রাজনীতিঃ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ৭ম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পরপরই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সম্মেলন হবে বলে ধারণা করছে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। শীর্ষপদের (সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক) নেতৃত্বে আসতে পদ প্রত্যাশীরা লবিং-তদবির নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। নানা উপায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসার চেষ্টা করছেন পদ প্রত্যাশীরা।
দীর্ঘমেয়াদে (টানা তৃতীয়বার) আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকায়, এর সুযোগ নিয়ে যুবলীগের অনেক নেতা বানিয়েছেন টাকার পাহাড়। দূর্নীতি, ক্যাসিনো, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজীসহ নানা অপকর্মে যুক্ত থাকায় সমালোচিত হয়েছেন সংগঠনটির কতিপয় নেতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদেশে শুদ্ধি অভিযানে এমন অপরাধমুলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় গ্রেফতার হয়েছেন অনেকে। এর সুবাদে সংগঠন থেকে কয়েকজনকে বহিষ্কারও হতে হয়েছে । যারা বহিষ্কার কিংবা গ্রেফতার হননি তারাও আতঙ্কে আছেন । এ কারণে এবারের সম্মেলনে পদপ্রত্যাশী অনেক নেতা প্রার্থিতা ঘোষণা নিয়ে ভয়ে আছেন। তবে এর মাঝে ক্লিন ইমেজের প্রার্থীরা অনেকটাই চাঙ্গা। তারা নিয়মিত দলীয় প্রোগ্রাম করে যাচ্ছেন। নেতাকর্মীদের নিয়ে নিয়মিত পার্টি অফিসে আসছেন। অনানুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রার্থিতার বিষয়ে জানান দিচ্ছেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে মাইনুদ্দিন রানা : বর্তমানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দীর্ঘদিন ধরে যুবলীগ রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
আনোয়ার ইকবাল সান্টু: তিনি সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আগের কমিটিতে ছিলেন যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পদে ।
রেজাউল করিম রেজা: বর্তমানে তিনি মহানগর দক্ষিন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু: মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে সরকারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক কারনে বেশ কয়েকবার কারাবন্দী হন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু। তিনি স্কুল জীবন থেকে রাজনীতি করেন। তিনি ঢাকা মহানগরের ৭৯ নং ওয়ার্ড ছত্রলীগ সভাপতি ছিলেন। হেফাজত ইসলামের আওয়ামী লীগ পাটি অফিস হামলা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রেখেছেন। এছাড়া লগী বৌঠা ২৮ অক্টোবর গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া ১/১১ সময়ে শেখ হাসিনার মুক্তির আন্দোলনে সরাসরি রাজপথে ভূমিকা রেখেছেন।
মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান মাকসুদ: মহানগর দক্ষিন যুবলীগের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক তিনি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ছিলেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা থাকা অবস্থায় ২০০৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী বিরোধী দলের (বিএনপি) হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরে ১২ ফেব্রুয়ারী তার চিকিৎসার খবর নিতে পুরান ঢাকার সুমনা হাসপাতালে যান শেখ হাসিনা।
সাইফুল ইসলাম আকন্দ: তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আকন্দ। আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান সাইফুল ইসলাম স্কুল জীবনেই ছাত্রলীগের রাজনীতে জড়িয়ে পড়েন । জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন। শেখ হাসিনার উপর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে জবি শাখা ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশি হামলার শিকার হন।
এস এম সিরাজুল ইসলাম: স্কুল জীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। ঘড়িসার ইউনিয়ন শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সাবেক সভাপতি,নড়িয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য, মিরপুর সরকারী বাঙলা কলেজের ছাত্র থাকাবস্থায় তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের নেতৃত্বে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেন। ২০০৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ ও সক্রিয় কর্মী হিসাবে বিএনপি জামায়াত জোটের দু:শাসন, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধ রাজপথে সোচ্চার ভুমিকা পালন করেন। ওয়ান ইলেভেনে দেশরত্ন শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে রাজপথে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেন। ২০১২-২০১৭ সাল পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।