজার এবং মজুরির ভারসাম্য। ব্যাংকিং খাতের পরিচালনা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিপিডি। ব্যাংকিং খাতের গুরুত্বপূর্ণ সব ক্ষেত্রেই দূর্বলতা দেখা দিয়েছে।
সিপিডির পক্ষ থেকে বলা হয়, পুঁজি বাজারের অস্থিতিশীলতাও বেড়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় এবছর অনেক কম সংখ্যক প্রতিষ্ঠান লভ্যাংশ দিচ্ছে। জেড ক্যাটাগরি শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক রকম বেড়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পুঁজিবাজারে দুষ্টচক্রের আনাগোনা বেড়ে গেছে। এর ফলেই ক্রমাগতভাবে পতন হচ্ছে সূচকের। দুর্বল আইপিও, অস্বচ্ছ বার্ষিক প্রতিবেদন, বিও অ্যাকাউন্টের অপর্যাপ্ত স্বচ্ছতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নবিদ্ধ কার্যক্রম অস্থিতিশীল করে তুলেছে পুঁজিবাজারকে। এসব সমস্যা সমাধানে কোম্পানিগুলোর স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার কোন বিকল্প নেই। এছাড়াও নীতিনির্ধারণী সংস্থাগুলো স্বাধীনভাবে করছে কিনা এ বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সিপিডির গবেষকরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান, বিশেষ ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান ও খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন ও গবেষণায় সাহায্যকারি দল।