বেশকিছু দিন থেকেই সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে চললেও গতকাল ম্যাচ শেষে দিলেন দলের হারের ব্যাখ্যা। সেই সঙ্গে পেশাদার ক্রিকেটারদের করণীয় নিয়ে বললেন অকপটে। এরই মধ্যে টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক ও ইমরুল কায়েস নিজেদের ব্যর্থতার দায় চাপিয়েছেন সংবাদিকদের ঘাড়ে। তার কথপোকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: মাঠে ফেরার আগে দলের মধ্যে সমন্বয়ের কতটা অভাব ছিল?
মাশরাফি: আসলে ঠিক এমন না। আবার এটাও ঠিক যে খেলোয়াড়দের সময় লাগে। তবে এটা অজুহাতের পর্যায়ে পড়ে না। লম্বা টুর্নামেন্ট, সামনে অনেক সময় আছে। ভুলগুলো ঠিক করে মাঠে নামতে হবে। কালকেই (আজ) যেহেতু ম্যাচ, বেশি চিন্তা করারও সুযোগ নেই।
প্রশ্ন: বিপিএল-এ ব্যক্তিগত লক্ষ্য কি?
মাশরাফি: মনে হয় না বিপিএলে এমন কিছু টার্গেট করার আছে। তবে অবশ্যই দলের জন্য সেরা যেটা হয়, করার চেষ্টা করবো। মূল জিনিস হচ্ছে দল। ফ্র্যাঞ্চাইজিদেরও অনেক চাওয়া-পাওয়া থাকে, যেহেতু তারা এত টাকা খরচ করে দলটা করে। তাই ঐ প্যাশনটা নিয়ে খেলার একটা চেষ্টা থাকে। আর খেলোয়াড়রা তো সবসময়ই চায় মাঠে নিজের সেরাটা দিতে। আমার কথা যদি বলেন, হালকা সমস্যা আছে। এতদিন পর নেমেছি। থাকার কথা ছিলো না। তবু ছোটখাটো নিগলস আছে। দুই-তিন মাস বাইরে থাকলে যেটা হয় আর কি। তিন-চার ম্যাচ খেললে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে। পিঠে একটু আছে। তবে এগুলো আগেও ওভারকাম করেছি। এবারও হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: আপনার ও তামিমের নৈপুণ্যে কি মাঠের বাইরে থাকার প্রভাব?
মাশরাফি: আমার মনে হয় না তামিমকে নিয়ে বেশি চিন্তা করার আছে। গত আসরেও তামিম এমন করেই প্রায় পুরোটা টুর্নামেন্ট খেলেছে। অথচ ট্রফি জেতানো ইনিংসটা কিন্তু ওর ব্যাট থেকেই এসেছে। বারবার প্রমাণ করেছে তামিম। এখন ব্যাপারটা হলো, পুরো দল এক হয়ে খেলা। আমার মনে হয় এখনই চিন্তার কিছু নেই কিংবা গুরুতর আলোচনা করারও সময় না।
প্রশ্ন: দলের ভারসাম্য কতটা?
মাশরাফি: না ভারসাম্য ঠিক আছে। ইয়ং স্টার যারা আছে, বিশেষ করে বাংলাদেশিদের জন্য দারুণ সুযোগ। অধিনায়ক হিসেবে আমি এটাই দেখতে চাই ওরা চাপের মুখে বিভিন্ন দেশের বোলারদের কীভাবে খেলছে।
প্রশ্ন: আপনার সংবাদমাধ্যম থেকে দূরে থাকার কারণ?
মাশরাফি: ভালো সম্পর্ক থাকা তো সবসময়ই ভালো। আপনারা আপনাদের পেশাগত কাজ করবেন, আমিও আমার খেলা খেলবো। আপনাদের সাথে আমার মনে হয় সব খেলোয়াড়েরই ভালো সম্পর্ক। বিশ্বকাপের পর আমি কোনো ধরনের ক্রিকেটে ছিলাম না যে আপনাদের সামনে এসে কথা বলবো।
প্রশ্ন: অনেক ক্রিকেটারই নিজেদের ব্যর্থতায় সংবাদিকদের দোষারোপ করছেন। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখেন?
মাশরাফি: আমার কাছে মনে হয় আপনাদেরও বিষয়টা পারসোনালি না নেয়াই উচিত। অনেকে হয়তো মিডিয়ার চাপ সামলাতে অতটা অভ্যস্ত নয়। অনেক খেলোয়াড় আছে যারা বাইরের অনেক কিছুই খেয়াল করে। যেটা আমি বললাম, আমি খারাপ করলেও আপনারা লিখবেন, ভালো করলেও লিখবেন। আমার কাছে মনে হয় অনেকে ( খেলোয়াড়রা) এগুলো পড়ে বা দেখে। তাই চাপটা চলে আসে বা মাথায় নিয়ে নেয়। এ জিনিসটা পেশাগত জীবনে প্রয়োজন নেই। পেশাগত দিক থেকে আপনিও (সাংবাদিকরা) একটা জায়গায় আছেন, খেলোয়াড়রাও একটা জায়গায় আছে। সবাই যে যার জায়গা থেকে কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। যা লেখা হয়, সেটা যদি নিজের কাছে মনে হয় যে মানসিকভাবে চাপে ফেলে দেবে তাহলে এড়িয়ে চলাই ভালো। সাধারণত বড় খেলোয়াড়রা এটাই করে। যেটা বললাম, যার যেটা পেশা সেদিক থেকে স্থিতিশীল হওয়া জরুরি। আপনি খেলোয়াড়, আপনি খেলা নিয়েই চিন্তা করুন বাইরের জিনিস বাদ দিয়ে।